শনিবার | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ Logo মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা Logo হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বার্মিজ লুঙ্গিসহ ২২ জন পাচারকারী আটক Logo কচুয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া Logo জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা Logo জাবিতে ইলিয়াস ও পিনাকীর কুশপুত্তলিকা দাহন Logo পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ Logo সাতক্ষীরা-কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদ ও ঔষধসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ

আদানির বিদ্যুতের দাম ন্যায্যমূল্যের চেয়ে বেশি, চুক্তি বাতিলের দাবি

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৮১১ বার পড়া হয়েছে

ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কাছ থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনছে বাংলাদেশ। তবে বাড়তি কয়লা, ক্যাপাসিটি চার্জসহ বিভিন্ন কৌশলে বিদ্যুতের অতিরিক্ত দাম ধরছে ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠী। ফলে দেশের স্বার্থে ঝাড়খন্ডের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে করা চুক্তিটি বাতিলের দাবি জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। এজন্য নাগরিকদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

গত বছর আদানির বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। চলতি বছর জুনে আদানি প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে কয়লার দাম ধরেছে ৮ টাকা ২২ পয়সা। এসময় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার খরচ ৬ টাকা ২২ পয়সা। আদানি গত অর্থবছর প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জ ও পরিচালন ব্যয় ধরেছে ৭ টাকার বেশি।

বিদ্যুতের এমন উচ্চমূল্যের বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়তি খরচ দেখিয়ে ২৫ বছরে অতিরিক্ত ১ লাখ কোটি টাকা আদায়ের সুযোগ রয়েছে আদানির।

গণমাধ্যমে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন, ‘চুক্তি করার কারণে যে অধিকার লাভ করেছে আদানি, তাতে করে আমাদের কাছ থেকে বিদ্যুতের ন্যায্য ও যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এবং এরই মধ্যে তারা নিয়েছেও। সুতরাং ওই চুক্তি আর বহাল থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, বিগত সরকার নিজেই এই চুক্তি করেছে, তাই সরকারের পক্ষে এই ব্যাপারে মামলা করতে যাওয়া কঠিন। এটা জনগণের পক্ষ থেকে বা পাবলিক ইন্টারেস্ট থেকে আসতে পারে।

ভারতের জ্বালানি সরবরাহকারী আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, কম দামের কয়লা ব্যবহার করে বেশি দাম আদায়, শুল্কসুবিধা পেয়েও তা প্রদর্শন না করা। এ ছাড়া ৩ মাস আগে বিদ্যুতের নির্দিষ্ট চাহিদা জানানো, উৎপাদন সক্ষমতার কমপক্ষে ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ কেনা, ১ শতাংশের বেশি কয়লার অপচয়সহ ক্রয় চুক্তির বিভিন্ন দুর্বলতাও রয়েছে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ বলেন, ‘আমি মনে করি না চুক্তি বাতিল কোনো সমাধান। চুক্তি রিভিউ করা যেতে পারে। উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এতে সংশোধন আনা যেতে পারে। এতে চাপিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি না।’

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইন স্থগিত করছে। ঐ আইনের অধীনে আদানিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তির কারিগরি ও আর্থিক দিক খতিয়ে দেখছে বিশেষ কমিটি।

আদানির বিদ্যুতের বিষয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক বিচারপতি (অব.) মঈনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এটা আইন অনুযায়ী হয়েছে কিনা তা এক্সপার্টরা দেখবেন। এরপর কমিটি রিভিউ করবে। তারপর আমরা এ ব্যাপারে রিকমেনডেশন দেব।’

জানা গেছে, আদানির কেন্দ্রের শুল্ক-করের অনিয়ম খতিয়ে দেখছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ওদিকে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় সম্প্রতি নিজ দেশে বিক্রির সুযোগ উন্মুক্ত করেছে ভারত সরকার।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ

আদানির বিদ্যুতের দাম ন্যায্যমূল্যের চেয়ে বেশি, চুক্তি বাতিলের দাবি

আপডেট সময় : ০৮:২০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কাছ থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনছে বাংলাদেশ। তবে বাড়তি কয়লা, ক্যাপাসিটি চার্জসহ বিভিন্ন কৌশলে বিদ্যুতের অতিরিক্ত দাম ধরছে ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠী। ফলে দেশের স্বার্থে ঝাড়খন্ডের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে করা চুক্তিটি বাতিলের দাবি জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের। এজন্য নাগরিকদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

গত বছর আদানির বিদ্যুৎ আমদানি শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। চলতি বছর জুনে আদানি প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে কয়লার দাম ধরেছে ৮ টাকা ২২ পয়সা। এসময় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার খরচ ৬ টাকা ২২ পয়সা। আদানি গত অর্থবছর প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জ ও পরিচালন ব্যয় ধরেছে ৭ টাকার বেশি।

বিদ্যুতের এমন উচ্চমূল্যের বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়তি খরচ দেখিয়ে ২৫ বছরে অতিরিক্ত ১ লাখ কোটি টাকা আদায়ের সুযোগ রয়েছে আদানির।

গণমাধ্যমে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন, ‘চুক্তি করার কারণে যে অধিকার লাভ করেছে আদানি, তাতে করে আমাদের কাছ থেকে বিদ্যুতের ন্যায্য ও যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে বেশি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এবং এরই মধ্যে তারা নিয়েছেও। সুতরাং ওই চুক্তি আর বহাল থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, বিগত সরকার নিজেই এই চুক্তি করেছে, তাই সরকারের পক্ষে এই ব্যাপারে মামলা করতে যাওয়া কঠিন। এটা জনগণের পক্ষ থেকে বা পাবলিক ইন্টারেস্ট থেকে আসতে পারে।

ভারতের জ্বালানি সরবরাহকারী আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, কম দামের কয়লা ব্যবহার করে বেশি দাম আদায়, শুল্কসুবিধা পেয়েও তা প্রদর্শন না করা। এ ছাড়া ৩ মাস আগে বিদ্যুতের নির্দিষ্ট চাহিদা জানানো, উৎপাদন সক্ষমতার কমপক্ষে ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ কেনা, ১ শতাংশের বেশি কয়লার অপচয়সহ ক্রয় চুক্তির বিভিন্ন দুর্বলতাও রয়েছে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ বলেন, ‘আমি মনে করি না চুক্তি বাতিল কোনো সমাধান। চুক্তি রিভিউ করা যেতে পারে। উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এতে সংশোধন আনা যেতে পারে। এতে চাপিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ রয়েছে বলে আমি মনে করি না।’

এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুৎ-জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইন স্থগিত করছে। ঐ আইনের অধীনে আদানিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তির কারিগরি ও আর্থিক দিক খতিয়ে দেখছে বিশেষ কমিটি।

আদানির বিদ্যুতের বিষয়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক বিচারপতি (অব.) মঈনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এটা আইন অনুযায়ী হয়েছে কিনা তা এক্সপার্টরা দেখবেন। এরপর কমিটি রিভিউ করবে। তারপর আমরা এ ব্যাপারে রিকমেনডেশন দেব।’

জানা গেছে, আদানির কেন্দ্রের শুল্ক-করের অনিয়ম খতিয়ে দেখছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। ওদিকে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় সম্প্রতি নিজ দেশে বিক্রির সুযোগ উন্মুক্ত করেছে ভারত সরকার।