শিরোনাম :
Logo বেরোবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ Logo দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড এবং চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র প্রতিবাদ Logo উত্তর কচুয়া জাতীয়তাবাদী প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের উদ্যোগে মহিলা দলের বিশাল গনমিছিল Logo কচুয়ায় বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরন ও মিছিল Logo চাঁদপুরে খতিবের উপর হামলার প্রতিবাদে শহর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ Logo ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চাঁদপুর জেলা শাখার উদ্যোগে দায়িত্বশীল তারবিয়াত অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর জেলা বিজেপি’র জেলা কমিটি গঠনকল্পে সমন্বয় সভা আন্দালিভ রহমান পার্থ বাংলাদেশে সুস্থধারার রাজনীতির দিকপাল ………উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা Logo আমরা সংস্কার চেয়েছি,জুলাই গণহত্যার বিচার চেয়েছি এবং নতুন সংবিধান চেয়েছি: নাহিদ ইসলাম Logo মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo ইবিতে শাখা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মীর পদত্যাগ

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৪২ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে জাতিসংঘে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা করেন তিনি। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের নানান কার্যক্রমের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা যে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে, তারই বহিঃপ্রকাশ প্রথম এই বহুপাক্ষিক সভা।

সাধারণ অধিবেশনের সাইড ইভেন্টে এই সভার সহ-আয়োজক ছিল ইন্দোনেশিয়া, গাম্বিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে কী-নোট স্পিকার হিসেবে নিজ বক্তব্যে তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রথম প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সব অংশীজনের নিয়ে দ্রুত কনফারেন্স আয়োজন করতে পারেন। এই কনফারেন্স সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সৃজনশীল এবং অগ্রবর্তী পন্থা নির্ধারণ করবে।

দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের মধ্যেকার ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’ আরও বেগবান করতে হবে এবং সবশেষে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন করতে হবে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতি বছর ৩২ হাজার নতুন জন্ম নেওয়া শিশু বাংলাদেশের জনসংখ্যায় যুক্ত হচ্ছে। বিগত ২ মাসেই নতুন করে ২০ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পাশাপাশি এই সংকট বাংলাদেশের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত হুমকি বহন করছে। বিষয়টি প্রথাগত এবং অ-প্রথাগত নিরাপত্তা সংকটেরও জন্ম দিচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটে থমকে আছে বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। বাংলাদেশ তার সক্ষমতার চূড়ান্তে পৌঁছেছে।

ড. ইউনূস আরো বলেন, অদ্যবধি জাতিসংঘের একাধিক সাধারণ অধিবেশন, মানবাধিকার কাউন্সিল এমনকি নিরাপত্তা পরিষদও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারে সংকটের মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কোনো উদ্যোগই কাজে আসেনি এবং বিগত ৭ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পুরো বিষয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকির নতুন স্তর যোগ করেছে। মিয়ানমারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে সব সম্প্রদায়ের জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

সব শেষে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করেন অধ্যাপক ইউনূস। রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে সংকট উত্তরণের বার্তা দিয়ে নিজ বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে জাতিসংঘে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা করেন তিনি। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতিসংঘে ড. ইউনূসের নানান কার্যক্রমের মধ্যে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা যে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে, তারই বহিঃপ্রকাশ প্রথম এই বহুপাক্ষিক সভা।

সাধারণ অধিবেশনের সাইড ইভেন্টে এই সভার সহ-আয়োজক ছিল ইন্দোনেশিয়া, গাম্বিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে কী-নোট স্পিকার হিসেবে নিজ বক্তব্যে তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রথম প্রস্তাবনায় তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সব অংশীজনের নিয়ে দ্রুত কনফারেন্স আয়োজন করতে পারেন। এই কনফারেন্স সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সৃজনশীল এবং অগ্রবর্তী পন্থা নির্ধারণ করবে।

দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের মধ্যেকার ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’ আরও বেগবান করতে হবে এবং সবশেষে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন করতে হবে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতি বছর ৩২ হাজার নতুন জন্ম নেওয়া শিশু বাংলাদেশের জনসংখ্যায় যুক্ত হচ্ছে। বিগত ২ মাসেই নতুন করে ২০ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার পাশাপাশি এই সংকট বাংলাদেশের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত হুমকি বহন করছে। বিষয়টি প্রথাগত এবং অ-প্রথাগত নিরাপত্তা সংকটেরও জন্ম দিচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটে থমকে আছে বাংলাদেশের নিজস্ব উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা। বাংলাদেশ তার সক্ষমতার চূড়ান্তে পৌঁছেছে।

ড. ইউনূস আরো বলেন, অদ্যবধি জাতিসংঘের একাধিক সাধারণ অধিবেশন, মানবাধিকার কাউন্সিল এমনকি নিরাপত্তা পরিষদও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ এবং সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু মিয়ানমারে সংকটের মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কোনো উদ্যোগই কাজে আসেনি এবং বিগত ৭ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পুরো বিষয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকির নতুন স্তর যোগ করেছে। মিয়ানমারে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে সব সম্প্রদায়ের জনগণ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।

সব শেষে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে একত্রে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করেন অধ্যাপক ইউনূস। রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে সংকট উত্তরণের বার্তা দিয়ে নিজ বক্তব্য শেষ করেন তিনি।