গত ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শীর্ষ নেতাদের অনেকে দেশ ছেড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেউ কেউ ‘দেশ ছাড়ার চেষ্টাকালে’ প্রেপ্তারও হয়েছেন। এর বাইরে, নেতাদের মধ্যে এখনো যারা দেশে অবস্থান করছেন, তাদের প্রায় সবাই ‘আত্মগোপনে’।
এমন অবস্থায় গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে চরম নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দিয়েছে। এতে সাংগঠনিকভাবে দলটির রীতিমত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা।
তাদের অনেকেই এখন উদ্বগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কথা বলার সময় কেউ তাদের নামও প্রকাশ করতে চাননি।
আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের এখন দিশাহারা বিপর্যস্ত অবস্থা হয়ে গেছে। একমাস হয়ে গেলো অথচ কেন্দ্র থেকে কার্যকর কোনো নির্দেশনা দেওয়া হলো না। ফোন দিলেও কেউ ধরে না। হামলা-মামলা সব মিলিয়ে নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ’ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নেতাকর্মীদের অনেকে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের এখনকার যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, সেটার জন্য দলের সিনিয়র নেতাদের দায়ী করছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। ‘ক্ষমতা হারালে এমন অবস্থা যে হতে পারে, সেটা তো নেতাদের অজানা থাকার কথা না। তারাই তো এর জন্য দায়ী,’ বলছিলেন ফরিদপুরের একজন আওয়ামী লীগ কর্মী। এলাকা ছেড়ে একমাস আগে তিনি ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
‘ক্রিম খাইলো নেতারা, কোটি কোটি টাকা বানাইলো তারা; আর তাদের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হইতেছে আমাদের মতো তৃণমূলের নেতাকর্মীদের,’ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ওই ব্যক্তি।
এদিকে, গত ৫ অগাস্টের পর গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেশ সক্রিয় অবস্থান দেখা গেলেও এখন আর সেটি চোখে পড়ছে না।
অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথ অভিযান শুরু করার পর তারা ‘একটু চাপে’ রয়েছেন বলে জানান। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকে রাতে বাড়িতে থাকছেন না বলেও জানা গেছে।
তবে পরিস্থিতি যত খারাপই হোক, আওয়ামী লীগ আবারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে জানাচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা। ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একাত্তর সালে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। কাজেই দেশ যতদিন থাকবে, আমাদের দলও থাকবে। আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়াবো,’ বলেন দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একজন নেতা। তবে তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
একমাস ধরে ঘরছাড়া
দল ক্ষমতা হারানোর পর গত একমাসে ঢাকাসহ অনেক জেলাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে।
চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, লালমনিরহাটসহ বেশ কয়েকটি জেলায় গণপিটুনি ও আগুনে পুড়ে বেশ কয়েকজন প্রাণও হারান।
এমন পরিস্থিতিতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যারা বাড়িঘর ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন, তারা এখনও এলাকায় ফিরতে পারেননি।
‘একমাস হয়ে গেলো আমরা বাড়ি-ঘরে যেতে পারছি না, পরিবার-পরিজন নিয়ে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। কবে এলাকায় ফিরতে পারবো, তাও জানি না,’ বলেন আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির এক নেতা।
ঢাকার কাছাকাছি একটি জেলায় তাদের পৈত্রিক বাড়িতে হামলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। এছাড়া এলাকায় তার যত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল, গত ৫ অগাস্টের পর সবগুলোই দখল করে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
‘এলাকায় একটা বাজারে আমার দু’টো সার-সিমেন্টের দোকান এবং একটা স মিল আছে, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া। সবই দখল হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে সামনে কীভাবে চলবো, কোথায় দাঁড়াবো, সেটা নিয়েই চিন্তায় আছি,’ বলেন ওই নেতা।
কিন্তু দোকান-মিল দখল করলো কারা? ‘কারো নাম ধরে বলতে চাচ্ছি না। যারা মনে করতেছে ক্ষমতা পেয়ে গেছে, তারাই এটা করেছে এতটুকু বলতে পারি,’ বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা।
অন্যদিকে, খুলনার মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন, তাদের এলাকার বেশিরভাগ নেতাকর্মী এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ‘পদধারী নেতা থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায় সাধারণ যত নেতাকর্মী আছে, সবাই এখনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে,’ বলেন ওই নেতা।
‘আর রাজনীতি করবো না’
হামলার ভয়ে নিজেরা গা ঢাকা দিলেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বেশিরভাগের পরিবার-পরিজন তাদের এলাকাতে রয়েছেন। তবে আয়-রোজগার না থাকায় সংসার চালাতে গিয়ে অনেকের স্ত্রী-সন্তানরা বিপাকে পড়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
‘আমরা নিজেরাই তো পালিয়ে বেড়াচ্ছি, কাজ-কাম করবো কী করে? আর আয় না থাকলে সংসারের কী অবস্থা হয়, তা তো বুঝতেই পারছেন?’ বলেন পালিয়ে ঢাকায় আশ্রয় নেওয়া ফরিদপুরের আওয়ামী লীগ কর্মী। পেশায় অটোচালক ওই ব্যক্তি জানান, সংসার চালাতে না পেরে তার স্ত্রী প্রায়ই ফোন করে কান্নাকাটি করে।
‘টাকা-পয়সা যা রেখে আসছিলাম সব এই কয়দিনে শেষ হয়ে গেছে। এখন বাজার করার মতো অবস্থাও নেই। ঘরে ছোট ছোট দু’টো ছেলে, তারা কী খাবে? মোবাইল করে আমার বউ ডেইলি কান্নাকাটি করে,’ বলছিলেন ওই আওয়ামী লীগ কর্মী।
এ অবস্থায় সপ্তাহখানেক আগে সন্তানদের নিয়ে তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে গিয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ‘কিন্তু এভাবে কতদিন থাকবে? ভাবতে গেলেই কান্না আসে। মনে হচ্ছে, রাজনীতি করাই পাপ হয়েছে। তাই আর রাজনীতি করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি,’ বলেন ফরিদপুরের ওই আওয়ামী লীগ কর্মী।
কর্মীদের মধ্যে আরও অনেকেই এমন সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের এক নেতা। তিনি বলেন, ‘অনেকেই খুব হতাশ হয়ে পড়েছে। রাজনীতি ছেড়ে দিবে এমন কথাও কয়েক জন আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছে। আমার জায়গা থেকে আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছি, কিন্তু পরে কী হবে জানি না। ’
‘আপা পালাইছে, মানতেই কষ্ট হয়’
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার বেশ কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে একটি গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে শেখ হাসিনা পলায়ন করেছেন। তখন এর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছিলেনে যে, শেখ হাসিনা পালায় না।
‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, শেখ হাসিনা নাই, শেখ হাসিনা চলে গেছে; শেখ হাসিনা পালায় না,’ গত ২৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে বলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
অথচ এ ঘটনার ঠিক ১০ দিন পরে লাখ লাখ মানুষ রাজপথে নেমে আসার পর গত ৫ অগাস্ট দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালিয়ে যান, যা এখনো মানতে পারছেন না দলটির নেতাকর্মীরা।
‘আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারি না। আপা পালাইছে, মানতেই কষ্ট হয়,’ বলেন আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলার এক নেতা। তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে যারা চেনেন, জানেন। যারা কাছ থেকে তাকে দেখেছেন, তারা কেউই এটা মানতে পারবে না। কারণ উনি মোটেও পালিয়ে যাওয়ার মানুষ না। ’
আওয়ামী লীগ সভাপতির দেশ ছেড়ে না গেলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো বলেও জানিয়েছেন তিনি। ‘আপা দেশে থাকলে নেতাকর্মীরা মনে বল পেতেন। ফলে দলে অন্তত এখনকার মতো বিপর্যয় দেখতে হতো না ‘ বলছিলেন ঢাকা জেলার ওই নেতা।
একই কথা বলেছেন তৃণমূলের আরেক নেতা। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা হারানোর পর খালেদা জিয়া ছাড়েননি, এমনকি এরশাদের মতো স্বৈরাচারও পালায়নি। সেখানে নেত্রী কেন দেশ ছাড়লো , সেটাই আমরা এখনো বুঝে উঠতে পারছি না,’ বলছিলেন ওই নেতা।
বিচারের মুখোমুখি হতে হলেও এখন শেখ হাসিনার দেশে ফেরা উচিদ বলেও মনে করছেন তারা।
‘আমি মনে করি, আপার দ্রুত দেশে ফিরে আসা উচিত। উনি দেশের মাটিতে পা রাখলেই দেখবেন নেতাকর্মীরা আবার সব জেগে উঠেছে,’ বলেন ঢাকা জেলার আওয়ামী লীগ নেতা।
মামলায় জর্জরিত নেতারা
পালিয়ে থাকা অবস্থাতেই একের পর এক মামলায় আসামি হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই সারা দেশে শতাধিক মামলা হয়েছে। সেগুলোর বেশিরভাগই হত্যা মামলা।
ওইসব মামলার আসামির তালিকায় তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের অনেকের নাম রয়েছে।
এর বাইরে, জেলা পর্যায়ে তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধেও অসংখ্য মামলা হতে দেখা যাচ্ছে।
‘আমাকেই যে কতগুলো মামলায় আসামি করা হয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। খুলনার যেখানে যত মামলা হচ্ছে, সবখানেই অকারণে আমার নাম ঢোকানো হচ্ছে,’ বিবিসি বাংলাকে বলেন খুলনা মহানগরীর শীর্ষ এক নেতা।
দেশে পরিস্থিতি আরও শান্ত হয়ে আসলে আদালতে গিয়ে মামলার জামিন নিবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
‘দেশ তো এখনও অশান্ত। ফলে আমরা আদালতেও যেতে পারছি না, জামিন নিতে পারছি না। শান্ত হলে আদালতে যাবো,’ বলছিলেন খুলনার ওই নেতা।
চাপে গোপালগঞ্জের নেতারা
‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর ঢাকাসহ অন্য জেলাগুলোর নেতাকর্মীরা যখন ‘আত্মগোপনে’ যাচ্ছিলেন, তখন ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছিলো আওয়ামী লীগ সভাপতির নিজ জেলা গোপালগঞ্জে।
‘শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে’ দাবি করে গত ৫ অগাস্টের পরপরই বেশ কয়েক দফায় বিক্ষোভ মিছিলও করেছিলেন তারা। সে সময় বিক্ষোভ মিছিল থেকে সেনা সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছিল, যা নিয়ে পরে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দুঃখপ্রকাশ’ করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কিন্তু গত ১৫ অগাস্টের পর গোপালগঞ্জেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আর আগের মতো সক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না।
মূলত সেনা সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনার পর থেকেই তাদের ওপর ‘চাপ’ ছিল, যা এখন আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
‘সবমিলিয়ে আমরা এখন চাপের মধ্যে আছি, বিশেষ করে যৌথ অভিযান শুরু পর চাপ একটু বেড়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন গোপালগঞ্জের থানা পর্যায়ের এক নেতা।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে গত চৌঠা সেপ্টেম্বর যৌথ অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাদের অনেকেই রাতে নিজ বাড়িতে থাকছেন না বলেও জানা যাচ্ছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে জেলার শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল বিবিসি বাংলা। কিন্তু তাদের ফোন পাওয়া গেছে। এছাড়া হটসঅ্যাপ যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
হাল ধরবে কে?
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার কিছুদিন পর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছিলেন যে, তার মার আর রাজনীতিতে ফিরবেন না।
‘আমার মনে হয় এখানেই শেষ। আমার পরিবার এবং আমি- আমাদের যথেষ্ট হয়েছে,’ এক সাক্ষাৎকারে বলেন মি. জয়।
তবে কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য তার কণ্ঠে ভিন্ন সুর শোনা যায়।
‘অবশ্যই তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে ফিরবেন, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে,’ বিবিসিকে দেওয়া আরেকটি সাক্ষাৎকারে বলেন মি. জয়।
এরপর একটি বিবৃতিতে গত ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শোক দিবস পালনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
গোপালগঞ্জ ও বরিশালের দু’জন জেলা পর্যায়ের নেতার সঙ্গেও তখন কথা বলেছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, যার কলরেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েও পড়েছিল তখন।
এছাড়া মি. জয়ও জানিয়েছিলেন যে, তিনি রাজনীতিতে যোগ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু গত দুই সপ্তাহে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তাদের সেভাবে আর কোনো নির্দেশনা দিতে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় বহু নেতারাও ‘আত্মগোপনে’ রয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকে। ফলে নেতৃত্বশূন্যতা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এমন অবস্থার মধ্যে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন, সেটি নিয়েও নানান আলোচনা শোনা যাচ্ছে।
‘এসব সবই অপপ্রচার। কমিটি পরিবর্তনের ওইরকম কোনো সিদ্ধান্তই হয়নি,’ বলেন আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা।
কিন্তু হঠাৎ এমন ‘অপপ্রচার’ ছড়ানোর কারণ কী? কারাই-বা এটি ছড়াচ্ছে? ‘এটি ছড়ানোর উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগকে দ্বিধাবিভক্ত করা। দলকে ফাঁটল ধরানোর জন্যই বিএনপি-জামায়াত এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা আগেও বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি। ’ বলেন ওই নেতা।
এছাড়া তৃণমূলের কর্মীরা শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন, সেটি স্বীকার করেছেন তিনি। ‘আমাদের যে ভুল আছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এখন কীভাবে সেই ভুল শুধরে দলকে আবারও সক্রিয় করা যায়, মিটিং হলে আমরা সেটিই আলোচনা করবো,’ বলেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ ওই নেতা।