শিরোনাম :
Logo বেপরোয়া জবি রেজিস্ট্রার,শিক্ষক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের সাথে বারবার অশোভন আচারণের অভিযোগ Logo শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে কুবির ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ভবনে তালা Logo পলাশবাড়ীতে শিশু ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্ত আটক Logo রাবি প্রোভিসির ফেসবুক স্টোরিতে ভেসে উঠল শিক্ষক নিয়োগে জামায়াত নেতার সুপারিশ Logo মাগুরায় রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস পালিত Logo ঢাকাবাসীর প্রতি ছাত্রদলের অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ Logo শার্শায় হতদরিদ্রের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির চাল ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক-২ Logo পুলিশে সুমাইয়া জাফরিন নামে কোনো নারী কর্মকর্তা নেই: পুলিশ সদর দপ্তর Logo খুবিতে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় কলা ও মানবিকীবিদ্যা’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু Logo আওয়ামী লীগ অপকর্ম করতে চাইলে কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

৩৮২ জনের ধারণ ক্ষমতার কারাগারে বন্দি ৭০৩ জন

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৫:২৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৪২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে বন্দিদের এখন হাঁসফাঁস জীবন। নতুন করে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হওয়ায় প্রতিদিন নতুন নতুন বন্দি আসছে জেলা কারাগারে। ফলে মাত্রাতিরিক্ত চাপে মানবিক বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারাগারে বন্দিদের খাবার সংকট না থাকলেও অতিরিক্ত বন্দি থাকায় তারা প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে জেলাব্যাপী পুলিশি অভিযানের মুখে বিএনপি ও জামায়াতের পদধারী নেতা ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের শত শত কর্মী এখন বাড়িছাড়া। প্রতিরাতে তাদের বাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহে বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে দল দুটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর থেকে গত ৮ দিনে বন্দি বেড়েছে ১০৩ জন। এই নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে মোট বন্দির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০৩ জন।

কারাগারের জেলার শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন হায়দার জানান, ঝিনাইদহ জেলা কারাগারটি ৩৮২ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। অথচ কারাগারে বন্দি আছে ৭০৩ জন। অতিরিক্ত ৩২১ জন বন্দি বেশি রয়েছে কারাগারটিতে। অতিরিক্ত বন্দি থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহ কারাগারের মহিলা ডেপুটি জেলার তানিয়া জামান বলেন, অতিরিক্ত বন্দি থাকলেও এখানে কোনো সমস্যা নেই। বন্দিদের খাবারসহ যাবতীয় সমস্যা বিধি মোতাবেক সমাধান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন নতুন বন্দি কারাগারে আসার পর তাদের জন্য সরকারিভাবে খাবারও বরাদ্দ থাকছে। এদিকে বন্দিরা বলছেন, কারাগারে খাবারের মান নিম্নমানের। কারাভ্যন্তরের ক্যান্টিনে ১০ গুণ দামে খাবার বিক্রি করা হয়। সিএস ফাইলের নামে বন্দিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। আবার আসামি জামিনের পর জমাকৃত সিএস ফাইলের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জামিন নিয়ে ঝিনাইদহ কারাগার থেকে বের হয়ে আসা ব্যক্তিরা জানান, কারাগারের ক্যান্টিনে গরুর গোস্ত ১ হাজার ২৬০ টাকা কেজি। প্রতি পিসের দাম ধরা হয় ৭০ টাকা। পোল্ট্রি মুরগীর প্রতি পিস ৪০ টাকা। সেই হিসেবে কেজি পড়ে ৯৬০ টাকা ও মাছ প্রতি পিস ৫০ গ্রাম ওজনের ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। কারা ক্যান্টিনে অতিরিক্ত দাম নিলেও খাবারের মান ভালো নয় বলে সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন। এই ক্যান্টিনের লাভের টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়া হয় নাকি সরকারি কোষাগারে জমা হয়, তা কেউ বলতে পারেনি।

এ বিষয়ে কারাগারের জেলার শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন হায়দার জানান, সারা দেশের মতো এখানেও একই নিয়মে ক্যান্টিন পরিচালনা করা হয়। বাইরের থেকে এখানে দাম বেশি এটা সত্য। তিনি জানান, কারা ক্যান্টিন পরিচালনা করতে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটিতে জেল সুপারসহ কারা কর্মকর্তা রয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ক্যান্টিন চালানো হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল আলম জানান, আধুনিক সমাজে কারাগার মানেই শাস্তির জায়গা নয়, কারাগার হচ্ছে সংশোধনাগার। কারাগারে যেহেতু বন্দির সংখ্যা দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি, সেক্ষেত্রে বন্দিদের অসুবিধা হবে এটাই স্বাভাবিক। অর্থাৎ একজন বন্দি আগে যতটুকু বিছানার মধ্যে থাকতে পারতো, বর্তমানে আরও কয়েকজনকে নিয়ে একই স্থানে থাকতে হচ্ছে। এতে করে বন্দিদের কারাগারে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বন্দিদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে রাষ্ট্রকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেপরোয়া জবি রেজিস্ট্রার,শিক্ষক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের সাথে বারবার অশোভন আচারণের অভিযোগ

৩৮২ জনের ধারণ ক্ষমতার কারাগারে বন্দি ৭০৩ জন

আপডেট সময় : ০৩:৩৫:২৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট ২০২৪

ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে বন্দিদের এখন হাঁসফাঁস জীবন। নতুন করে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হওয়ায় প্রতিদিন নতুন নতুন বন্দি আসছে জেলা কারাগারে। ফলে মাত্রাতিরিক্ত চাপে মানবিক বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারাগারে বন্দিদের খাবার সংকট না থাকলেও অতিরিক্ত বন্দি থাকায় তারা প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে জেলাব্যাপী পুলিশি অভিযানের মুখে বিএনপি ও জামায়াতের পদধারী নেতা ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের শত শত কর্মী এখন বাড়িছাড়া। প্রতিরাতে তাদের বাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহে বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে দল দুটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর পর থেকে গত ৮ দিনে বন্দি বেড়েছে ১০৩ জন। এই নিয়ে গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে মোট বন্দির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০৩ জন।

কারাগারের জেলার শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন হায়দার জানান, ঝিনাইদহ জেলা কারাগারটি ৩৮২ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন। অথচ কারাগারে বন্দি আছে ৭০৩ জন। অতিরিক্ত ৩২১ জন বন্দি বেশি রয়েছে কারাগারটিতে। অতিরিক্ত বন্দি থাকার বিষয়ে ঝিনাইদহ কারাগারের মহিলা ডেপুটি জেলার তানিয়া জামান বলেন, অতিরিক্ত বন্দি থাকলেও এখানে কোনো সমস্যা নেই। বন্দিদের খাবারসহ যাবতীয় সমস্যা বিধি মোতাবেক সমাধান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন নতুন বন্দি কারাগারে আসার পর তাদের জন্য সরকারিভাবে খাবারও বরাদ্দ থাকছে। এদিকে বন্দিরা বলছেন, কারাগারে খাবারের মান নিম্নমানের। কারাভ্যন্তরের ক্যান্টিনে ১০ গুণ দামে খাবার বিক্রি করা হয়। সিএস ফাইলের নামে বন্দিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। আবার আসামি জামিনের পর জমাকৃত সিএস ফাইলের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জামিন নিয়ে ঝিনাইদহ কারাগার থেকে বের হয়ে আসা ব্যক্তিরা জানান, কারাগারের ক্যান্টিনে গরুর গোস্ত ১ হাজার ২৬০ টাকা কেজি। প্রতি পিসের দাম ধরা হয় ৭০ টাকা। পোল্ট্রি মুরগীর প্রতি পিস ৪০ টাকা। সেই হিসেবে কেজি পড়ে ৯৬০ টাকা ও মাছ প্রতি পিস ৫০ গ্রাম ওজনের ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। কারা ক্যান্টিনে অতিরিক্ত দাম নিলেও খাবারের মান ভালো নয় বলে সদ্য জেল থেকে মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ করেন। এই ক্যান্টিনের লাভের টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়া হয় নাকি সরকারি কোষাগারে জমা হয়, তা কেউ বলতে পারেনি।

এ বিষয়ে কারাগারের জেলার শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীন হায়দার জানান, সারা দেশের মতো এখানেও একই নিয়মে ক্যান্টিন পরিচালনা করা হয়। বাইরের থেকে এখানে দাম বেশি এটা সত্য। তিনি জানান, কারা ক্যান্টিন পরিচালনা করতে একটি কমিটি আছে। সেই কমিটিতে জেল সুপারসহ কারা কর্মকর্তা রয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী ক্যান্টিন চালানো হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল আলম জানান, আধুনিক সমাজে কারাগার মানেই শাস্তির জায়গা নয়, কারাগার হচ্ছে সংশোধনাগার। কারাগারে যেহেতু বন্দির সংখ্যা দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি, সেক্ষেত্রে বন্দিদের অসুবিধা হবে এটাই স্বাভাবিক। অর্থাৎ একজন বন্দি আগে যতটুকু বিছানার মধ্যে থাকতে পারতো, বর্তমানে আরও কয়েকজনকে নিয়ে একই স্থানে থাকতে হচ্ছে। এতে করে বন্দিদের কারাগারে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বন্দিদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে রাষ্ট্রকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।