মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে খুবির ন্যাশনালিস্ট টিচার্স এসোসিয়েশন (এনটিএ) এর বিবৃতি Logo মহান বিজয় দিবসে চাঁদপুর ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের মিলাদ ও দোয়া Logo বিজয় দিবসে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করলেন ধানের শীষের এমপি প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক Logo চাঁদপুরে গণফোরামের বিজয় দিবসের আলোচনা সভা এ বিজয় কোনো একক দলের নয়, এটি জাতির ঐতিহাসিক অর্জন-এডভোকেট সেলিম আকবর Logo মহান বিজয় দিবসে চাঁদপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবময় সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শহীদদের স্মরণ করল সর্বস্তরের মানুষ Logo কয়রায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত Logo সাতক্ষীরা–খুলনা মহাসড়কে ত্রিমুখী সংঘর্ষে মাহেন্দ্রা উল্টে মা–ছেলে নিহত, আহত ৮ Logo খুবিতে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মহান বিজয় দিবস উদযাপণ Logo মহান বিজয় দিবসে ইবির জুলাই ৩৬ হলের শ্রদ্ধাঞ্জলি

ঝিনাইদহ সমাজসেবার টাকায় জনপ্রতিনিধিদের ভাগের অভিযোগ

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০১:১১:৩১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৯ নভেম্বর ২০২০
  • ৭৮৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:নজরুল ইসলাম প্রতিবন্ধী হিসেবে এককালীন নয় হাজার টাকা ভাতা পেয়েছেন। অগ্রনী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর তার কাছ থেকে এলাকার মেম্বর এক হাজার টাকা নিয়ে নেন। একই কথা জনালেন বিধবা রোকেয়া খাতুন ও বাকপ্রতিবন্ধী লিয়াতক আলী। নতুন ভাতাভোগী হলেই তাদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত কেটে রাখা হয়। এই চিত্র প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। কখনো সমাজসেবা কর্মকর্তা বা ইউপি চেয়ারম্যানদের নাম ভাঙ্গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। ইউপি সদস্যদের এই দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে ইউপি সদস্যরা গ্রামাঞ্চলে এই অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন। এবিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায় না ভুক্তভোগীরা। কারণ বেশির ভাগ ইউপি সদস্য রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালী। আবার ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথেও রয়েছে তাদের সখ্যতা।

ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় নতুন করে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৭৩ জন। গত জুন মাস থেকে তারা ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৬ উপজেলায় নতুন বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৪৯১৪ জন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৪৮৫৮ জন ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ১০ হাজার ৩০১ জন।

নতুন ভাতাপ্রাপ্ত সকলেরই টাকা উত্তোলনের সময় ইউপি সদস্যদের কমবেশি ভাগ দিতে হয়েছে। গড়ে ৫০০ টাকা করে জনপ্রতি ইউপি সদস্যরা নিলে হিসাব দাড়ায় কোটি টাকার উপরে। ভাতাভোগীদের অভিযোগ কখনো জোর করে আবার কখনো মিষ্টি খাওয়ার নামে ইউপি মেম্বাররা টাকা নিয়ে থাকেন। অনেক সময় ভাতা করে দেওয়ার নাম করে আগে থেকেই ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভিজিএফ, ভিজিডি, ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড ও সরকারি বাড়ি করে দেওয়ার নাম করে চেয়ারম্যান মেম্বাররা অবলীলায় টাকা হাতিয়ে নিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন।

ইউপি মেম্বরদের টাকা গ্রহণের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি বলেন, আমরা স্বচ্ছতা আনার জন্য মাইকিং করি। আবার কোনো সদস্যের এমন সংশ্লিষ্টতা পেলে ভাতার কার্ড বাতিল করে দিই। তারপরও রোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, যে সব ইউপি সদস্য এমন অনৈতিক কাজ করেন তাদের সদস্য পদ থাকা উচিৎ নয়।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ইউপি মেম্বরদের এই দুর্নীতি প্রমানহীন। অহরহ অভিযোগ আমাদের কানে আসলেও আমরা প্রমাণ করতে পারি না। ফলে তারা পার পেয়ে যান। যারা টাকা দেন (নতুন ভাতাভাগী) তারা স্বীকার না করায় মেম্বারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, আমরা বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতায় স্বচ্ছতা আনতে সরেজমিন যাচাই-বাছাই করছি। এই কাজে অনেকটা সফল হয়েছি। তিনি বলেন, আগামীতে ভাতাভোগীরা বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাবেন। ফলে ইউপি সদস্যদের দুর্নীতি কমে আসবে বলে উপপরিচালক মো. আব্দুল লতিফ শেখ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে খুবির ন্যাশনালিস্ট টিচার্স এসোসিয়েশন (এনটিএ) এর বিবৃতি

ঝিনাইদহ সমাজসেবার টাকায় জনপ্রতিনিধিদের ভাগের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০১:১১:৩১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৯ নভেম্বর ২০২০

নিউজ ডেস্ক:নজরুল ইসলাম প্রতিবন্ধী হিসেবে এককালীন নয় হাজার টাকা ভাতা পেয়েছেন। অগ্রনী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের পর তার কাছ থেকে এলাকার মেম্বর এক হাজার টাকা নিয়ে নেন। একই কথা জনালেন বিধবা রোকেয়া খাতুন ও বাকপ্রতিবন্ধী লিয়াতক আলী। নতুন ভাতাভোগী হলেই তাদের কাছ থেকে ৫০০ থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত কেটে রাখা হয়। এই চিত্র প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। কখনো সমাজসেবা কর্মকর্তা বা ইউপি চেয়ারম্যানদের নাম ভাঙ্গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন। ইউপি সদস্যদের এই দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে ইউপি সদস্যরা গ্রামাঞ্চলে এই অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন। এবিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায় না ভুক্তভোগীরা। কারণ বেশির ভাগ ইউপি সদস্য রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালী। আবার ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথেও রয়েছে তাদের সখ্যতা।

ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় নতুন করে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন ২০ হাজার ৭৩ জন। গত জুন মাস থেকে তারা ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে ৬ উপজেলায় নতুন বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৪৯১৪ জন, বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ৪৮৫৮ জন ও প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন ১০ হাজার ৩০১ জন।

নতুন ভাতাপ্রাপ্ত সকলেরই টাকা উত্তোলনের সময় ইউপি সদস্যদের কমবেশি ভাগ দিতে হয়েছে। গড়ে ৫০০ টাকা করে জনপ্রতি ইউপি সদস্যরা নিলে হিসাব দাড়ায় কোটি টাকার উপরে। ভাতাভোগীদের অভিযোগ কখনো জোর করে আবার কখনো মিষ্টি খাওয়ার নামে ইউপি মেম্বাররা টাকা নিয়ে থাকেন। অনেক সময় ভাতা করে দেওয়ার নাম করে আগে থেকেই ২৫০০ টাকা থেকে ৩০০০ হাজার টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ভিজিএফ, ভিজিডি, ১০ টাকা কেজি দরের চালের কার্ড ও সরকারি বাড়ি করে দেওয়ার নাম করে চেয়ারম্যান মেম্বাররা অবলীলায় টাকা হাতিয়ে নিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন।

ইউপি মেম্বরদের টাকা গ্রহণের বিষয়ে ঝিনাইদহ সদরের হলিধানী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি বলেন, আমরা স্বচ্ছতা আনার জন্য মাইকিং করি। আবার কোনো সদস্যের এমন সংশ্লিষ্টতা পেলে ভাতার কার্ড বাতিল করে দিই। তারপরও রোধ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, যে সব ইউপি সদস্য এমন অনৈতিক কাজ করেন তাদের সদস্য পদ থাকা উচিৎ নয়।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ইউপি মেম্বরদের এই দুর্নীতি প্রমানহীন। অহরহ অভিযোগ আমাদের কানে আসলেও আমরা প্রমাণ করতে পারি না। ফলে তারা পার পেয়ে যান। যারা টাকা দেন (নতুন ভাতাভাগী) তারা স্বীকার না করায় মেম্বারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান, আমরা বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতায় স্বচ্ছতা আনতে সরেজমিন যাচাই-বাছাই করছি। এই কাজে অনেকটা সফল হয়েছি। তিনি বলেন, আগামীতে ভাতাভোগীরা বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাবেন। ফলে ইউপি সদস্যদের দুর্নীতি কমে আসবে বলে উপপরিচালক মো. আব্দুল লতিফ শেখ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।