শিরোনাম :
Logo ঝিনাইদহে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পৈত্রিক জমি ফিরে পেলেন সাবেক প্রকৌশলী Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo অছাত্র ও ছাত্রলীগের দোসর দিয়ে কমিটি গঠনের প্রতিবাদে শহিদ স্মৃতি কলেজে ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo বিচারহীনতার প্রতিবাদে ইবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিছিল Logo নাব্যতা হারিয়ে ঝালকাঠির খরশ্রোতা বাসন্ডা নদী খালে পরিনত হচ্ছে, খননের দাবী এলাকাবাসীর Logo এফডিসির গেইটে রান্না করে গোয়ার সিনেমার প্রচার,নজির গড়লেন নায়ক রাসেল মিয়া Logo কবি জীবনানন্দ দাশ স্মরণে প্যাপিরাস পাঠাগারের সাহিত্য আড্ডা Logo বুটেক্সে অনুষ্ঠিত হলো জেনরা ফ্যাশন ওডিসি ২০২৫ Logo চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ৩১ বাংলাদেশী নারী-পুরুষ, শিশুকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ Logo বাংলাদেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিকে আইএমএফের প্রশংসা

চুয়াডাঙ্গা এখন আবর্জনার শহর

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ১০:২৮:৫৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ৭৬৯ বার পড়া হয়েছে

শামসুজ্জোহা পলাশ, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : 

ডাপিং স্টেশন না থাকায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলছে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ময়লা বর্জ্য ফেলায় আবর্জনার শহরে পরিণত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা। শহরের বাসাবাড়ি, প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কল-কারখানার বর্জ্য সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন জনবহুল এলাকাসহ নদীর পাড়ে ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে করে যেমন হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র তেমনি দুর্ভোগে পড়ছে পুরো শহরবাসী। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ময়লা ফেলার ডাস্টবিন নেই পৌর এলাকায়। যেগুলো রয়েছে তাও অযত্ন-অবহেলায় ভেঙে পড়ে সেখান থেকে ছাড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

 

তবে চুয়াডাঙ্গা পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, গতবছরে শহরতলীর ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকায় বর্জ্য শোধনের ডা¤িপং স্টেশনের জন্য তিন একর জমি অধিগ্রহন করা হয়। ডা¤িপং স্টেশনের জন্য এরই মধ্যে প্রায় ৮ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করে বর্জ্য শোধানগারের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

 

প্রথম শ্রেণি বিশিষ্ট ৩৭ দশমিক ৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। কাগজে প্রথম শ্রেণি হলেও নাগরিক সুবিধা থেকে বি ত হচ্ছে এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পৌর এলাকায় নেই বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। যার ফলে বিশাল আয়তনের লাখ লাখ মানুষের অধিক পরিমাণ বর্জ্য আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

 

দীর্ঘদিন থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা বর্জ্য। সেখানে তৈরি হচ্ছে আবর্জনার স্তুপের। এতে করে দূষিত হচ্ছে পৌর এলাকা, ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ প্রকৃতি। এছাড়া শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙা নদীর পাড়ে বর্জ্য ফেলে নদীকে বানানো হচ্ছে ময়লার ভাগাড়।

 

পৌর এলাকার বাসিন্দা ভিমরুল্লার ইকরামুল হক মোল্লা জানান, শহরে বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষ অসচেতনভাবেই ময়লা আবর্জনা ফেলছে যেখানে সেখানে। পরবর্তিতে সেই আবর্জনা সংগ্রহ করে মাথাভাঙা নদীর পাড় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফেলছে পৌরসভা। এতে করে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে

দূষিত হচ্ছে শহরের প্রতিটি কোণা। নানাভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে পৌর বাসিন্দারাই।

 

তালতলা এলাকার সাব্বির হোসেন জানান, শহরে বর্জ্য নিষ্কাশনের একটা বিশাল সমস্যার কারণে বাধ্য হয়ে খোলা জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলছে তারা। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ পথচারিরা।

 

ছাগলফার্ম এলাকার মুদি দোকানী মিনারুল ইসলাম জানান, শহরের অধিকাংশ ময়লা আবর্জনা নিয়ে এসে এই খোলা জায়গায় ফেলা হয়। এখান থেকেই সৃষ্টি হয় বিকট দুর্গন্ধ। ভোগান্তিতে পড়ে যাতায়াতকারীরা। প্রায় সময়ই দেখা যায় যাত্রীরা নাকে মুখে রুমাল ব্যবহার করে ওই সড়ক পাড়ি দিচ্ছে।

 

এদিকে শহরের বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য গত বছরে ডা¤িপং স্টেশন তৈরির উদ্যোগ নেয় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। সেসময় শহরতলীর চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকায় তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণ করা হলেও নানা জটিলতায় এখনো শুরু করা হয়নি ডা¤িপং স্টেশনের কাজ। অথচ সেই খোলা জায়গাতে দেদারছে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। এতে করে ভোগান্তির শিকার ওই সড়ক দিয়ে যাতায়তকারী হাজারো মানুষ।

 

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচিব কাজী শরিফুল ইসলাম জানান, শ্রেণি অনুযায়ী অনেক আগেই ডা¤িপং স্টেশনের নির্মিত হওয়ার দরকার ছিলো। নানা কারণে তা গড়ে ওঠেনি। তবে এবার ডা¤িপং স্টেশন তৈরির জন্য গত ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ঘোড়ামার ব্রিজ এলাকায় তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ২ কোটি ৯২ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৩ টাকা দিয়ে জমিটি অধিগ্রহণ করা হয়। তবে বেশ কিছুদিন পার হলেও চলতি বছরের আগস্ট মাসে ডা¤িপং স্টেশন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩৪ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। দ্রুতই সব কাগজে নিয়ম শেষ করে দরপত্র আহ্বান করে ডা¤িপং স্টেশনের নির্মান কাজ শুরু করার আশ্বাস তার।

 

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরি জিপু বলেন, এখন শহরের জনবহুল এলাকা ও নদীতে আবর্জনা তুলনামূলক কম ফেলা হয়। নির্ধারিত স্থানেই ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। তবে ডা¤িপং স্টেশন তৈরি হলে শহরের ময়লা আবর্জনার ছিটেফোটাও আর চোখে পড়বে না। তাই চেষ্টা করছি দ্রুতই কাজ শুরু করার। এছাড়া উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে ডাস্টবিন নির্মাণ প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করি। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় ডাস্টবিন নির্মাণ করা হবে। # #

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঝিনাইদহে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পৈত্রিক জমি ফিরে পেলেন সাবেক প্রকৌশলী

চুয়াডাঙ্গা এখন আবর্জনার শহর

আপডেট সময় : ১০:২৮:৫৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

শামসুজ্জোহা পলাশ, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : 

ডাপিং স্টেশন না থাকায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলছে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ময়লা বর্জ্য ফেলায় আবর্জনার শহরে পরিণত হয়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা। শহরের বাসাবাড়ি, প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কল-কারখানার বর্জ্য সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন জনবহুল এলাকাসহ নদীর পাড়ে ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে করে যেমন হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র তেমনি দুর্ভোগে পড়ছে পুরো শহরবাসী। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ময়লা ফেলার ডাস্টবিন নেই পৌর এলাকায়। যেগুলো রয়েছে তাও অযত্ন-অবহেলায় ভেঙে পড়ে সেখান থেকে ছাড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

 

তবে চুয়াডাঙ্গা পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, গতবছরে শহরতলীর ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকায় বর্জ্য শোধনের ডা¤িপং স্টেশনের জন্য তিন একর জমি অধিগ্রহন করা হয়। ডা¤িপং স্টেশনের জন্য এরই মধ্যে প্রায় ৮ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করে বর্জ্য শোধানগারের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

 

প্রথম শ্রেণি বিশিষ্ট ৩৭ দশমিক ৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় প্রায় ২ লাখ মানুষের বসবাস। কাগজে প্রথম শ্রেণি হলেও নাগরিক সুবিধা থেকে বি ত হচ্ছে এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পৌর এলাকায় নেই বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। যার ফলে বিশাল আয়তনের লাখ লাখ মানুষের অধিক পরিমাণ বর্জ্য আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

 

দীর্ঘদিন থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা বর্জ্য। সেখানে তৈরি হচ্ছে আবর্জনার স্তুপের। এতে করে দূষিত হচ্ছে পৌর এলাকা, ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ প্রকৃতি। এছাড়া শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মাথাভাঙা নদীর পাড়ে বর্জ্য ফেলে নদীকে বানানো হচ্ছে ময়লার ভাগাড়।

 

পৌর এলাকার বাসিন্দা ভিমরুল্লার ইকরামুল হক মোল্লা জানান, শহরে বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষ অসচেতনভাবেই ময়লা আবর্জনা ফেলছে যেখানে সেখানে। পরবর্তিতে সেই আবর্জনা সংগ্রহ করে মাথাভাঙা নদীর পাড় এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফেলছে পৌরসভা। এতে করে নদী তার নাব্যতা হারাচ্ছে

দূষিত হচ্ছে শহরের প্রতিটি কোণা। নানাভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে পৌর বাসিন্দারাই।

 

তালতলা এলাকার সাব্বির হোসেন জানান, শহরে বর্জ্য নিষ্কাশনের একটা বিশাল সমস্যার কারণে বাধ্য হয়ে খোলা জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলছে তারা। এর সঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ পথচারিরা।

 

ছাগলফার্ম এলাকার মুদি দোকানী মিনারুল ইসলাম জানান, শহরের অধিকাংশ ময়লা আবর্জনা নিয়ে এসে এই খোলা জায়গায় ফেলা হয়। এখান থেকেই সৃষ্টি হয় বিকট দুর্গন্ধ। ভোগান্তিতে পড়ে যাতায়াতকারীরা। প্রায় সময়ই দেখা যায় যাত্রীরা নাকে মুখে রুমাল ব্যবহার করে ওই সড়ক পাড়ি দিচ্ছে।

 

এদিকে শহরের বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য গত বছরে ডা¤িপং স্টেশন তৈরির উদ্যোগ নেয় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। সেসময় শহরতলীর চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকায় তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণ করা হলেও নানা জটিলতায় এখনো শুরু করা হয়নি ডা¤িপং স্টেশনের কাজ। অথচ সেই খোলা জায়গাতে দেদারছে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। এতে করে ভোগান্তির শিকার ওই সড়ক দিয়ে যাতায়তকারী হাজারো মানুষ।

 

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সচিব কাজী শরিফুল ইসলাম জানান, শ্রেণি অনুযায়ী অনেক আগেই ডা¤িপং স্টেশনের নির্মিত হওয়ার দরকার ছিলো। নানা কারণে তা গড়ে ওঠেনি। তবে এবার ডা¤িপং স্টেশন তৈরির জন্য গত ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ঘোড়ামার ব্রিজ এলাকায় তিন একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ২ কোটি ৯২ লাখ ৪২ হাজার ৮৯৩ টাকা দিয়ে জমিটি অধিগ্রহণ করা হয়। তবে বেশ কিছুদিন পার হলেও চলতি বছরের আগস্ট মাসে ডা¤িপং স্টেশন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩৪ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। দ্রুতই সব কাগজে নিয়ম শেষ করে দরপত্র আহ্বান করে ডা¤িপং স্টেশনের নির্মান কাজ শুরু করার আশ্বাস তার।

 

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরি জিপু বলেন, এখন শহরের জনবহুল এলাকা ও নদীতে আবর্জনা তুলনামূলক কম ফেলা হয়। নির্ধারিত স্থানেই ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। তবে ডা¤িপং স্টেশন তৈরি হলে শহরের ময়লা আবর্জনার ছিটেফোটাও আর চোখে পড়বে না। তাই চেষ্টা করছি দ্রুতই কাজ শুরু করার। এছাড়া উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে ডাস্টবিন নির্মাণ প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করি। পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় ডাস্টবিন নির্মাণ করা হবে। # #