সোমবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo মাদকবিরোধী ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে” — অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ এরশাদ উদ্দিন Logo খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলি: সাতক্ষীরা সীমান্ত সিল, বিজিবির ৫৭ চেকপোস্ট ও ৮৭টি অতিরিক্ত টহল Logo কুয়াশার চাদরে মোড়া ডিসেম্বরের ক্যাম্পাস Logo যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির Logo নির্বাচনে আস্থার পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথবাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ Logo রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে Logo কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন Logo মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন চাঁদপুর-৩ আসনে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক আহসান উল্লাহ Logo আগামী ২৭ ডিসেম্বর শনিবার চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির শীতকালীন গিটারসন্ধ্যা Logo তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ও শুভেচ্ছা মিছিল

চুয়াডাঙ্গায় বাঁশের খুঁটি আর লাল পতাকায় লকডাউন এর সব দায়িত্ব শেষ!

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৯:১১:৪২ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০
  • ৭৭১ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

শুধু ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের কয়েকটি পাড়ার লকডাউন। বাস্তবায়নে সঠিকভাবে মাঠে নেই পুলিশ-প্রশাসন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিগুলোর স্বেচ্ছাসেবকেরা। তাই লকডাউন তোয়াক্কা না করেই চলছে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। লকডাউনকৃত এলাকায় জনসমাগম। সাধারণ মানুষ লকডাউনকৃত এলাকায় যাচ্ছে, আবার লকডাউনকৃত এলাকার মানুষ বাইরে আসছে অহরহ। শুধুমাত্র বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে লাল পতাকা টাঙানো আছে, তবে নেই কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা স্বেচ্ছাসেবক। জেলা প্রশাসন থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি দেওয়া হলেও, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত ওয়ার্ড পর্যায়ের এসব মনিটরিং কমিটির কোনো সদস্যের দেখা মেলেনি একটিও লকডাউনকৃত এলাকায়। সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, এটি জেলার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের লকডাউনকৃত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় স্বাভাবিক চিত্র। শুধুমাত্র রাস্তাটিই বন্ধ আর লাল পতাকা টাঙানো। চুয়াডাঙ্গা শহরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক ফেরিঘাট রোড। ব্যবসায়িক এলাকা নামেই খ্যাত এই রোডটি। দুপুরে দেখা গেছে প্রত্যেকটা দোকান অর্ধেক শার্টার নামিয়ে খোলা আছে। মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চলছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার তোয়াক্কা নেই। যদিও লকডাউনকৃত এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট বাদে সবকিছু বন্ধ রাখার নির্দেশনা আছে, তবে এই রোডে তার কিছুই বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। অপর দিকে, চুয়াডাঙ্গা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকপাড়া ও শেখপাড়ার অবস্থাও একই রকম। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডপাড়া এবং এতিমখানাপাড়ার অবস্থাও একই রকম। বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা আর লাল পতাকায় ঝুঁলছে। তবে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হোসেনকে ফেরিঘাট রোডে বাঁশ পুততে দেখা গেছে। কিন্তু পরে আর কাউকেই পাওয়া যায়নি। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গুলশানপাড়া আর থানা কাউন্সিলপাড়ার কোনোটাতেই লকডাউনের ছাপ নেই। কোথাও বাঁশ কিংবা লাল পতাকাও চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘থানা কাউন্সিল পাড়াটির রাস্তাটি একমুখী সড়ক হওয়ায় বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। আর গুলশানপাড়ায় চলাচলের জন্য শুধু একটি মাত্র রাস্তা। এলাকাবাসী বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দিবে না জানিয়ে বাঁশ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। তবে স্বেচ্ছাসেবকসহ কমিটির সবাই কাজ করছেন।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ বলেন, ‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন বাস্তবায়ন করার। স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কমিটির আলোচনা সভা করাসহ প্রত্যেকটা কাজই করছি। আসলে মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচণ্ড অভাব।’
৪ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সদর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফ উদ্দৌলা বলেন, ‘কঠোরভাবেই লকডাউন কার্যকর করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াসহ লাল ফ্লাগ টাঙানো হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, ‘যে যে এলাকা লকডাউন করা হয়েছে, সে এলাকার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নিয়ে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়ম অমান্যকারীকে শাস্তি দিচ্ছেন। জরিমানা করছেন। তবুও মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব প্রচুর। মানুষ মানতেই চায় না। আসলে সুনাগরিক হিসেবে প্রত্যেকে যদি সঠিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানেন, তাহলে এমন হয় না। এমন একটা পরিস্থিতি যেন সব দায়িত্ব প্রশাসন আর পুলিশের। কিন্তু আমাদেরও সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ সংকট কাটিয়ে ওঠার উপায় সচেতন হওয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মাদকবিরোধী ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে” — অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ এরশাদ উদ্দিন

চুয়াডাঙ্গায় বাঁশের খুঁটি আর লাল পতাকায় লকডাউন এর সব দায়িত্ব শেষ!

আপডেট সময় : ০৯:১১:৪২ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৪ জুলাই ২০২০

নিউজ ডেস্ক:

শুধু ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের কয়েকটি পাড়ার লকডাউন। বাস্তবায়নে সঠিকভাবে মাঠে নেই পুলিশ-প্রশাসন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটিগুলোর স্বেচ্ছাসেবকেরা। তাই লকডাউন তোয়াক্কা না করেই চলছে সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। লকডাউনকৃত এলাকায় জনসমাগম। সাধারণ মানুষ লকডাউনকৃত এলাকায় যাচ্ছে, আবার লকডাউনকৃত এলাকার মানুষ বাইরে আসছে অহরহ। শুধুমাত্র বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে লাল পতাকা টাঙানো আছে, তবে নেই কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা স্বেচ্ছাসেবক। জেলা প্রশাসন থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি দেওয়া হলেও, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত ওয়ার্ড পর্যায়ের এসব মনিটরিং কমিটির কোনো সদস্যের দেখা মেলেনি একটিও লকডাউনকৃত এলাকায়। সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, এটি জেলার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের লকডাউনকৃত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় স্বাভাবিক চিত্র। শুধুমাত্র রাস্তাটিই বন্ধ আর লাল পতাকা টাঙানো। চুয়াডাঙ্গা শহরের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক ফেরিঘাট রোড। ব্যবসায়িক এলাকা নামেই খ্যাত এই রোডটি। দুপুরে দেখা গেছে প্রত্যেকটা দোকান অর্ধেক শার্টার নামিয়ে খোলা আছে। মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চলছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার তোয়াক্কা নেই। যদিও লকডাউনকৃত এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট বাদে সবকিছু বন্ধ রাখার নির্দেশনা আছে, তবে এই রোডে তার কিছুই বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। অপর দিকে, চুয়াডাঙ্গা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লিকপাড়া ও শেখপাড়ার অবস্থাও একই রকম। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ডপাড়া এবং এতিমখানাপাড়ার অবস্থাও একই রকম। বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা আর লাল পতাকায় ঝুঁলছে। তবে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল হোসেনকে ফেরিঘাট রোডে বাঁশ পুততে দেখা গেছে। কিন্তু পরে আর কাউকেই পাওয়া যায়নি। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গুলশানপাড়া আর থানা কাউন্সিলপাড়ার কোনোটাতেই লকডাউনের ছাপ নেই। কোথাও বাঁশ কিংবা লাল পতাকাও চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘থানা কাউন্সিল পাড়াটির রাস্তাটি একমুখী সড়ক হওয়ায় বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। আর গুলশানপাড়ায় চলাচলের জন্য শুধু একটি মাত্র রাস্তা। এলাকাবাসী বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দিবে না জানিয়ে বাঁশ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। তবে স্বেচ্ছাসেবকসহ কমিটির সবাই কাজ করছেন।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ বলেন, ‘আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন বাস্তবায়ন করার। স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কমিটির আলোচনা সভা করাসহ প্রত্যেকটা কাজই করছি। আসলে মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচণ্ড অভাব।’
৪ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা সদর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফ উদ্দৌলা বলেন, ‘কঠোরভাবেই লকডাউন কার্যকর করার জন্য কাজ করা হচ্ছে। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়াসহ লাল ফ্লাগ টাঙানো হয়েছে।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, ‘যে যে এলাকা লকডাউন করা হয়েছে, সে এলাকার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা নিয়ে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়ম অমান্যকারীকে শাস্তি দিচ্ছেন। জরিমানা করছেন। তবুও মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব প্রচুর। মানুষ মানতেই চায় না। আসলে সুনাগরিক হিসেবে প্রত্যেকে যদি সঠিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানেন, তাহলে এমন হয় না। এমন একটা পরিস্থিতি যেন সব দায়িত্ব প্রশাসন আর পুলিশের। কিন্তু আমাদেরও সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ সংকট কাটিয়ে ওঠার উপায় সচেতন হওয়া, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।’