নিউজ ডেস্ক:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের বানিয়াকান্দও জামতলার একটি পুকুর থেকে শিশু দুই ভাই বোনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলো, সাফিয়া (০৭) ও ভাই আবু সালেহ আল মাহিদ (০৬)। গত রোববার দুপুরের দিকে পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ শিশুদের মা মনিরা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। মনিরা খাতুন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মনিরা খাতুন পুলিশকে তার জবানবন্দিতে বলেন, তিনি তার নিজের দুই সন্তানকে সাথে নিয়ে পুকুরে যান। পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের দু’জনকেই ধাক্কা দিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দেন। শিশু দুটি যখন বাচার জন্য পানিতে হাবাডুবু করছিল তখন তিনি পিছন ফিরে ছিলেন। তাদেরকে উদ্ধার না করে বাড়ি চলে যান। এক পর্যায়ে তিনি নিজের বিবেকের তাড়নায় এক প্রতিবিশীকে সাথে নিয়ে পুকুরে ফিরে আসেন এবং তাদেরকে ডাঙ্গায় তোলেন। ততক্ষণে সব শেষ। তিনি কেন নিজের সন্তানদের হত্যা করলেন এ প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমার সংসারে কোন শান্তি নেই। আমার ৪ ছেলে মেয়ে। বড় দুটিকে তার পিতা খুব ভালবাসে কিন্তু ছোট দুটিকে কাছে নেয়না। ভালবাসে না। আমার সংসারে খুব অশান্তি। সে কারণে আমি আমার দুই সন্তানকেই পানিতে ডুবিয়ে মেরেছি।
এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি তদন্ত এমদাদ হোসেন জানান, পাগলাকানাই ইউনিয়নের বানিয়াকান্দর গ্রামের নজরুল ইসলামের দুই ছেলে মেয়ে সাফিয়া ও মাহিদ। গত রবিবার সকাল থেকে তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে দুপুরের দিকে তাদের মা মনিরা খাতুন নিজেই পুকুর থেকে ছেলে মেয়ের মৃতদেহ তুলে আনেন। মনিরা খাতুন পুলিশকে বলেছিলেন, তিনি দুই ছেলে মেয়েকে পুকুর পাড়ে রেখে নিজে পানিতে গোসল করতে নামেন। পরে পিছন ফিরে দেখেন ছেলে মেয়ে দু’টি আর নেই। তবে তার কথা বার্তা অসংলগ্ন। যে কারণে মা মনিরা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। অবশেষে পুলিশের কাছে এবং আদালতে মা মনিরা খাতুন তার দুই সন্তান হত্যার লোমহর্ষক স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিলে ময়না তদন্ত রিপোর্টেও শ্বাসরোধ করে হত্যা প্রমাণিত হয়!