নিউজ ডেস্ক:দর্শনা আজিমপুরে যৌতুকের দাবিতে স্বামী খোকন ও তাঁর পরিবারের লোকজনের হাতে অমানুষিক নির্যাতনে গুরুত্বর আহত হয়েছেন উর্মী খাতুন নামের এক গৃহবধূ। তিনি চিকিৎসার অভাবে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন বাড়ির বিছানায়। তাঁকে আজ নেওয়া হবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ঘটনায় স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুরের নামে মামলা করেছেন উর্মীর পরিবারের লোকজন।
জানা গেছে, দর্শনা পৌর এলাকার আজিমপুর গ্রামের মাঠপাড়ার দরিদ্র মিন্টুর মেয়ে মনিকা খাতুন ওরফে উর্মী খাতুনের (২৩) সঙ্গে বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হয় একই পাড়ার ফরিদ দেওয়ানের ছেলে ওহেদুজ্জামান খোকনের। বিয়ের পর তাঁদের সংসার ঠিকঠাকই চলছিল। এর মধ্যে তাঁদের কোলজুড়ে আসে তাসিন নামের একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান । সন্তান জন্মের পর থেকে তাঁর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের দাবিতে দফায় দফায় অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকে গৃহবধূ উর্মীর ওপর। তাঁদের নির্যাতনের জ্বালা সইতে না পেরে কয়েক বার পিতার বাড়িতেও চলে যান উর্মী। কিন্তু ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নির্যাতনের কথা ভুলে আবারও যৌতুকলোভী স্বামীর সংসারে ফিরে যান উর্মী। এরপরও স্বামীর বাড়িতে একটি দিনেও সুখে সংসার করতে পারেননি উর্মী। সেখানে যৌতুকের জন্য স্বামী, শ্বশুর ও ভাসুরের নির্যাতনের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া উর্মীর শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূ উর্মীই শুধু নির্যাতনের শিকার হননি, সেখানে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মা হাসি ও খালা শেফালীও। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে সবকিছুই মুখ বুঝে সহ্য করেছেন উর্মীর পরিবারের লোকজন।
কিন্তু তারপরও সুখের মুখ দেখতে পারেননি উর্মী। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুরের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন গৃহবধূ উর্মী খাতুন। তাঁকে ঘরের মধ্যে এলোপাতাড়িভাবে রড, লাঠিসহ কিলঘুষি মেরে রক্তাক্ত জখম করা হয়। খবর পেয়ে উর্মীর পরিবারের লোকজন ছুটে গিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে উদ্ধার করে রাতেই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এ সময় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন উর্মীকে।
এ দিকে হতদরিদ্র ঘরের মেয়ে হওয়ায় অর্থাভাবে তাঁর পরিবারের লোকজন উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে না পারায় চিকিৎসার অভাবে শরীরের তীব্র যন্ত্রণায় বাড়ির বিছানায় কাতরাচ্ছেন উর্মী। আজ তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হতে পারে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া উর্মীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁর যৌতুকলোভী স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।