শিরোনাম :
Logo তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনসাফভিত্তিক মানবতাবাদী বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারঃ মোশাররফ হোসেন মিয়াজী Logo পলাশবাড়ীতে বিএনপির বিশাল বিজয় র‌্যালি Logo জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিতে ইবিতে সংগ্রহশালা উদ্বোধন Logo ৫ ই আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কয়রা থানা বিএনপি’র বিজয় মিছিল Logo জুলাই শহীদদের রক্ত শুধু অতীত নয়, পথচলার অঙ্গীকার : জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন Logo গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন নতুন বাংলাদেশে নব্য ফ্যাসিবাদের ঠাঁই হবে না : হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান Logo জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে কচুয়ায় জামায়াতের গণমিছিল ও সমাবেশ Logo লস্কর সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তরুণ ও মেধাবী অভিনেতা জাহাঙ্গীর রাজু Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামীর গণমিছিল Logo তালাকের ক্ষোভে জামাতার বিরুদ্ধে শাশুড়ির ধর্ষণ মামলা

‘দেশে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে’, ফিরেই প্রথম প্রতিক্রিয়া উইং কমান্ডার অভিনন্দনের

  • আপডেট সময় : ০১:৫৫:৩৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২ মার্চ ২০১৯
  • ৭৭৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

৫৮ ঘণ্টা পাকিস্তানের কবজায় থাকার পর শুক্রবার ভারতে ফিরেছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। ওই দিন রাত ৯টা ২০ নাগাদ ওয়াঘা-অটারী সীমান্তে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। দেশের মাটিতে পা রাখার পরই অভিনন্দনের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, “ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।”

গোটা দেশ প্রহর গুনছিল কখন ঘরে ফিরবেন দেশের এই বীর সন্তান। তাঁর ফিরে আসা নিয়েও দিনভর কম নাটক হয়নি। সকালেই খবর আসে ইসলামাবাদ থেকে সড়কপথে লাহৌরে নিয়ে আসা হচ্ছে অভিনন্দনকে। দুপুর ২টো নাগাদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁকে। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে যায়। ফের জানা যায়, সাড়ে ৩টে নাগাদ অভিনন্দন দেশে ফিরছেন। সেই সময়ও অতিক্রান্ত হয়ে যায়। অবশেষে রাত ৯টার পর ওয়াঘা সীমান্ত থেকে নীল ব্লেজার, সাদা জামা এবং ধূসর প্যান্টে হেঁটে আসতে দেখা যায়। দেশের মাটিতে পা রাখলেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। স্বস্তি নেমে এল গোটা দেশে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাক সেনার হাতে আটক হন অভিনন্দন। খবরটা সামনে আসতেই গোটা দেশে একটা আশঙ্কার ছায়া নেমে আসে। পাকিস্তানে ভারতীয় যুদ্ধবন্দিদের ইতিহাস মনে পড়ে যাচ্ছিল অনেকেরই। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক সেনার হাতে ধরা পড়া বায়ুসেনার আর এক পাইলট নচিকেতার উদাহরণই ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু ভয় দেখাচ্ছিল অজয় আহুজার স্মৃতি।

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কে নচিকেতা এবং স্কোয়াড্রন লিডার অজয় আহুজা। ১৯৯৯ সালের ২৭ মে, কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর হাতে পড়েছিলেন এই দু’জন। সে দিন কার্গিলের আকাশে নচিকেতার মিগ-২৭ বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে বেরিয়ে আসতে পারলেও পাক সেনার নর্দার্ন ইনফ্যান্ট্রি বন্দি করে তাঁকে। তৎকালীন অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার গোপনে বিস্তর আলোচনা চালিয়ে রাজি করায় পাকিস্তানকে। রেড ক্রসের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয় নচিকেতাকে। কিন্তু অজয়কে বন্দি অবস্থায় হত্যা করেছিল পাক বাহিনী। বায়ুসেনার ভেঙে পড়া বিমানের এক চালককে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অজয়ের বিমান। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে নামতে পারলেও বন্দি হন। সে দিনই তাঁকে হত্যা করে পাক বাহিনী।

নচিকেতা ফিরলেও কী ভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল ওই বায়ুসেনার পাইলটের উপর, সেই ঘটনা আজও অনেকের মনে টাটকা। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যেন অভিনন্দনের জীবনে নেমে না আসে গোটা দেশ জুড়ে সেই প্রার্থনা চলছিল। নচিকেতা ধরা পড়ার আট দিন পর দেশে ফিরেছিলেন। অভিনন্দন ফিরলেন দু’দিন পর। কিন্তু সেই দু’দিনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করছিল দেশবাসীকে। পাকিস্তান অভিনন্দনকে আটক করার পরই ভেবেছিল তাঁকে ঢাল বানিয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। সেই খেলায় কিন্তু বাজিমাত করল ভারতই। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোনও শর্ত ছাড়াই মুক্তি দিতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, জেনিভা কনভেনশনের বিষয়টিও পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেও চাপ আসতে শুরু করেছিল পাকিস্তানের উপর। শেষমেশ, পাক প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ভারতকে ‘শান্তির বার্তা’ দিতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর।

সূত্র : আন্দবাজার পত্রিকা 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইনসাফভিত্তিক মানবতাবাদী বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকারঃ মোশাররফ হোসেন মিয়াজী

‘দেশে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে’, ফিরেই প্রথম প্রতিক্রিয়া উইং কমান্ডার অভিনন্দনের

আপডেট সময় : ০১:৫৫:৩৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২ মার্চ ২০১৯

নিউজ ডেস্ক:

৫৮ ঘণ্টা পাকিস্তানের কবজায় থাকার পর শুক্রবার ভারতে ফিরেছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। ওই দিন রাত ৯টা ২০ নাগাদ ওয়াঘা-অটারী সীমান্তে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। দেশের মাটিতে পা রাখার পরই অভিনন্দনের প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, “ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে।”

গোটা দেশ প্রহর গুনছিল কখন ঘরে ফিরবেন দেশের এই বীর সন্তান। তাঁর ফিরে আসা নিয়েও দিনভর কম নাটক হয়নি। সকালেই খবর আসে ইসলামাবাদ থেকে সড়কপথে লাহৌরে নিয়ে আসা হচ্ছে অভিনন্দনকে। দুপুর ২টো নাগাদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁকে। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে যায়। ফের জানা যায়, সাড়ে ৩টে নাগাদ অভিনন্দন দেশে ফিরছেন। সেই সময়ও অতিক্রান্ত হয়ে যায়। অবশেষে রাত ৯টার পর ওয়াঘা সীমান্ত থেকে নীল ব্লেজার, সাদা জামা এবং ধূসর প্যান্টে হেঁটে আসতে দেখা যায়। দেশের মাটিতে পা রাখলেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। স্বস্তি নেমে এল গোটা দেশে।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পাক সেনার হাতে আটক হন অভিনন্দন। খবরটা সামনে আসতেই গোটা দেশে একটা আশঙ্কার ছায়া নেমে আসে। পাকিস্তানে ভারতীয় যুদ্ধবন্দিদের ইতিহাস মনে পড়ে যাচ্ছিল অনেকেরই। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক সেনার হাতে ধরা পড়া বায়ুসেনার আর এক পাইলট নচিকেতার উদাহরণই ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু ভয় দেখাচ্ছিল অজয় আহুজার স্মৃতি।

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট কে নচিকেতা এবং স্কোয়াড্রন লিডার অজয় আহুজা। ১৯৯৯ সালের ২৭ মে, কার্গিল যুদ্ধের সময় পাক বাহিনীর হাতে পড়েছিলেন এই দু’জন। সে দিন কার্গিলের আকাশে নচিকেতার মিগ-২৭ বিমানের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে বেরিয়ে আসতে পারলেও পাক সেনার নর্দার্ন ইনফ্যান্ট্রি বন্দি করে তাঁকে। তৎকালীন অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার গোপনে বিস্তর আলোচনা চালিয়ে রাজি করায় পাকিস্তানকে। রেড ক্রসের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয় নচিকেতাকে। কিন্তু অজয়কে বন্দি অবস্থায় হত্যা করেছিল পাক বাহিনী। বায়ুসেনার ভেঙে পড়া বিমানের এক চালককে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন তিনি। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অজয়ের বিমান। তিনি ‘ইজেক্ট’ করে নামতে পারলেও বন্দি হন। সে দিনই তাঁকে হত্যা করে পাক বাহিনী।

নচিকেতা ফিরলেও কী ভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল ওই বায়ুসেনার পাইলটের উপর, সেই ঘটনা আজও অনেকের মনে টাটকা। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা যেন অভিনন্দনের জীবনে নেমে না আসে গোটা দেশ জুড়ে সেই প্রার্থনা চলছিল। নচিকেতা ধরা পড়ার আট দিন পর দেশে ফিরেছিলেন। অভিনন্দন ফিরলেন দু’দিন পর। কিন্তু সেই দু’দিনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে তাড়া করছিল দেশবাসীকে। পাকিস্তান অভিনন্দনকে আটক করার পরই ভেবেছিল তাঁকে ঢাল বানিয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করবে। সেই খেলায় কিন্তু বাজিমাত করল ভারতই। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোনও শর্ত ছাড়াই মুক্তি দিতে হবে তাঁকে। পাশাপাশি, জেনিভা কনভেনশনের বিষয়টিও পাকিস্তানকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেও চাপ আসতে শুরু করেছিল পাকিস্তানের উপর। শেষমেশ, পাক প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, অভিনন্দনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ভারতকে ‘শান্তির বার্তা’ দিতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর।

সূত্র : আন্দবাজার পত্রিকা