খুনিদের সঙ্গে জোট বেঁধে ড. কামাল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন
ছেলুন থাকলো আপনার দেখবেন; বললেন নাসিম : স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে মেডিকেল কলেজ চাইলেন হুইপ
নিউজ ডেস্ক: ড. কামাল খুনিদের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন। জোট করেছেন ভাল, একশ’টা জোট করুন কোনো সমস্যা নাই, তবে দেশে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করবেন না। নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করলে শেখ হাসিনার সরকার কঠোর হাতে আপনাদের ষড়যন্ত্র দমন করবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ১৪ দলের সমন্বয়ক এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গতকাল রোববার বিকেলে চুয়াডাঙ্গায় নবনির্মিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে শহরের টাউন ফুঠবল মাঠে ১৪ দলের আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন।
জনসভায় ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম আরো বলেন, আপনাদের চুয়াডাঙ্গাতে এর আগেও এসেছিলাম। তখন এসেছিলাম এই রক্তাক্ত জনপদকে সন্ত্রাসী মুক্ত করতে। আজ এসেছি অন্য একটি কারণে। বাংলাদেশে চক্রান্ত ছড়িয়ে গেছে এই চক্রান্তের মোকাবেলা করতে হবে। দেশ বিরোধী চক্রান্তকারীদের উচিত জবাব দিতে হবে। আজ ডক্টর কামাল হোসেন আইনের শাসনের কথা বলছেন? মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছেন? সেই কামাল হোসেন খুনিদের সাথে, খালেদা জিয়ার সাথে মাঠে নেমেছেন তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে। ড. কামাল হোসেনের এতবড় বেইমানী বাংলার জনগণ এর আগে আর কখনো দেখেনি। বাংলার জনগণ এবারো নৌকা প্রতিকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়ী করে এই চক্রান্তকারীদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।
তিনি আরো বলেন, আজ চুয়াডাঙ্গাতে এসেছিলাম আড়াইশ’ বেড হাসাপাতাল উদ্বোধন করতে। হাসপাতাল উদ্বোধন করেছি। আপনাদের দাবি চুয়াডাঙ্গাতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের। আবার নৌকায় ভোট দিন, মেডিকেল কলেজ করে দেব ইনশাআল্লাহ!
বাংলার জনগণ নির্বাচন চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশ আজ জঙ্গিমুক্ত হয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে মানুষের দৌড় গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে গেছে। বাংলার গ্রাম-গঞ্জসহ হাটে বাজারে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। আমার ভাই ছেলুনের নেতৃত্বে এই চুয়াডাঙ্গা আলোকিত হয়েছে। এ জেলার সর্বত্র পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। এসময় বক্তব্যের মাঝেই মোহাম্মদ নাসিম হুইপ মহোদয়ের হাত জনসমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মিদের উদ্দেশ্যে উচিয়ে ধরে বলেন, আমি আপনাদের মাঝে ছেলুন জোয়ার্দ্দারকে রেখে গেলাম, আপনারা তাকে দেখবেন।
বর্তমান সরকারের ৫ বছর মেয়াদপূর্ণ হয়েছে উল্লেখ করে নাসিম জোর দিয়ে বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে। খেলা হবে, নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে। বিরোধী রাজনৈতিক জোটের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, আপনারা যথা সময়ে নির্বাচন করতে পারেন নাই, ফলে হেরেছেন। নির্বাচন সামনে আছে যদি সাহস থাকে নির্বাচনের মাঠে আসেন। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন হবে।
এসময় তিনি জনগনের উদ্দেশ্যে ভুল করা যাবেনা উল্লেখ করে বলেন, ভুল করলে নিজ দলের মন্ত্রী এমপিদেরও ছাড় দেননি শেখ হাসিনা। অপরাধীদের জেলে পাঠিয়েছেন মন্ত্রীত্ব বাতিল করেছেন। ফলে ভুল করা যাবেনা। দেশকে এগিয়ে নিতে নৌকা প্রতিকে ভোট দিতে হবে।

????????????????????????????????????

বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুতের বড় সমস্যা শেখ হাসিনা সমাধান করেছে, বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি দমন করেছেন। চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন শেখ হাসিনা। কমিউনিটি ক্লিনিক করেছে। আজ স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দৌরগোড়াই পৌঁছে দিয়েছে শেখ হাসিনা। এখন সাধারণ মানুষ বিনামুল্যে ঔষধ পায়। বর্তমানে চারিদিকে উন্নয়নের ছোয়া লাগিয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনা। তবে কেন জনগণ শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে না? আজ এতো মানুষ এখানে উপস্থিত হয়েছে কারণ তারা শান্তি চায় উন্নয়ন চাই। ফলে জনগণ শেখ হাসিনার নৌকা প্রতিককে ভোট দেবে ইনশাআল্লাহ।
আগামী ১০দিনের মধ্যে দেশে বর্তমান পরিস্থিতির বড় পরিবর্তন আসবে ড. কামাল হোসেনের এমন বক্তব্যের জবাবে ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেন এটি ড. কামাল হোসেনদের দিবা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়।
চুয়াডাঙ্গাবাসীকে সম্মান করি শ্রদ্ধা করি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ঐক্য জোটের এক নেতা বলেছে, লড়াই করে ৭ দফা দাবি আদায় করবে তারা। দাবি আদায় করা সহজ না। জনবিচ্ছিন হয়ে কোনো দাবি আদায় করা যায় না। ড. কামাল হোসেনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত করবেন না। আমার দুঃখ্য হয়, লজ্জা হয়। আপনার মত শিক্ষিত মানুষ যে বঙ্গবন্ধুর ¯েœহ পেয়েছেন আপনি কিভাবে খুনিদের সাথে হাত মেলান। আপনার বর্তমান যে অবস্থা তা আওয়ামী লীগের জন্য হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য হয়েছেন। আর আপনি তার সাথে বেইমানী করেন। আপনার লজ্জা হওয়া উচিত। এর জবাব বাংলার জনগণ নির্বাচনের মাঠে দেবে। সামনে নির্বাচন। আসেন নির্বাচনের মাঠে আসেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আর ভুল করবেন না। খেলা হবে। রেফারি থাকবে ইলেকশন কমিশন মাঠে থাকবে। আমরা যারা মন্ত্রী আছি প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা অন্য কোন কাজ করতে পারবো না। আমাদের কথাই প্রশাসন চলবে না। প্রশাসন চলবে ইলেকশন কমিশনের কথায়। তবে ভয় কি? দুই দলে খেলা হবে। অথবা তিন দলে খেলা হবে। ভয় পান কেনো? জনগণ যাকে ভোট দেবে সেই নির্বাচিত হবে। গতবার ভুল করেছেন এবার যদি নির্বাচনে না আসেন বাটি চালান দিয়েও বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর যদি চক্রান্ত করেন তাহলে খেলার মাঠ থেকে লাল কার্ড দেখাইয়ে বিদায় করে দেয়া হবে। আপনারা নেতাকর্মিরা নৌকার জয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বেন না। একটা সিটও যেন নৌকার বাইরে না যায়। নৌকায় ভোট দেন আরো উন্নয়ন পাবেন আপনারা। আমি ফিরে গিয়ে শেখ হাসিনাকে বলবো চুয়াডাঙ্গার জনগণ নৌকাতে ভোট দেবে।
তিল ধরণের ঠায় না থাকা টাউন ফুটবল মাঠের জনসভায় জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি’র সভাপতিত্বে ১৪ দলের মুখপাত্র নাসিম অভিযোগ করে আরো বলেন, ড. কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধুর ¯েœহভাজন ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কারনে তিনি বিনাভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধু তাকে মন্ত্রীও বানিয়েছিলেন। আজ সেই ডা. কামাল হোসেন খুনিদের সাথে হাত মিলিয়েছেন। স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের সাথে হাত মিলিয়েছেন। রাজাকারদের দোষরদের সাথে হাত মিলিয়েছেন। ততকালীন দু:শাসনের খালেদা তারেক জিয়ার সাথে হাত মিলিয়েছেন।

????????????????????????????????????

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা ১৪ দলের সমন্বয়ক জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন উক্ত জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে অনুরোধ করে বলেন, আজ আপনি যে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেলেন এটি যেনো ভবিষ্যতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয় এবং এই হাসপাতালটায় লোকবল নিয়োগসহ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করে অতি শিঘ্রই এটা পুরোপুরি চালুর ব্যবস্থা করবেন। চুয়াডাঙ্গার মানুষ বিশ্বাস করে আপনি ইচ্ছে করলে অনেক কিছুই করতে পারেন। এ অঞ্চলের মানুষের জন্য। আমরা চুয়াডাঙ্গাবাসী না চাইতে অনেক কিছু দিয়েছেন। আপনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন তাই আপনার কাছে দাবি জানাচ্ছি আমাদের এই সামান্য দাবিটুকু আপনি পূরণ করবেন।
চুয়াডাঙ্গার মানুষ মনে করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম চুয়াডাঙ্গারই মানুষ এ কথা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, একটা সময় সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে আমরা চুয়াডাঙ্গাবাসী নিজ বাড়ি ঘরে ঘুমাতে পারতাম না। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন নাসিম। এখন আমরা নিরাপদে নিজ বাড়িতে থাকছি বসবাস করছি। গ্রামেগঞ্জে মানুষ ৪/৫ তলা বিল্ডিং বানাচ্ছে সন্ত্রাসীদের উৎপাত নেই। চাঁদাবাজী নেই। সেই অবদান তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনি নাসিম ভাই ও শেখ হাসিনার সরকারের কারণে। সে কারণে নাসিম ভাই চুয়াডাঙ্গাবাসীর কাছে পরিচিত নাম এবং সে কারণে চুয়াডাঙ্গাবাসী মনে করে নাসিম ভাই চুয়াডাঙ্গারই মানুষ।
এসময় মঞ্চে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে তিনি বলেন, একটা জোট হয়েছে। সেই ঐক্য জোটের এক নেতা বলেছেন, ৭ দফা দাবি না মানলে ঝড় উঠবে? এসময় হুইপ চিরচেনা সাহসী ভঙ্গিতে বলেন, আরে মিয়ারা ঝড় উঠার কি দেখোছো? তোমাদের সাথে লড়াই করতে আমার নেত্রীর লাগবে না, নাসিম ভাইয়ের লাগবে না, ছেলুনের সাথে লড়াই করতে হবে। মিয়ারা আমরা ভয় পাওয়ার লোক না। আইয়ুব খানকে দেখেছি, জিয়াউর রহমানের দেখেছি। সুতরাং আমাদের ফাঁকা বুলির আওয়াজ দিয়ে লাভ নেই। আওয়ামী লীগের সৈনিকের, বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
জনসভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান টিটু, পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন প্রসেনজিৎ ঘোষ। একই সাথে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীল হান্নানের গঠনমূলক সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের নেতা দিলীপ বড়ুয়া।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দিলীপ বড়–য়া বলেন, ১৯৭১ সালে আপনাদের জেলার পাশে বৈদ্যনাথতলায় যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিলো। সেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি সোনার বাংলা উপহার দিতে চেয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে তাকেসহ স্ব-পরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশকে যারা পিছিয়ে দিয়েছিলো। ১৯৯৬ সালের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জাতীকে আজ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকবে। সে কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসী নৌকা মার্কায় ভোটদিয়ে একটি শক্তিশালি বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার শক্তি বাড়াবে এটাই আমি বিশ্বাস করি। জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নের্তৃত্বের কারনে আমরা একজোট হয়েছি। ১৪ দল গঠন করেছি। আমরা এই জোটকে সমর্থন করছি। আর শেখ হাসিনার সেই স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ গঠন করার লক্ষে। শিল্প সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষে নিরলস কাজ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। তাই আপনারা জামায়াত-বিএনপির চক্রান্তের ফাঁদে না পড়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে জয়যুক্ত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাবেন।
জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিছুর রহমান মল্লিক, গণতন্ত্রী পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক ডা. কামাল হোসেন, গণ আজাদী লীগ’র সভাপতি এম এ সিকদার, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহম্মেদ মুক্তা, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মওলানা সৈয়দ আবু দাউদ মাছনবী হায়দার, ন্যাপ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. এনামুল হক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ’র কার্যকারী সভাপতি এ্যাড. রবিউল আলম ও রেজাউর রহমান। এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ, জেলা যুবলীগের আহবায়ক নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাহাবুল ইসলাম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কহিনুর বেগম, শ্রমিক লীগের সভাপতি আফজালুল হকসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংঘটনের নেতাকর্মিরা।
ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিছুর রহমান মল্লিক বলেন, নির্বাচন আসছে, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া যখন পানির মধ্যে ডুবে যাচ্ছেন, তখন তাকে টেনে তোলার জন্য যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়েছে। নেতাকর্মিদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশের সব নেতাকর্মিকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে হবে। যাতে আবার রেল লাইন উপড়ে ফেলতে না পারে, আবার যেন পেট্রোলবোমা না মারতে পারে।
গণতন্ত্রী পার্টি’র সাধারণ সম্পাদক ডা. কামাল হোসেন বলেন, আবার চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। এ ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন- মনে রাখতে হবে, এটা ২০১৪ নয় এটা ২০১৮ সাল। কোনো দলের ঠিকানা নেই এমন পরানের দোস্তদের ভাড়া করে চক্রান্ত শুরু করেছে। নেতাকর্মিদের সাবধানে থাকতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে।
গণ আজাদী লীগ’র সভাপতি এম এ সিকদার বলেন, নির্বাচন বানচাল করতে ১/১১-এর সরকারের সহযোগীরাই আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মাঠে নেমেছে একটি মহল। তিনি বলেন, এরা কারা? এরাই ১/১১-এর সেনাশাসিত সরকারের পরামর্শদাতা। বিভিন্ন দল থেকে বাদপড়া, বহিষ্কার হওয়া নেতারা আজ ঐক্যে যুক্ত হয়েছেন। তারাই ১/১১-এর সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন, আবার তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন যদি কিছু পান।
জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বাবু বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে, যথাসময়েই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনের বিকল্প কিছু হতে পারে না। নির্বাচনের বিকল্প যা হয়, তাতে মানুষের কল্যাণ হয় না। যা ১/১১ সময়ে প্রমাণিত হয়েছে। ষড়যন্ত্রের ডাল ভেদ করে সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহম্মেদ মুক্তা বলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যারিস্টাররা এক হয়ে রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু করেছেন। ড. কামাল হোসেন, মান্না সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছেন। ১৪ দলের নেতাকর্মিরা যে কোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিহত করবে।
বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মওলানা সৈয়দ আবু দাউদ মাছনবী হায়দার বলেন, দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতার ওপর যখনই আঘাত এসেছে, তখনই ১৪ দল লড়াই করে তা রক্ষা করেছে। আগামীতেও জাতীয় ঐক্যের নামে যারা ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে তাদের প্রতিহত করবে ১৪ দল। তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন ও মান্না হচ্ছেন ষড়যন্ত্রকারী চক্র। নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত করা হলে তাদের প্রতিহত করা হবে।
ন্যাপ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. এনামুল হক বলেন, রাজনীতিতে প্রত্যাখ্যাত কিছু নেতারা জোট গঠন করে দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ওরা নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু ১৪ দলের নেতাকর্মিরা তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবেই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ’র কার্যকারী সভাপতি এ্যাড. রবিউল আলম বলেন, রাজনীতিতে হতাশাগ্রস্ত রাজনীতিতে নিক্ষিপ্ত, জনবিচ্ছন্নরা একত্রিত হয়ে জোট গঠন করে দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া এবং পলাতক তারেক রহমানকে রক্ষা করতে চাইছেন। দেশে কোনো সহায়ক সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই সরকারের প্রধান থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারও দাবি মেনে নেয়া হবে না।
বিকেলে চুয়াডাঙ্গা শহরের টাউন ফুটবল মাঠে ১৪ দলের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার পূর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম চুয়াডাঙ্গায় নব-নির্মিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, গতকাল অনুষ্ঠিত ১৪ দলের জনসভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী আলী আজগার টগর, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরি জিপুসহ জেলা আওয়ামী ও এর অঙ্গ সংগঠনের বেশ কিছু নেতৃস্থানীয় নেতা ও তাদের অনুসারিদের এই জনসভায় দেখা যায়নি।
তবে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী নজরুল মল্লিকের অনুসারিরা ব্যানার, ফেস্টুন সম্বলিত বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মি নজরুল মল্লিকের নেতৃত্বে উপস্থিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন।