শিরোনাম :
Logo জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাবি মেনে নিয়েছে সরকার  Logo শেরপুর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ শাহ্ কামাল উদ্দীনের পিআরএল গমনে বিদায় সংবর্ধনা Logo বোতল কান্ডে আটক জবি শিক্ষার্থী, ডিবি অফিস ঘেরাও এর হুঁশিয়ারী  Logo নামাজ শেষে জবি শিক্ষার্থীদের সমাবেশ শুরু Logo ভুল হলে শিক্ষা নিয়ে এগুতে চাই, বললেন মাহফুজ আলম Logo আগামীকাল জুম্মার পর জবি শিক্ষার্থীদের গন অনশন Logo সাম্য হত্যায় বৈবিছাআ নেতারা চুপ কেন প্রশ্ন ইবি ছাত্রদলের Logo ইবিতে তারুণ্যের তত্ত্বাবধানে নেতৃত্ব বিষয়ক কর্মশালা Logo মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার এসআই মো. মাসুদ রানা জেলার শ্রেষ্ঠ এসআই হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন। Logo রক্ত লাগলে রক্ত নে,জগন্নাথে হল দে’ রাজপথে লিখল শিক্ষার্থীরা

ঝিনাইদহে তিন ছেলে ও এক মেয়ে’র জননী আনজিরা বেগম পঁয়ষট্টিতে বৃত্তি পরীক্ষা !

  • আপডেট সময় : ০৩:১৬:৩৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৭৭৮ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ

এবার ঝিনাইদহে তিন ছেলে ও এক মেয়ে’র জননী আনজিরা বেগম পঁয়ষট্টিতে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। একেকটি কক্ষ খুদে পরীক্ষার্থীতে ঠাসা। মনোযোগ দিয়ে লিখছে সবাই। তবে একটি কক্ষে খুদে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এমন একজন বসেছেন, সহজেই চোখ আটকে যায় তাকে দেখে। মনযোগ সহকারে খাতায় উত্তর লিখছেন পাকা চুলের এক নারী, চোঁখে ভারী চশমা। ঝিনাইদহ সোনাদাহ গ্রামের ১২নং দোগাছি ইউনিয়নের মুক্তি যোদ্ধা মোঃ মোকাদ্দেছ হোসেনের স্ত্রী মোছা. আনজিরা (৬৫) সে তিন ছেলে ও এক মেয়ে’র জননী। পঁয়ষট্টি বছর বয়সে এসে তিনি বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর প্লে শ্রেণীতে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরিক্ষা কেন্দ্র কাঞ্চন নগর মডেল হাই স্কুল ঝিনাইদহ। পরীক্ষা শেষে কথা হয় আনজির’র সঙ্গে। তিনি শোনালেন জীবনের গল্প, পড়াশোনা নিয়ে তাঁর অদম্য ইচ্ছার কথা। বাড়ির কাছেই ছিল স্কুল কিন্তু পরিবারের অভাবের কারণে কোনো দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি। অল্প বয়সে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় তাকে। সে জন্য লেখাপড়া করতে পারেননি এ আফসোস নিজের হৃদয়ে বয়ে নিয়ে বেড়াতেন আনজিরা বেগম। তিনি বলেন, হসপিটাল, ব্যাংকে গেলে কাগজে নিজের নামটাও লিখতে পারিনা। সে জন্য সিদ্ধান্ত নিই, বয়স যাই হোক না কেন, পড়াশোনা শিখতেই হবে। আনজিরা বেগম আরো বলেন, ঝিনাইদহ গোয়াল পাড়া বাজারে বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে রোজ ভ্যালী স্কুলে নাতী ছেলেকে নিয়ে আসতাম তার সাথে ক্লাসও করতাম নিয়মিত। তার কছিুদিন পর আমিও ভর্তি হই। বয়স ৬৫ তবুও তিনি নিয়মিত ক্লাস করেছেন। খুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি খুব সহজেই মানিয়ে নেন। সহপাঠীরা কেউ নানি, কেউ দাদি বলে ডাকে। তবে মন খারাপ হয়নি একটুও তাতে। আনজিরা বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর “প্লে” শ্রেণীতে এক বছর পড়ার পর সে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কিন্তু পড়াশোনা করে চাকরি করবেন, তেমনটি নয়। পড়তে ভালো লাগে বলেই পড়েন তিনি। রোজ ভ্যালী স্কুলে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নাতী ছেলের সাথে সে প্রতিদিন স্কুলে এসে ক্লাস করতো আমি একদিন ক্লাস চলাকালিন ক্লাস রুমে গেলে সে আমাকে দেখে একটি কাগজ লুকাই। পরে কাগজ টিতে দেখি অ আ ই লেখার চেষ্টা করছেন তিনি । তার এ চেষ্টা দেখে আমি স্কুলে প্লে শ্রেণীতে ভর্তি করিয়ে নিই। এক বছর নয়িমিত ক্লাস করার পর বৃত্তি পরিক্ষা দেবার জন্য অন্য ছাত্র ছাত্রী দের সাথে প্রাইভেট পড়া শুরু করলো নিজ ইচ্ছা থেকে এবং অন্য ছাত্র ছাত্রিরা ক্লাস মিস করলেও আরজিনা একদিনও ক্লাস মিস করেনি। সে ক্লাসে খুব মনোযোগী ছিলেন তিনি ভালো ফল করবেন বলে আশাবাদী আমরা !

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল দাবি মেনে নিয়েছে সরকার 

ঝিনাইদহে তিন ছেলে ও এক মেয়ে’র জননী আনজিরা বেগম পঁয়ষট্টিতে বৃত্তি পরীক্ষা !

আপডেট সময় : ০৩:১৬:৩৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ

এবার ঝিনাইদহে তিন ছেলে ও এক মেয়ে’র জননী আনজিরা বেগম পঁয়ষট্টিতে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। একেকটি কক্ষ খুদে পরীক্ষার্থীতে ঠাসা। মনোযোগ দিয়ে লিখছে সবাই। তবে একটি কক্ষে খুদে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এমন একজন বসেছেন, সহজেই চোখ আটকে যায় তাকে দেখে। মনযোগ সহকারে খাতায় উত্তর লিখছেন পাকা চুলের এক নারী, চোঁখে ভারী চশমা। ঝিনাইদহ সোনাদাহ গ্রামের ১২নং দোগাছি ইউনিয়নের মুক্তি যোদ্ধা মোঃ মোকাদ্দেছ হোসেনের স্ত্রী মোছা. আনজিরা (৬৫) সে তিন ছেলে ও এক মেয়ে’র জননী। পঁয়ষট্টি বছর বয়সে এসে তিনি বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর প্লে শ্রেণীতে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরিক্ষা কেন্দ্র কাঞ্চন নগর মডেল হাই স্কুল ঝিনাইদহ। পরীক্ষা শেষে কথা হয় আনজির’র সঙ্গে। তিনি শোনালেন জীবনের গল্প, পড়াশোনা নিয়ে তাঁর অদম্য ইচ্ছার কথা। বাড়ির কাছেই ছিল স্কুল কিন্তু পরিবারের অভাবের কারণে কোনো দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি। অল্প বয়সে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয় তাকে। সে জন্য লেখাপড়া করতে পারেননি এ আফসোস নিজের হৃদয়ে বয়ে নিয়ে বেড়াতেন আনজিরা বেগম। তিনি বলেন, হসপিটাল, ব্যাংকে গেলে কাগজে নিজের নামটাও লিখতে পারিনা। সে জন্য সিদ্ধান্ত নিই, বয়স যাই হোক না কেন, পড়াশোনা শিখতেই হবে। আনজিরা বেগম আরো বলেন, ঝিনাইদহ গোয়াল পাড়া বাজারে বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে রোজ ভ্যালী স্কুলে নাতী ছেলেকে নিয়ে আসতাম তার সাথে ক্লাসও করতাম নিয়মিত। তার কছিুদিন পর আমিও ভর্তি হই। বয়স ৬৫ তবুও তিনি নিয়মিত ক্লাস করেছেন। খুদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি খুব সহজেই মানিয়ে নেন। সহপাঠীরা কেউ নানি, কেউ দাদি বলে ডাকে। তবে মন খারাপ হয়নি একটুও তাতে। আনজিরা বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর “প্লে” শ্রেণীতে এক বছর পড়ার পর সে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছে। তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কিন্তু পড়াশোনা করে চাকরি করবেন, তেমনটি নয়। পড়তে ভালো লাগে বলেই পড়েন তিনি। রোজ ভ্যালী স্কুলে প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নাতী ছেলের সাথে সে প্রতিদিন স্কুলে এসে ক্লাস করতো আমি একদিন ক্লাস চলাকালিন ক্লাস রুমে গেলে সে আমাকে দেখে একটি কাগজ লুকাই। পরে কাগজ টিতে দেখি অ আ ই লেখার চেষ্টা করছেন তিনি । তার এ চেষ্টা দেখে আমি স্কুলে প্লে শ্রেণীতে ভর্তি করিয়ে নিই। এক বছর নয়িমিত ক্লাস করার পর বৃত্তি পরিক্ষা দেবার জন্য অন্য ছাত্র ছাত্রী দের সাথে প্রাইভেট পড়া শুরু করলো নিজ ইচ্ছা থেকে এবং অন্য ছাত্র ছাত্রিরা ক্লাস মিস করলেও আরজিনা একদিনও ক্লাস মিস করেনি। সে ক্লাসে খুব মনোযোগী ছিলেন তিনি ভালো ফল করবেন বলে আশাবাদী আমরা !