শুক্রবার | ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo টেকনাফে ইঞ্জিন বিকল হওয়া যাত্রীবাহী বোটসহ ৪৫ জন যাত্রী উদ্ধার Logo খুবিতে ইউনেস্কো ও ইউজিসির উদ্যোগে পিয়ার-টু-পিয়ার ওরিয়েন্টেশন Logo সাতক্ষীরা–কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযান পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo সদরপুরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা

শৈলকুপায় নালশে পীঁপড়ার ডিম বিক্রি করে চলে কালামের ৬ জনের সংসার!

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৭:১৭:১৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭
  • ৭৬৭ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কালাম হোসেন। তিনি লালশো (নালশে) বা লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজনগর গোরস্থানের পাশের দেখা যায় একটা লম্বা বাঁশ ও থলে হাতে এক যুবক গাছে গাছে তন্ন তন্ন করে কি যেন খুজে ফিরছে? কৌতুহল বশতঃ তার কাছে গিয়ে জানা যায় তার নাম কামাল হোসেন। সে লালশো বা লাল পিঁপড়া বাসার খোঁজ করছে। তবে যেমন তেমন বাসা হলে চলবে না; চাই ডোল পিঁপড়ার বাসা। যেখানে মিলবে প্রচুর পরিমান সাদা রঙের ডিম। এই পিঁপড়ার ডিমই যে তার জীবিকা নির্বাহের হাতিয়ার। কালাম হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত রইনা, মেহগনি, আম, লিচুসহ দেশিয় গাছ গুলোতেই ডোল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়। লালা ব্যবহার করে গাছের ডালের আগার দিকের চার-পাঁচটা পাতা জোড়া দিয়ে শক্ত বাসা তৈরি করে পিঁপড়ার দল। পরে সেখানে তার ডিম পারে। বড় বাসা থেকে ১’শ থেকে দেড়শ গ্রাম ডিম পাওয়া যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে দিকে এই ডিমের চাহিদা থাকে বেশি। তবে সব থেকে বেশি ডিম পাওয়া যায় শীতের শেষে দিকে ফাল্গুন মাসে। কিন্তু সেই সময় ডিমের চাহিদা তেমন একটা থাকে না।

এই ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটি খুব সতর্কের সাথে করতে হয়। কারণ ডিম আস্ত না রাখলে মাছে খাই না। কালাম হোসেন জানান, লালশো বা লাল পিঁপড়ার ডিম প্রতি কেজি ৭ শত টাকা থেকে শুরু করে ১২ শত টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে। সাধারণ সৌখিন মাছ শিকারীরা তার কাছ থেকে এই ডিম ক্রয় করে থাকেন। এই ডিম মাছেদের খুব প্রিয় খাবার। বরশিতে আটা-ময়দা-পাউরুটি, একানির মত আধারের সঙ্গে লালশো বা লাল পিঁপড়ার ডিম দেয়া হলে বড় মাছেরা সহজে টোপ গেলে। এইজন্য যারা সৌখিন মাছ শিকারি বা টিকিটের কিনে মাছ শিকার করে তাদের কাছে জনপ্রিয় টোপ পিঁপড়ার ডিম। পানির নির্দিষ্ট স্থানে আধার ফেলে মাছ ডেকে আনার জন্য এই ডিমের চাহিদা রয়েছে জেলেদের কাছেও। এই জন্য অনেক সময় জেলেরা তাদের কাছ থেকে ডিম কিনে থাকেন। কালাম আরো জানান, তিনি গরিব মানুষ। এই কাজে কোন পুঁজি লাগে না। এজন্য তিনি এটাকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসাবে বেঁছে নিয়েছেন। সারাদিনে সে এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারেন। আর তাতেই চলে বাবা-মা- স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাদের ৬ জনের সংসার।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফে ইঞ্জিন বিকল হওয়া যাত্রীবাহী বোটসহ ৪৫ জন যাত্রী উদ্ধার

শৈলকুপায় নালশে পীঁপড়ার ডিম বিক্রি করে চলে কালামের ৬ জনের সংসার!

আপডেট সময় : ০৭:১৭:১৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কালাম হোসেন। তিনি লালশো (নালশে) বা লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজনগর গোরস্থানের পাশের দেখা যায় একটা লম্বা বাঁশ ও থলে হাতে এক যুবক গাছে গাছে তন্ন তন্ন করে কি যেন খুজে ফিরছে? কৌতুহল বশতঃ তার কাছে গিয়ে জানা যায় তার নাম কামাল হোসেন। সে লালশো বা লাল পিঁপড়া বাসার খোঁজ করছে। তবে যেমন তেমন বাসা হলে চলবে না; চাই ডোল পিঁপড়ার বাসা। যেখানে মিলবে প্রচুর পরিমান সাদা রঙের ডিম। এই পিঁপড়ার ডিমই যে তার জীবিকা নির্বাহের হাতিয়ার। কালাম হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত রইনা, মেহগনি, আম, লিচুসহ দেশিয় গাছ গুলোতেই ডোল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়। লালা ব্যবহার করে গাছের ডালের আগার দিকের চার-পাঁচটা পাতা জোড়া দিয়ে শক্ত বাসা তৈরি করে পিঁপড়ার দল। পরে সেখানে তার ডিম পারে। বড় বাসা থেকে ১’শ থেকে দেড়শ গ্রাম ডিম পাওয়া যায়। আশ্বিন-কার্তিক মাসে দিকে এই ডিমের চাহিদা থাকে বেশি। তবে সব থেকে বেশি ডিম পাওয়া যায় শীতের শেষে দিকে ফাল্গুন মাসে। কিন্তু সেই সময় ডিমের চাহিদা তেমন একটা থাকে না।

এই ডিম সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজটি খুব সতর্কের সাথে করতে হয়। কারণ ডিম আস্ত না রাখলে মাছে খাই না। কালাম হোসেন জানান, লালশো বা লাল পিঁপড়ার ডিম প্রতি কেজি ৭ শত টাকা থেকে শুরু করে ১২ শত টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে। সাধারণ সৌখিন মাছ শিকারীরা তার কাছ থেকে এই ডিম ক্রয় করে থাকেন। এই ডিম মাছেদের খুব প্রিয় খাবার। বরশিতে আটা-ময়দা-পাউরুটি, একানির মত আধারের সঙ্গে লালশো বা লাল পিঁপড়ার ডিম দেয়া হলে বড় মাছেরা সহজে টোপ গেলে। এইজন্য যারা সৌখিন মাছ শিকারি বা টিকিটের কিনে মাছ শিকার করে তাদের কাছে জনপ্রিয় টোপ পিঁপড়ার ডিম। পানির নির্দিষ্ট স্থানে আধার ফেলে মাছ ডেকে আনার জন্য এই ডিমের চাহিদা রয়েছে জেলেদের কাছেও। এই জন্য অনেক সময় জেলেরা তাদের কাছ থেকে ডিম কিনে থাকেন। কালাম আরো জানান, তিনি গরিব মানুষ। এই কাজে কোন পুঁজি লাগে না। এজন্য তিনি এটাকে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম হিসাবে বেঁছে নিয়েছেন। সারাদিনে সে এক থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করতে পারেন। আর তাতেই চলে বাবা-মা- স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাদের ৬ জনের সংসার।