শিরোনাম :
Logo হিটের প্রকল্প মূল্যায়নে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে: ইউজিসি চেয়ারম্যান Logo পলাশবাড়ী কালীবাড়ী বাজারে অবৈধ দখল উচ্ছেদ Logo পলাশবাড়ীতে ইউপি সদস্যের  হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছে একদল দুর্বৃত্তরা  Logo ঝালকাঠির নবগ্রাম কৃষি ব্যাংক ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে সরেজমিনে ডিজিএম Logo সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচারে জর্জরিত দেশের শিল্পাঙ্গন বিনোদন প্রতিবেদন Logo ইবি কারাতে ক্লাবের নেতৃত্বে নোমান-সাদিয়া Logo গৌরবের অষ্টম বর্ষে আলোর দিশার পদার্পণে থাকছে নানা আয়োজন Logo শিক্ষার্থীদের রিটেক সমস্যা সমাধানে গাফিলতির অভিযোগ যবিপ্রবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে  Logo নতুন ভবনেই বদলে যাবে সফিবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র” Logo ভুয়া নিয়োগপত্রে প্রতারণা: সিরাজগঞ্জের যুবকের কাছ থেকে আদায় ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা

ঝিনাইদহে রক্ষণা বেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ভবন

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৮:২৩:১৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৭৪০ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ   ঝিনাইদহ জেলার হেরিটেজ ভবন গুলো রক্ষণা বেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণের কোনো সরকারি উদ্যোগ নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম এসব ভবন সম্পর্কে জানতে চায়। কোটচাঁদপুরে সাহেব বাড়ি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এখনো টিকে আছে। বর্তমানে এটি কোটচাঁদপুর হাইস্কুলের প্রধান ভবন। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। সাহেব বলতে অত্যাচারী নির্যাতনকারী বলে মানুষের স্মৃতিতে ভেসে উঠলেও এদের মধ্যে অনেকে ভালো লোকও ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কোটচাঁদপুরের ম্যাকলিউড পরিবার। তারা আয়ারল্যান্ড থেকে এদেশে আসেন। তিন ভাই ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। পৌরসভা স্থাপন থেকে শুরু করে কোটচাঁদপুরের উন্নয়নে তাদের অবদান মানুষ স্মরণ করে। তারা বসবাসের জন্য একটি ভবন তৈরি করেছিলেন। বড় সাহেব বাড়ি অনেক আগে ধ্বংস হয়ে গেছে। ছোট সাহেব বাড়ি এখনো টিকে আছে। সাহেবরা চলে যাওয়ার সময় ভবনটি এক জমিদারের কাছে বিক্রি করে যান। পরে কোটচাঁদপুর হাইস্কুল এ ভবনে স্থানান্তর করা হয়। ভবনের কাঠামো এখনো ঠিক আছে। স্কুলের এ ভবন সংস্কার করার মত অর্থ নেই। ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে চলেছে। কোটচাঁদপুর হাইস্কুলের এ ভবন রক্ষা করার মত টাকা নেই।মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর নীলকুঠি ইতিহাসের সাক্ষী হিসাবে এখনো টিকে আছে। দোতলা এ কুঠিবাড়ি ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে। কয়েক একর জায়গার উপর এ কুঠি স্থাপন করা হয়েছিল। নীল ব্যবসার পতন হলে সাহেবরা দেশ ছাড়ার সময় এ কুঠিবাড়ি স্থানীয় এক জমিদারের কাছে বিক্রি করে যান।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদাররা দেশ ত্যাগ করেন। এতে কুঠিটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এটি এখন সরকারি সম্পত্তি। এখনো এ কুঠিটি সংস্কার করে আকর্ষণীয় করার সুযোগ আছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা হরিশংকরপুর গ্রামে বিখ্যাত বীজগণিতবিদ কে পি বসুর বাড়িটি অযতœ অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃটিশ আমলে তিনি ঢাকা কলেজের গণিতের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯০৭ সালে নিজ গ্রামে এক প্রাসাদোপম ভবন নির্মাণ করেন। ১৯১৪ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ছেলেরা কলকাতায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে থাকেন। বাড়িটি দেখাশুনার কেউ থাকে না। হেরিটেজ ভবন হিসাবে এটি রক্ষা করা প্রয়োজন। ঝিনাইদহ শহরের মুরাহিদহ গ্রামে সেলিম চৌধুরির বাড়িটি একটি দর্শনীয় ভবন। ৭বছর ধরে ১৮২২ সালে ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ ভবনটি নির্মাণ করে সেলিম চৌধুরী তার স্ত্রী আশরাফুন্নেছা বেগমের নামে নামকরণ করেন। অপরূপ কারুকার্য খচিত এ ভবনটি হেরিটেজ ভবনের মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। একইভাবে ধ্বংসের পথে মহেশপুর উপজেলার সুন্দরপুর জমিদার বাড়ি। ঝিনাইদহ শহরের নবগঙ্গা নদী তীরবর্তী বৃটিশ আমলে তৈরি অফিস আদালত ভবন গুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু ঝিনাইদহ দেওয়ানী ভবনটি টিকে আছে। এটিও সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসের পথে। এ ভবনের পাশে নবগঙ্গা তীরবর্তী দেবদারু গাছগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নয়নাভিরাম এ গাছগুলো বৃটিশদের স্মৃতি বহন করছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

হিটের প্রকল্প মূল্যায়নে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ঝিনাইদহে রক্ষণা বেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ভবন

আপডেট সময় : ০৮:২৩:১৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ   ঝিনাইদহ জেলার হেরিটেজ ভবন গুলো রক্ষণা বেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণের কোনো সরকারি উদ্যোগ নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম এসব ভবন সম্পর্কে জানতে চায়। কোটচাঁদপুরে সাহেব বাড়ি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এখনো টিকে আছে। বর্তমানে এটি কোটচাঁদপুর হাইস্কুলের প্রধান ভবন। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। সাহেব বলতে অত্যাচারী নির্যাতনকারী বলে মানুষের স্মৃতিতে ভেসে উঠলেও এদের মধ্যে অনেকে ভালো লোকও ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কোটচাঁদপুরের ম্যাকলিউড পরিবার। তারা আয়ারল্যান্ড থেকে এদেশে আসেন। তিন ভাই ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। পৌরসভা স্থাপন থেকে শুরু করে কোটচাঁদপুরের উন্নয়নে তাদের অবদান মানুষ স্মরণ করে। তারা বসবাসের জন্য একটি ভবন তৈরি করেছিলেন। বড় সাহেব বাড়ি অনেক আগে ধ্বংস হয়ে গেছে। ছোট সাহেব বাড়ি এখনো টিকে আছে। সাহেবরা চলে যাওয়ার সময় ভবনটি এক জমিদারের কাছে বিক্রি করে যান। পরে কোটচাঁদপুর হাইস্কুল এ ভবনে স্থানান্তর করা হয়। ভবনের কাঠামো এখনো ঠিক আছে। স্কুলের এ ভবন সংস্কার করার মত অর্থ নেই। ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে চলেছে। কোটচাঁদপুর হাইস্কুলের এ ভবন রক্ষা করার মত টাকা নেই।মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর নীলকুঠি ইতিহাসের সাক্ষী হিসাবে এখনো টিকে আছে। দোতলা এ কুঠিবাড়ি ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে। কয়েক একর জায়গার উপর এ কুঠি স্থাপন করা হয়েছিল। নীল ব্যবসার পতন হলে সাহেবরা দেশ ছাড়ার সময় এ কুঠিবাড়ি স্থানীয় এক জমিদারের কাছে বিক্রি করে যান।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদাররা দেশ ত্যাগ করেন। এতে কুঠিটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এটি এখন সরকারি সম্পত্তি। এখনো এ কুঠিটি সংস্কার করে আকর্ষণীয় করার সুযোগ আছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা হরিশংকরপুর গ্রামে বিখ্যাত বীজগণিতবিদ কে পি বসুর বাড়িটি অযতœ অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃটিশ আমলে তিনি ঢাকা কলেজের গণিতের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯০৭ সালে নিজ গ্রামে এক প্রাসাদোপম ভবন নির্মাণ করেন। ১৯১৪ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ছেলেরা কলকাতায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করতে থাকেন। বাড়িটি দেখাশুনার কেউ থাকে না। হেরিটেজ ভবন হিসাবে এটি রক্ষা করা প্রয়োজন। ঝিনাইদহ শহরের মুরাহিদহ গ্রামে সেলিম চৌধুরির বাড়িটি একটি দর্শনীয় ভবন। ৭বছর ধরে ১৮২২ সালে ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে এ ভবনটি নির্মাণ করে সেলিম চৌধুরী তার স্ত্রী আশরাফুন্নেছা বেগমের নামে নামকরণ করেন। অপরূপ কারুকার্য খচিত এ ভবনটি হেরিটেজ ভবনের মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। একইভাবে ধ্বংসের পথে মহেশপুর উপজেলার সুন্দরপুর জমিদার বাড়ি। ঝিনাইদহ শহরের নবগঙ্গা নদী তীরবর্তী বৃটিশ আমলে তৈরি অফিস আদালত ভবন গুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। শুধু ঝিনাইদহ দেওয়ানী ভবনটি টিকে আছে। এটিও সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসের পথে। এ ভবনের পাশে নবগঙ্গা তীরবর্তী দেবদারু গাছগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নয়নাভিরাম এ গাছগুলো বৃটিশদের স্মৃতি বহন করছে।