মঙ্গলবার | ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে Logo বেগম খালেদা জিয়া’র আশু রোগমুক্তি কামনায় ৮ নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির আধুনিকায়নে ৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা, বীরগঞ্জ উপজেলায় অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ Logo চাঁদপুরে যোগদানের প্রথম দিনেই সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

আলু রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ২০ শতাংশ দাবি !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:২২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১ জানুয়ারি ২০১৭
  • ৮২০ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

আলু রপ্তানির ওপর বিদ্যমান নগদ সহায়তা না কমানোর দাবি জানিয়েছে আলু রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ পটেটো এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিইএ)।সংগঠনটির পক্ষ থেকে আলু রপ্তানির ওপর সরকারের দেওয়া ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা অব্যাহত রাখতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে দাবি জানিয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে সরকার আলু রপ্তানিতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে। এর ফলে আলু রপ্তানিও বাড়তে থাকে। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নগদ সহায়তার পরিমাণ ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে। এর ফলে রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে রপ্তানিকারকরা দাবি করেছে। নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ফলে এরই মধ্যে অনেক রপ্তানিকারক এ খাত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, আলু রপ্তানিতে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়ার ফলে একদিকে যেমন কৃষকরা আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন, অন্যদিকে এ খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। দেশর রপ্তানি খাতে আলু রপ্তানি নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছিল। কিন্তু নগদ সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এ খাতটি আবার অবহেলিত হবে। একই সঙ্গে বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল হলে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। এ অবস্থায় সমাগত মওসুমে আলু রপ্তানির ওপর যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

বিপিইএ সভাপতি শেখ আব্দুল কাদের বলেন, বর্তমান মৌসুমে আলু সংগ্রহের কাল সমাগত প্রায়। কিন্তু নগদ সহায়তার হার চলতি বছর ১ জুলাই থেকে ২০ শতাংশ অক্ষুণ্ণ রাখার বিষয়ে এর আগে আমরা আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সে আবেদনের সাড়া এখনো পাওয়া যায়নি। ফলে দেশের আলু রপ্তানিকারকরা বৈদেশিক ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং আলু রপ্তানি চুক্তি করতে অগ্রসর হতে পারছেন না। কারণ নগদ সহায়তা হার কমিয়ে দেওয়ায় বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। বাংলাদেশের আলুর বাজার থেকে বিদেশি ক্রেতাদের চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আলুর বিদেশি ক্রেতারা অন্য দেশে চলে যাবে।

এ অবস্থায় আলু রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা অব্যাহত রাখার দাবি জনিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে তারা রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় আলু রপ্তানিতে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো দূর করারও আহ্বান জানিয়েছেন।

সর্বশেষ ২০১৪-২০১৫ সালে বাংলাদেশ ১ লাখ ১৬ হাজার টন আলু রপ্তানি করে। ২০১৩ সাল থেকে আলু রপ্তানির বড় বাজার ছিল রাশিয়া। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে দেশটিতে আলু রপ্তানি স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা ল্যাবরেটরির নিবন্ধনের অভাবে চলতি বছর থেকে রপ্তানির অন্য বাজার ইন্দোনেশিয়ায়ও রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আলু রপ্তানি আয় কমে এক কোটি মার্কিন ডলারে নেমে আসে। যেখানে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২২ লাখ ডলারেরও বেশি।

বিপিইএ সূত্রে জানা গেছে ,আলু রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানি উপযোগী জাত ও গবেষণার অভাবে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। রপ্তানি বাজারে এখন লম্বা উজ্জ্বল ও চকচকে আলুর চাহিদা বেশি। কিন্তু সেখানে ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ গোলাকার ও অনুজ্জ্বল জাতের গ্র্যানোলা আলু রপ্তানি করছে। দেশের চাষিরাও গ্র্যানোলা জাতের আলু চাষে আগ্রহ হারিয়েছেন। এ অবস্থায় রপ্তানি উপযোগী জাতের আলুর চাষ না বাড়ালে রপ্তানি বাজার হারাবে বাংলাদেশ।

আলু রপ্তানির ওপর নগদ সহায়তার না কমানোর বিষয়ে বিপিইএর দাবি প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, সরকার বেশকিছু রপ্তানি খাতের ওপর  দেওয়া নগদ সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে যে সব খাতে নগদ সহায়তা এরই মধ্যে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে প্রদেয় সহায়তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা হবে।তিনি বলেন, বিপিইএ অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের নগদ সহায়তার হার ২০ শতাংশ অব্যাহত রাখার বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ

আলু রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ২০ শতাংশ দাবি !

আপডেট সময় : ০৫:১৯:২২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১ জানুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

আলু রপ্তানির ওপর বিদ্যমান নগদ সহায়তা না কমানোর দাবি জানিয়েছে আলু রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ পটেটো এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিইএ)।সংগঠনটির পক্ষ থেকে আলু রপ্তানির ওপর সরকারের দেওয়া ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা অব্যাহত রাখতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে দাবি জানিয়েছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে সরকার আলু রপ্তানিতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে। এর ফলে আলু রপ্তানিও বাড়তে থাকে। কিন্তু গত ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নগদ সহায়তার পরিমাণ ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে। এর ফলে রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে রপ্তানিকারকরা দাবি করেছে। নগদ সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ফলে এরই মধ্যে অনেক রপ্তানিকারক এ খাত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, আলু রপ্তানিতে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়ার ফলে একদিকে যেমন কৃষকরা আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন, অন্যদিকে এ খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। দেশর রপ্তানি খাতে আলু রপ্তানি নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছিল। কিন্তু নগদ সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এ খাতটি আবার অবহেলিত হবে। একই সঙ্গে বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বাতিল হলে দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। এ অবস্থায় সমাগত মওসুমে আলু রপ্তানির ওপর যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে সে বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।

বিপিইএ সভাপতি শেখ আব্দুল কাদের বলেন, বর্তমান মৌসুমে আলু সংগ্রহের কাল সমাগত প্রায়। কিন্তু নগদ সহায়তার হার চলতি বছর ১ জুলাই থেকে ২০ শতাংশ অক্ষুণ্ণ রাখার বিষয়ে এর আগে আমরা আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সে আবেদনের সাড়া এখনো পাওয়া যায়নি। ফলে দেশের আলু রপ্তানিকারকরা বৈদেশিক ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং আলু রপ্তানি চুক্তি করতে অগ্রসর হতে পারছেন না। কারণ নগদ সহায়তা হার কমিয়ে দেওয়ায় বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না। বাংলাদেশের আলুর বাজার থেকে বিদেশি ক্রেতাদের চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে আলুর বিদেশি ক্রেতারা অন্য দেশে চলে যাবে।

এ অবস্থায় আলু রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা অব্যাহত রাখার দাবি জনিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে তারা রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় আলু রপ্তানিতে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো দূর করারও আহ্বান জানিয়েছেন।

সর্বশেষ ২০১৪-২০১৫ সালে বাংলাদেশ ১ লাখ ১৬ হাজার টন আলু রপ্তানি করে। ২০১৩ সাল থেকে আলু রপ্তানির বড় বাজার ছিল রাশিয়া। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে দেশটিতে আলু রপ্তানি স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তা ল্যাবরেটরির নিবন্ধনের অভাবে চলতি বছর থেকে রপ্তানির অন্য বাজার ইন্দোনেশিয়ায়ও রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আলু রপ্তানি আয় কমে এক কোটি মার্কিন ডলারে নেমে আসে। যেখানে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ২২ লাখ ডলারেরও বেশি।

বিপিইএ সূত্রে জানা গেছে ,আলু রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানি উপযোগী জাত ও গবেষণার অভাবে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। রপ্তানি বাজারে এখন লম্বা উজ্জ্বল ও চকচকে আলুর চাহিদা বেশি। কিন্তু সেখানে ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ গোলাকার ও অনুজ্জ্বল জাতের গ্র্যানোলা আলু রপ্তানি করছে। দেশের চাষিরাও গ্র্যানোলা জাতের আলু চাষে আগ্রহ হারিয়েছেন। এ অবস্থায় রপ্তানি উপযোগী জাতের আলুর চাষ না বাড়ালে রপ্তানি বাজার হারাবে বাংলাদেশ।

আলু রপ্তানির ওপর নগদ সহায়তার না কমানোর বিষয়ে বিপিইএর দাবি প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, সরকার বেশকিছু রপ্তানি খাতের ওপর  দেওয়া নগদ সহায়তা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে যে সব খাতে নগদ সহায়তা এরই মধ্যে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে প্রদেয় সহায়তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা হবে।তিনি বলেন, বিপিইএ অর্থমন্ত্রীর কাছে তাদের নগদ সহায়তার হার ২০ শতাংশ অব্যাহত রাখার বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থ সচিবের কাছে পাঠিয়েছেন।