রবিবার | ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি সোহেল রুশদী, সাধারণ সম্পাদক এম এ লতিফ নির্বাচিত Logo বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে ওসমান হাদির গ্রাফিতি  Logo পলাশবাড়ীতে দলিল লেখকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ Logo শীতার্ত মানুষের পাশে প্রশাসন: বেদে পল্লীতে কম্বল দিলেন চাঁদপুর ডিসি Logo মাদকের কুফল সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সমাবেশ সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে—এ বিষয়ে বাবা-মাকে আরও সচেতন হতে হবে-চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার Logo সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজে আগুনে একজনের মৃত্যু Logo দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক Logo শান্তর সেঞ্চুরিতে জয় দিয়ে বিপিএল শুরু রাজশাহীর Logo পলাশবাড়ীতে পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় মৃগী রোগে আক্রান্ত যুবকের মরদেহ উদ্ধার Logo মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে নিহত ৪ যাত্রী, আহত অর্ধশতাধিক

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে ওসমান হাদির গ্রাফিতি 

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৫:৩৭:৪২ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আজিজুর রহমান বেরোবি প্রতিবেদক :

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) দেয়ালে দেয়ালে ফুটে ওঠেছে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরিফ ওসমান হাদির গ্রাফিতি। ওসমান হাদির গ্রাফিতি অঙ্কনের মাধ্যমে তার হত্যাকারিদের বিচারের দাবি ও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তার সাহসী সংগ্রাম, প্রতিবাদী চেতনা ও আত্মত্যাগের গল্প।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীর,  আবু সাঈদ গেইট ও উপাচার্য ভবনের গেইটে গ্রাফিতিগুলো অঙ্কন করেছে।

দেয়ালে আকাঁ গ্রাফিতিগুলোতে তুলে ধরা হচ্ছে  ওসমান হাদির প্রতিবাদী স্লোগান ও মানুষের সাথে ইনসাফ করার বাণী। গ্রাফিতিগুলোতে শিক্ষার্থীরা হাদির ছবির সাথে লেখাগুলো ছিল, আমি আমার শত্রুর সাথে ইনডাফ করতে চাই । দোহাই শুধু আমার মস্তিষ্কটা খেয়ো না, তাহলে খুব শীঘ্রই দাস হয়ে যাবে তোমরাও।  যদি আমাদের কেউ গুলি করে মেরে ফেলে  খুনের বিচারটুকু করিয়েন।

বেরোবি শিক্ষার্থী মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, শহীদ ওসমান হাদির সংগ্রামকে বাঁচিয়ে রাখা এবং তাঁর হত্যার বিচারের দাবিতে আমাদের গ্রাফিতি কর্মসূচি। আমরা শহীদ ওসমান হাদির আদর্শকে ধারণ করি। ওসমান হাদির মতো শহীদরা যেন কালের আবর্তনে হারিয়ে না যান—এই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই গ্রাফিতি উদ্যোগ।

বেরোবি ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন,আমরা আজ যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ হাদীকে কেন্দ্র করে গ্রাফিতি ও ফেস্টুন কর্মসূচি পালন করছি, এর মূল লক্ষ্য শহীদ হাদীর আধিপত্যবিরোধী আদর্শকে দৃশ্যমান করা। হাদী আমাদের কাছে কেবল একটি নাম নয়—তিনি সাহস, ইনসাফ,  অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং দেশপ্রেমের প্রতীক।

বিশ্ববিদ্যালয় হলো চিন্তা, বিবেক ও মূল্যবোধ গঠনের জায়গা। সেখানে যদি অন্যায়কে প্রশ্ন করা, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরা না যায়, তাহলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে সেই মূল্যবোধগুলোই তুলে ধরতে চাই। আমরা দেশপ্রেমিক অকুতোভয় বীরসেনানীদের ধারন করতে চাই।শহীদ হাদী হত্যার বিচার চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড.  হারুন অর রশিদ বলেন,আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অগ্রসৈনিক শহিদ ওসমান হাদিকে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম দারুণভাবে ধারণ করেছে। তাঁর শাহাদতের পরে এ দেশের মানুষ যেভাবে হাদির জন্য প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা বিশ্ববিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশের জনমানুষের মতই উত্তরের বাতিঘর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও শহিদ হাদিকে অন্তর থেকে ধারণ করেন। রংপুরে চলছে মারাত্মক শৈত্যপ্রবাহ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এখানে। তারপরও শীত উপেক্ষা শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে শহিদ হাদিকে নিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী পালন করে চলেছেন। তারা অসাধারণ কিছু ফেস্টুন তৈরী করেছেন এবং বিভিন্ন স্থানে গ্রাফিতি আঁকছেন, যা শহিদ হাদিকে সাধারণ মানুষের মাঝে গুরুত্বপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগের কোন তুলনা হয় না। নামেমাত্র ধন্যবাদ দিলে আসলে তাদের ছোট করা হবে। এখানকার শিক্ষার্থীরা খুবই সচেতন এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াইয়ে তাদের ভুমিকাও ছিল খুবই উল্লেখযোগ্য। এরা শহিদ আবু সাঈদ এর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে জুলাইকে বুকে ধারণ করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি সোহেল রুশদী, সাধারণ সম্পাদক এম এ লতিফ নির্বাচিত

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে ওসমান হাদির গ্রাফিতি 

আপডেট সময় : ০৫:৩৭:৪২ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মোঃ আজিজুর রহমান বেরোবি প্রতিবেদক :

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) দেয়ালে দেয়ালে ফুটে ওঠেছে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নায়ক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরিফ ওসমান হাদির গ্রাফিতি। ওসমান হাদির গ্রাফিতি অঙ্কনের মাধ্যমে তার হত্যাকারিদের বিচারের দাবি ও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তার সাহসী সংগ্রাম, প্রতিবাদী চেতনা ও আত্মত্যাগের গল্প।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাচীর,  আবু সাঈদ গেইট ও উপাচার্য ভবনের গেইটে গ্রাফিতিগুলো অঙ্কন করেছে।

দেয়ালে আকাঁ গ্রাফিতিগুলোতে তুলে ধরা হচ্ছে  ওসমান হাদির প্রতিবাদী স্লোগান ও মানুষের সাথে ইনসাফ করার বাণী। গ্রাফিতিগুলোতে শিক্ষার্থীরা হাদির ছবির সাথে লেখাগুলো ছিল, আমি আমার শত্রুর সাথে ইনডাফ করতে চাই । দোহাই শুধু আমার মস্তিষ্কটা খেয়ো না, তাহলে খুব শীঘ্রই দাস হয়ে যাবে তোমরাও।  যদি আমাদের কেউ গুলি করে মেরে ফেলে  খুনের বিচারটুকু করিয়েন।

বেরোবি শিক্ষার্থী মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, শহীদ ওসমান হাদির সংগ্রামকে বাঁচিয়ে রাখা এবং তাঁর হত্যার বিচারের দাবিতে আমাদের গ্রাফিতি কর্মসূচি। আমরা শহীদ ওসমান হাদির আদর্শকে ধারণ করি। ওসমান হাদির মতো শহীদরা যেন কালের আবর্তনে হারিয়ে না যান—এই উদ্দেশ্যেই আমাদের এই গ্রাফিতি উদ্যোগ।

বেরোবি ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন,আমরা আজ যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ হাদীকে কেন্দ্র করে গ্রাফিতি ও ফেস্টুন কর্মসূচি পালন করছি, এর মূল লক্ষ্য শহীদ হাদীর আধিপত্যবিরোধী আদর্শকে দৃশ্যমান করা। হাদী আমাদের কাছে কেবল একটি নাম নয়—তিনি সাহস, ইনসাফ,  অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং দেশপ্রেমের প্রতীক।

বিশ্ববিদ্যালয় হলো চিন্তা, বিবেক ও মূল্যবোধ গঠনের জায়গা। সেখানে যদি অন্যায়কে প্রশ্ন করা, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরা না যায়, তাহলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে সেই মূল্যবোধগুলোই তুলে ধরতে চাই। আমরা দেশপ্রেমিক অকুতোভয় বীরসেনানীদের ধারন করতে চাই।শহীদ হাদী হত্যার বিচার চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড.  হারুন অর রশিদ বলেন,আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের অগ্রসৈনিক শহিদ ওসমান হাদিকে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম দারুণভাবে ধারণ করেছে। তাঁর শাহাদতের পরে এ দেশের মানুষ যেভাবে হাদির জন্য প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা বিশ্ববিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সারাদেশের জনমানুষের মতই উত্তরের বাতিঘর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও শহিদ হাদিকে অন্তর থেকে ধারণ করেন। রংপুরে চলছে মারাত্মক শৈত্যপ্রবাহ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এখানে। তারপরও শীত উপেক্ষা শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে শহিদ হাদিকে নিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী পালন করে চলেছেন। তারা অসাধারণ কিছু ফেস্টুন তৈরী করেছেন এবং বিভিন্ন স্থানে গ্রাফিতি আঁকছেন, যা শহিদ হাদিকে সাধারণ মানুষের মাঝে গুরুত্বপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগের কোন তুলনা হয় না। নামেমাত্র ধন্যবাদ দিলে আসলে তাদের ছোট করা হবে। এখানকার শিক্ষার্থীরা খুবই সচেতন এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াইয়ে তাদের ভুমিকাও ছিল খুবই উল্লেখযোগ্য। এরা শহিদ আবু সাঈদ এর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে জুলাইকে বুকে ধারণ করেন।