শিরোনাম :
Logo টেফনাফে অপার সম্ভাবনাময় সৌন্দর্য ও সীমান্ত বানিজ্য বন্ধের গভীর ষড়যন্ত্র Logo ছাত্রদলসহ অধিকাংশ সংগঠন ঢাবির হলে রাজনীতির পক্ষে, গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি বন্ধের প্রস্তাব Logo ‘কাজ শেষ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই’, গাজা দখল পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহু Logo রিজার্ভ বেড়ে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলারে Logo যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ায় বিদেশ থেকে ফোনে তালাক Logo জাকসু নির্বাচন সামনে রেখে ১৬ আগস্টের মধ্যে অছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশ Logo চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা স্ক্র্যাপের কনটেইনারে তেজস্ক্রিয় বস্তু শনাক্ত Logo দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল Logo কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (সেকেন্ড এ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫ জারি Logo অগ্নিকাণ্ডের পর পুনরায় খুলে দেওয়া হল স্পেনের ঐতিহাসিক মসজিদ ক্যাথেড্রাল

ছাত্রদলসহ অধিকাংশ সংগঠন ঢাবির হলে রাজনীতির পক্ষে, গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি বন্ধের প্রস্তাব

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:১৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাস রাজনীতির কাঠামো নির্ধারণে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। আজ রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে।

বৈঠকে ঢাবির অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন হলভিত্তিক রাজনীতি বজায় রাখার পক্ষে মত দেয়। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ছাড়া বাকি সব সংগঠন এ প্রস্তাব সমর্থন করে। এই আলোচনায় অংশ নেয় ১৬টি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন, যদিও আমন্ত্রিত ছিল ২৩টি।

এদিকে বৈঠকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপস্থিতির প্রতিবাদে পাঁচটি সংগঠন সভা ত্যাগ করে। এর মধ্যে তিনটি সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), মাহির শাহরিয়ার রেজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের ছাত্রসংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট শুরুতেই ওয়াকআউট করে। পরে বক্তব্য দেওয়ার পর বৈঠক ত্যাগ করে মেঘমল্লার বসুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের আরেকটি অংশ এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।

ঢাবি প্রশাসন জানায়, আলোচনার লক্ষ্য হল থেকে শুরু করে ক্যাম্পাস পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির রূপরেখা তৈরি করা এবং ডাকসু নির্বাচনে সব সংগঠনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, গেস্টরুম, গণরুম ও অপরাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি ঐতিহাসিক রূপরেখা প্রণয়ন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অতীতের গণরুম, জোরপূর্বক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নেওয়া ইত্যাদি কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা ও ট্রমা রয়েছে। তাই সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে রাজনীতির রূপ কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, কোনো অবস্থাতেই সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি না হোক।’

নিয়াজ আহমেদ খান আসন্ন ডাকসু নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান এবং কোনো দমনমূলক ব্যবস্থায় ফেরত না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, প্রথম বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল মতামত শোনা এবং এ সংলাপ চলমান থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অনলাইনে মতামত নেব।’

ছাত্রশিবির সাংবাদিদের জানায়, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে রাজনীতি হবে, না চাইলে হবে না।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ; সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হানউদ্দিন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের সভাপতি গৌতম শীল ও কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে উপাচার্যের ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ’ বক্তব্যের নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘বৈঠকের শুরুতে আমরা শিবিরের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই। জবাবে উপাচার্য সব ছাত্রসংগঠনের উপস্থিতিতে শিবিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে চলার কথা বলেন, যা ঢাবির মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে কলঙ্কিত করেছে।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘ঢাবিতে ছাত্ররাজনীতির রূপরেখা কমিশনের মাধ্যমে ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের অগণতান্ত্রিক প্রচেষ্টারও নিন্দা জানাই। মুক্তিযুদ্ধকে ধারণকারী সংগঠন হিসেবে আমরা যুদ্ধাপরাধী শিবিরের সঙ্গে কোনো আপস করব না।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

টেফনাফে অপার সম্ভাবনাময় সৌন্দর্য ও সীমান্ত বানিজ্য বন্ধের গভীর ষড়যন্ত্র

ছাত্রদলসহ অধিকাংশ সংগঠন ঢাবির হলে রাজনীতির পক্ষে, গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি বন্ধের প্রস্তাব

আপডেট সময় : ১১:৩৯:১৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাস রাজনীতির কাঠামো নির্ধারণে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। আজ রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে।

বৈঠকে ঢাবির অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন হলভিত্তিক রাজনীতি বজায় রাখার পক্ষে মত দেয়। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ছাড়া বাকি সব সংগঠন এ প্রস্তাব সমর্থন করে। এই আলোচনায় অংশ নেয় ১৬টি রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন, যদিও আমন্ত্রিত ছিল ২৩টি।

এদিকে বৈঠকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের উপস্থিতির প্রতিবাদে পাঁচটি সংগঠন সভা ত্যাগ করে। এর মধ্যে তিনটি সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), মাহির শাহরিয়ার রেজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের ছাত্রসংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট শুরুতেই ওয়াকআউট করে। পরে বক্তব্য দেওয়ার পর বৈঠক ত্যাগ করে মেঘমল্লার বসুর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের আরেকটি অংশ এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী।

ঢাবি প্রশাসন জানায়, আলোচনার লক্ষ্য হল থেকে শুরু করে ক্যাম্পাস পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির রূপরেখা তৈরি করা এবং ডাকসু নির্বাচনে সব সংগঠনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, গেস্টরুম, গণরুম ও অপরাজনীতির সংস্কৃতি বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি ঐতিহাসিক রূপরেখা প্রণয়ন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘অতীতের গণরুম, জোরপূর্বক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে নেওয়া ইত্যাদি কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা ও ট্রমা রয়েছে। তাই সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠকে রাজনীতির রূপ কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, কোনো অবস্থাতেই সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি না হোক।’

নিয়াজ আহমেদ খান আসন্ন ডাকসু নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান এবং কোনো দমনমূলক ব্যবস্থায় ফেরত না যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, প্রথম বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল মতামত শোনা এবং এ সংলাপ চলমান থাকবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও অনলাইনে মতামত নেব।’

ছাত্রশিবির সাংবাদিদের জানায়, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে রাজনীতি হবে, না চাইলে হবে না।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ; সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হানউদ্দিন এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের সভাপতি গৌতম শীল ও কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান এক যৌথ বিবৃতিতে উপাচার্যের ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ’ বক্তব্যের নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘বৈঠকের শুরুতে আমরা শিবিরের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই। জবাবে উপাচার্য সব ছাত্রসংগঠনের উপস্থিতিতে শিবিরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দেন এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে চলার কথা বলেন, যা ঢাবির মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে কলঙ্কিত করেছে।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘ঢাবিতে ছাত্ররাজনীতির রূপরেখা কমিশনের মাধ্যমে ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের অগণতান্ত্রিক প্রচেষ্টারও নিন্দা জানাই। মুক্তিযুদ্ধকে ধারণকারী সংগঠন হিসেবে আমরা যুদ্ধাপরাধী শিবিরের সঙ্গে কোনো আপস করব না।’