বোরখা পড়া শিক্ষার্থীকে কালো কাকের সাথে তুলনা করেন রাবি শিক্ষক রফিকুল

ক্লাস চলাকালীন সময়ে কালো বোরখা পরা নারী শিক্ষার্থীদেরকে কালো কাকের সাথে তুলনা করে অপমান অপদস্ত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে গত বুধবার (০৭ মে) বিকেলে বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের ‘বি’ গ্রুপের শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিভাগের শিক্ষক এটিএম রফিকুল ইসলাম গত বুধবার ১০টার সময় ২০৪ নং কক্ষে অশোভন আচরণের স্বীকার হই। এছাড়াও আমাদের সামনে বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষক স্যারের সাথেও অশোভন আচরণ করেন।

এছাড়াও অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ৩য় ও ৪র্থ বর্ষে থাকাকালীন বিভিন্ন সময় তাদের পরিবার, আর্থিক অবস্থা, পোশাক পরিচ্ছদ, শারীরিক গঠন ইত্যাদি বিষয়ে অশালীন মন্তব্যের শিকার হতেন। যা অনেক সময় শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে কষ্ট দিতেন।

‘পোশাক দেখলেই বুঝা যায় কোন পরিবার থেকে এসেছো, বাবার কর্ম নিয়ে কটূক্তি করা, যাদের বাবা বিদেশে থাকে তারা তো মানুষ হয় না, শিক্ষার্থীদের টোকাই বলে সম্মোধন করা, দক্ষিণ বঙ্গের মানুষকে (বি-ক্লাস) বলে কটূক্তি করা, শিক্ষার্থীদের অশোভন ভাষায় তিরস্কার করা, শিক্ষার্থীদের রোল নাম্বার এবং নাম টার্গেট করে রাখা সহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানান শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, রফিকুল স্যারের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করতেন না তিনি। আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করতে এবং পছন্দের শিক্ষার্থীর খাতায় নাম্বার বেশি দিতেন। গত দুইদিন আগেও আমাদের সাথে ঝামেলা করেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এটিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো ঝামেলা হয়নি। আমার বিভাগের সিনিয়র এক শিক্ষকের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে এটাকে কেন্দ্র করেই শিক্ষার্থীরা সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সবাইকে নিয়ে বসে সমস্যটা সমাধানও করেছেন অ্যাকাডেমিক কমিটি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি ড. মুনসি মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষকের সাথে বেয়াদবি করেন তিনি।অভিযোগে বিষয়টিকে আমরা আমলে নিয়ে অ্যাকাডেমিক মিটিং ডাকি। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চান এবং বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল স্বীকার করেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেন। ভবিষ্যতে এমন কর্মকান্ডে জড়ালে আমরা অ্যাকাডেমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবো।

ট্যাগস :

বোরখা পড়া শিক্ষার্থীকে কালো কাকের সাথে তুলনা করেন রাবি শিক্ষক রফিকুল

আপডেট সময় : ১২:০৬:৫০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

ক্লাস চলাকালীন সময়ে কালো বোরখা পরা নারী শিক্ষার্থীদেরকে কালো কাকের সাথে তুলনা করে অপমান অপদস্ত করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম।

এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে গত বুধবার (০৭ মে) বিকেলে বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মাস্টার্সের ‘বি’ গ্রুপের শিক্ষার্থীরা।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিভাগের শিক্ষক এটিএম রফিকুল ইসলাম গত বুধবার ১০টার সময় ২০৪ নং কক্ষে অশোভন আচরণের স্বীকার হই। এছাড়াও আমাদের সামনে বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষক স্যারের সাথেও অশোভন আচরণ করেন।

এছাড়াও অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ৩য় ও ৪র্থ বর্ষে থাকাকালীন বিভিন্ন সময় তাদের পরিবার, আর্থিক অবস্থা, পোশাক পরিচ্ছদ, শারীরিক গঠন ইত্যাদি বিষয়ে অশালীন মন্তব্যের শিকার হতেন। যা অনেক সময় শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে কষ্ট দিতেন।

‘পোশাক দেখলেই বুঝা যায় কোন পরিবার থেকে এসেছো, বাবার কর্ম নিয়ে কটূক্তি করা, যাদের বাবা বিদেশে থাকে তারা তো মানুষ হয় না, শিক্ষার্থীদের টোকাই বলে সম্মোধন করা, দক্ষিণ বঙ্গের মানুষকে (বি-ক্লাস) বলে কটূক্তি করা, শিক্ষার্থীদের অশোভন ভাষায় তিরস্কার করা, শিক্ষার্থীদের রোল নাম্বার এবং নাম টার্গেট করে রাখা সহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানান শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, রফিকুল স্যারের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করতেন না তিনি। আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করতে এবং পছন্দের শিক্ষার্থীর খাতায় নাম্বার বেশি দিতেন। গত দুইদিন আগেও আমাদের সাথে ঝামেলা করেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এটিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো ঝামেলা হয়নি। আমার বিভাগের সিনিয়র এক শিক্ষকের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে এটাকে কেন্দ্র করেই শিক্ষার্থীরা সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সবাইকে নিয়ে বসে সমস্যটা সমাধানও করেছেন অ্যাকাডেমিক কমিটি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি ড. মুনসি মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষকের সাথে বেয়াদবি করেন তিনি।অভিযোগে বিষয়টিকে আমরা আমলে নিয়ে অ্যাকাডেমিক মিটিং ডাকি। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চান এবং বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল স্বীকার করেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেন। ভবিষ্যতে এমন কর্মকান্ডে জড়ালে আমরা অ্যাকাডেমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবো।