নিউজ ডেস্ক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) একযুগেও সমাবর্তন হয়নি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তন প্রত্যাশী গ্র্যাজুয়েটের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদেরকে সমাবর্তন বা কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সনদ প্রদান করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ নিয়ে প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন শিগগিরই সমাবর্তন দিতে হবে।
২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নোটিশে শিক্ষার্থীরা মূল সনদ নিতে পারবেন বলে জানানো হয়। কর্তৃপক্ষের এ ধরনের ঘোষণায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে প্রতিষ্ঠিত এমন বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়েও সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে রাজধানীতে অবস্থিত হয়েও জবিতে সমাবর্তন হচ্ছে না। এ জন্য প্রশাসনের সদিচ্ছাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে এক আইন পাসের মাধ্যমে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। একই বছর থেকে ক্যাম্পাসে অধ্যায়নরত কলেজ আমলের (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হওয়া) ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৬৬ জন এবং ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের ১৫ হাজার ৭১০ জন ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সনদ পাবেন। অর্থাৎ কলেজ আমলের ১৯ হাজার ২৭১ জন ছাত্র-ছাত্রী এই সনদ পাবেন।
অন্যদিকে ২০১২ সালের ১৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে বলা হয়, কলেজ আমলের দুটি ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ হাজার ৬৬৫ জন শিক্ষার্থী মাস্টার্স শেষ করেছেন। এরপর আরো ৫টি শিক্ষাবর্ষ শেষ হয়েছে। এ হিসেবে বর্তমানে সমাবর্তন প্রত্যাশী গ্র্যাজুয়েট সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়েছে। সাধারণত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের মাধ্যমে সনদ বিতরণের ধারা প্রচলিত থাকলেও এদিকে মনোযোগী নয় জবি কর্তৃপক্ষ।
সমাবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর পর্যন্ত করতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বড় চাওয়া, আনুষ্ঠানিকভাবে একটা কালো গাউন আর সনদ। যে যার মতো সনদ নিয়ে চলে যাবেন, এটা কাম্য নয়।
২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম রহমান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ফসল আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সনদ পাচ্ছি। কিন্তু এখন সমাবর্তন ছাড়াই সনদ দিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। এটা কোনো শিক্ষার্থী আশা করেন না।
ছাত্রলীগ জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘বারো বছরেও সমাবর্তন না হওয়ায় এটা প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা।অবিলম্বে সমাবর্তনের দাবি জানান তিনি।
সমাবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘আগামী দুই-এক বছরের মধ্যে সমাবর্তন আয়োজনের কোনো ইচ্ছে নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।