সোমবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির Logo নির্বাচনে আস্থার পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথবাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ Logo রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে Logo কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন Logo মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন চাঁদপুর-৩ আসনে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক আহসান উল্লাহ Logo আগামী ২৭ ডিসেম্বর শনিবার চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির শীতকালীন গিটারসন্ধ্যা Logo তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ও শুভেচ্ছা মিছিল Logo সুদানের আবেই শান্তিরক্ষা মিশনের ড্রোন হামলায় শহীদ সেনা সদস্যের রাষ্টীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন পলাশবাড়ীতে Logo ৪৭৫ কোটি টাকা ‘জলে’: খনন শেষ হতেই ভরাট সাতক্ষীরার নদী-খাল ​জলাবদ্ধতা কাটেনি, উল্টো সেচ সংকটে কৃষক ও ঘেরমালিকরা ​ Logo খুবিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্টার্স ও পিএইচডি ভর্তি শুরু

সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হাইকোর্টের আদেশ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০২:৪১:৫২ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪
  • ৭৮১ বার পড়া হয়েছে

নীলকন্ঠ প্রতিবেদকঃ

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী সময়ে সময়ে দাখিল সংক্রান্ত সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত বিধিমালা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন তিন মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। রিট মামলার শুনানিতে সরকারি অনেক কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়টি উঠে আসে। এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার দেশে সুশাসন ও উন্নয়নের অন্তরায়। যে কোনো মূল্যে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের এই লাগাম টেনে ধরতে হবে। যদি এটা করা সম্ভব না হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে। আদালত বলেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ না হওয়ায় সরকারি অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এটা কারো কাম্য নয়। হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে সরকার একাই সবকিছু করবে এমনটা ভাবাও ঠিক নয়। জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে কাজ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধের বিষয়টিকে আন্দোলনে পরিণত করতে হবে। শুধু বক্তৃতা-বিবৃতি দিলেই হবে না সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস। রিটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল ও তা প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তার এবং পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। সময়ে সময়ে ওই সম্পদ বিবরণীর হিসাব পুনরায় দাখিলেরও নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির হিসাব জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা প্রকাশের কোনো বিধান নেই। রিটের শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ, এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান ও প্রথম সচিব ফয়সাল ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা পদে থেকে লাগামহীন দুর্নীতি করে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন গাড়িচালক কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। এসব দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য এই দেশ সৃষ্টি হয়নি।
তিনি বলেন, একটি ভবন করতে গেলেও সরকারি সংস্থার অনুমতি ছাড়া করা সম্ভব নয়। অথচ অনেক সরকারি কর্মকর্তা লাগামহীন দুর্নীতি করে রিসোর্ট ও শত শত একর জমির মালিক বনে গেছেন। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হয় জনগণের দেওয়া করের ৪৩ ভাগ অর্থ থেকে। এজন্য তাদের সম্পদ বিবরণী সম্পর্কে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। তাই সম্পদ বিবরণী ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা উচিত। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। এজন্য যেসব আইন রয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে এই আইনের প্রয়োগ করতে গিয়ে যেন কেউ অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সেটাও দেখা দরকার। দুদক কৌঁসুলি এ কে এম ফজলুল হক খান বলেন, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় যাদের বাইরে রাখা হয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে এটার সংশোধন জরুরি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আইন বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির

সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হাইকোর্টের আদেশ

আপডেট সময় : ০২:৪১:৫২ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৩ জুলাই ২০২৪

নীলকন্ঠ প্রতিবেদকঃ

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী সময়ে সময়ে দাখিল সংক্রান্ত সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত বিধিমালা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন তিন মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। রিট মামলার শুনানিতে সরকারি অনেক কর্মকর্তার দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়টি উঠে আসে। এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার দেশে সুশাসন ও উন্নয়নের অন্তরায়। যে কোনো মূল্যে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের এই লাগাম টেনে ধরতে হবে। যদি এটা করা সম্ভব না হয় তাহলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে। আদালত বলেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ না হওয়ায় সরকারি অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এটা কারো কাম্য নয়। হাইকোর্ট বলেন, দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে সরকার একাই সবকিছু করবে এমনটা ভাবাও ঠিক নয়। জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বন্ধে কাজ করতে হবে। দুর্নীতি বন্ধের বিষয়টিকে আন্দোলনে পরিণত করতে হবে। শুধু বক্তৃতা-বিবৃতি দিলেই হবে না সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস। রিটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল ও তা প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তার এবং পরিবারের সদস্যদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। সময়ে সময়ে ওই সম্পদ বিবরণীর হিসাব পুনরায় দাখিলেরও নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তির হিসাব জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা প্রকাশের কোনো বিধান নেই। রিটের শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ, এনবিআর সদস্য মতিউর রহমান ও প্রথম সচিব ফয়সাল ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা পদে থেকে লাগামহীন দুর্নীতি করে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন গাড়িচালক কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। এসব দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য এই দেশ সৃষ্টি হয়নি।
তিনি বলেন, একটি ভবন করতে গেলেও সরকারি সংস্থার অনুমতি ছাড়া করা সম্ভব নয়। অথচ অনেক সরকারি কর্মকর্তা লাগামহীন দুর্নীতি করে রিসোর্ট ও শত শত একর জমির মালিক বনে গেছেন। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হয় জনগণের দেওয়া করের ৪৩ ভাগ অর্থ থেকে। এজন্য তাদের সম্পদ বিবরণী সম্পর্কে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। তাই সম্পদ বিবরণী ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা উচিত। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। এজন্য যেসব আইন রয়েছে সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে এই আইনের প্রয়োগ করতে গিয়ে যেন কেউ অহেতুক হয়রানির শিকার না হন সেটাও দেখা দরকার। দুদক কৌঁসুলি এ কে এম ফজলুল হক খান বলেন, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় যাদের বাইরে রাখা হয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে এটার সংশোধন জরুরি। শুনানি শেষে হাইকোর্ট আইন বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়।