শনিবার | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ Logo মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা Logo হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বার্মিজ লুঙ্গিসহ ২২ জন পাচারকারী আটক Logo কচুয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া Logo জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা Logo জাবিতে ইলিয়াস ও পিনাকীর কুশপুত্তলিকা দাহন Logo পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ Logo সাতক্ষীরা-কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদ ও ঔষধসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ

অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য’কে খুন করে ৩ কিশোর

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ১২:০৬:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ৭৮৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের হাতে হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার,টাকার জন্যই

নিউজ ডেস্ক:সমকামিতার মাধ্যমে এক কিশোরের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নুরুজ্জামানের। দীর্ঘদিন ধরে চলে ফোনালাপ ও সমকামিতা। কিশোরের মোবাইল খরচ, পকেট মানিও দিয়ে আসছিল নুরুজ্জামান। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা শুনেই হত্যার পরিকল্পনা করে ওই কিশোর। ৩ সহযোগিকে নিয়ে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নুরুজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনার ১ বছর পর গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ৩ কিশোরকে। মোবাইল ট্রাকিংয়ের ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেছে ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো:হাসানুজ্জামান। গ্রেফতারকৃতরা হলো-শহরের হামদহ দাসপাড়ার শাহাবুদ্দীনের ছেলে আরাফাত (১৭), শহরের পাওয়ার হাউস পাড়ার মিন্টুর ছেলে নিশান (১৭) ও সদর উপজেলার রতনহাট গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে মিরাজ (১৬)। এ ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে ডিবি পুলিশ। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, প্রতিবেশী কিশোর আরাফাতের সাথে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নুরুজ্জামানের স্থানীয় চায়ের দোকান, খাবার হোটেলে দেখা-কথা হওয়ার কারণে সম্পর্ক হয়। ধীরে ধীরে তা সমকামীতায় রূপ নেয়। সমকামীতার কারণে প্রায়ই নুরুজ্জামানের বাড়িয়ে যেত আরাফাত। দীর্ঘদিন ধরে আরাফাতকে মোবাইল খচর, পকেট মানিও দিত সে। নুরুজ্জামানের স্ত্রী রাশিদা বেগম অসুস্থ হওয়ায় তিনি প্রায়ই হাসপাতালে থাকতেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিদা বেগম অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তোলার বিষয়টি আরাফাতকে বলে নুরুজ্জামান। ঘনিষ্টতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘটনার দিন রাতে আরাফাত ও তার সমবয়সীদের বাসায় ডাকে নুরুজ্জামান। এক বন্ধুকে বাসার নিয়ে পাহাড়ায় রেখেন আরাফাত তার ২ বন্ধুকে নিয়ে রাত ৮ টার দিকে বাসায় যায়। সেখানে সমকামিতায় লিপ্ত হয়। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নুরুজ্জামানকে শ্বাসরোধ, মাথায় ও গোপনাঙ্গে আঘাত করে ঘরে থাকা টিভি, মোবাইল ফোন, কাপড়, প্রসাধনী সামগ্রী একটি ট্রলি ব্যাগে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাশিদা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। ক্লু-লেস হত্যা হওয়ায় তদন্তে বেগ পেতে হয় ওই পুলিশ কর্মকর্তার। শুরুতে লুট হওয়া মোবাইল বন্ধ থাকায় ব্যবহারকারীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে এলাকায় খোঁজ খবর শুরু করেন পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আরাফাতের সাথে ঘনিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হলে তাকে প্রথম সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। আরাফাতের সাথে অন্যদের বন্ধুত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাড়ানো হয় সন্দেহের তালিকার সন্ধিগ্ধদের সংখ্যা। পরে মোবাইল ফোনের কললিস্টের সুত্র ব্যবহার করে আরাফাতের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করে আরাফাতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যা বিষয়টি আরাফাত স্বীকার করে। আরাফাতের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সন্দিগ্ধ আরও ৩ জন নিশ্চিত হলে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা নিশান ও মিরাজকে। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আরও একজন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আরাফাত গত ১৩ সেপ্টেম্বর এবং নিশান ও মিরাজ ১৪ সেপ্টেম্বর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ

অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য’কে খুন করে ৩ কিশোর

আপডেট সময় : ১২:০৬:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশের হাতে হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার,টাকার জন্যই

নিউজ ডেস্ক:সমকামিতার মাধ্যমে এক কিশোরের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নুরুজ্জামানের। দীর্ঘদিন ধরে চলে ফোনালাপ ও সমকামিতা। কিশোরের মোবাইল খরচ, পকেট মানিও দিয়ে আসছিল নুরুজ্জামান। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা শুনেই হত্যার পরিকল্পনা করে ওই কিশোর। ৩ সহযোগিকে নিয়ে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর নুরুজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনার ১ বছর পর গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ৩ কিশোরকে। মোবাইল ট্রাকিংয়ের ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেছে ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো:হাসানুজ্জামান। গ্রেফতারকৃতরা হলো-শহরের হামদহ দাসপাড়ার শাহাবুদ্দীনের ছেলে আরাফাত (১৭), শহরের পাওয়ার হাউস পাড়ার মিন্টুর ছেলে নিশান (১৭) ও সদর উপজেলার রতনহাট গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে মিরাজ (১৬)। এ ঘটনায় জড়িত আরও একজনকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে ডিবি পুলিশ। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, প্রতিবেশী কিশোর আরাফাতের সাথে অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নুরুজ্জামানের স্থানীয় চায়ের দোকান, খাবার হোটেলে দেখা-কথা হওয়ার কারণে সম্পর্ক হয়। ধীরে ধীরে তা সমকামীতায় রূপ নেয়। সমকামীতার কারণে প্রায়ই নুরুজ্জামানের বাড়িয়ে যেত আরাফাত। দীর্ঘদিন ধরে আরাফাতকে মোবাইল খচর, পকেট মানিও দিত সে। নুরুজ্জামানের স্ত্রী রাশিদা বেগম অসুস্থ হওয়ায় তিনি প্রায়ই হাসপাতালে থাকতেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিদা বেগম অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তোলার বিষয়টি আরাফাতকে বলে নুরুজ্জামান। ঘনিষ্টতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঘটনার দিন রাতে আরাফাত ও তার সমবয়সীদের বাসায় ডাকে নুরুজ্জামান। এক বন্ধুকে বাসার নিয়ে পাহাড়ায় রেখেন আরাফাত তার ২ বন্ধুকে নিয়ে রাত ৮ টার দিকে বাসায় যায়। সেখানে সমকামিতায় লিপ্ত হয়। রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নুরুজ্জামানকে শ্বাসরোধ, মাথায় ও গোপনাঙ্গে আঘাত করে ঘরে থাকা টিভি, মোবাইল ফোন, কাপড়, প্রসাধনী সামগ্রী একটি ট্রলি ব্যাগে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রাশিদা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ সুপার মো: হাসানুজ্জামান। মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। ক্লু-লেস হত্যা হওয়ায় তদন্তে বেগ পেতে হয় ওই পুলিশ কর্মকর্তার। শুরুতে লুট হওয়া মোবাইল বন্ধ থাকায় ব্যবহারকারীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে এলাকায় খোঁজ খবর শুরু করেন পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আরাফাতের সাথে ঘনিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত হলে তাকে প্রথম সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। আরাফাতের সাথে অন্যদের বন্ধুত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাড়ানো হয় সন্দেহের তালিকার সন্ধিগ্ধদের সংখ্যা। পরে মোবাইল ফোনের কললিস্টের সুত্র ব্যবহার করে আরাফাতের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করে আরাফাতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যা বিষয়টি আরাফাত স্বীকার করে। আরাফাতের স্বীকারোক্তি মোতাবেক সন্দিগ্ধ আরও ৩ জন নিশ্চিত হলে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা নিশান ও মিরাজকে। কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আরও একজন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আরাফাত গত ১৩ সেপ্টেম্বর এবং নিশান ও মিরাজ ১৪ সেপ্টেম্বর হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে।