স্বর্ণের বার-গহনাসহ নারী আটক : বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল
নিউজ ডেস্ক:জীবননগরে ৫৮ বিজিবির চোরাচালান বিরোধী অভিযানে স্বর্ণের বার ও গহনাসহ এক নারীকে আটক করেছে বিজিবি। এসময় তার নিকট থেকে ১ কেজি ৭ গ্রাম স্বর্ণ আটক করা হয়। আটক স্বর্ণের বাজার মূল্য প্রায় ৬৬ লাখ ৩৯ হাজার ৬২৩ টাকা। গতকতাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর পীচমোড় এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটক মাবিয়া খাতুন জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের স্ত্রী।
৫৮ বিজিবির পরিচালক তাজুল ইসলাম জানান, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে এমন খবর পেয়ে বিজিবির একটি টহল দল পীচমোড় এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় গয়েশপুর থেকে যাত্রীবাহী একটি পাখিভ্যান জীবননগর অভিমুখে যাচ্ছিল। পীচমোড় এলাকায় ভ্যানটি পৌছালে বিজিবি সদস্যরা গতিরোধ করে তল্লাশি করে। পরে মাবিয়া খাতুন নামের এক নারীকে আটক করে বিজিবির ৫৮ ক্যাম্পে নেওয়া হয় এবং তার কাছ থেকে ১০টি স্বর্ণের বার ও গহনা উদ্ধার করে। যার ওজন ১৪৯ ভরি। বাজার মূল্য প্রায় ৬৬ লাখ ৩৯হাজার ৬২৩ টাকা। তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর সাথে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান চলছে।
এদিকে, বিজিবির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মাবিয়া জানায়, সে ৫শ’ টাকা মজুরিতে এ স্বর্ণ বহন করছিলো। এ স্বর্ণ জীবননগর পৌর শহরের আঁশতলাপাড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মিলন মিয়ার হাতে তুলে দিতেন। এরপর হাত বদল হয়ে চলে যেত ভারতে। এ স্বর্ণের প্রকৃত মালিক সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও গয়েশপুর গ্রামের ই¯্রাফিল হোসেন ওরফে পকু মেম্বার বলে তিনি বিজিবির কাছে স্বীকার করেন। এর আগেও তিনি একই মালিকের সোনা তিন দফায় পাচার করেছে। ৫৮ বিজিবি’র পরিচালক লে. কর্ণেল তাজুল ইসলাম বিকেলে ব্যাটালিয়নের এক প্রেস ব্রিফ্রিং এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, আটককৃত স্বর্ণের মালিক গয়েশপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার দুলো মন্ডলের ছেলে ও সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইসরাফিল হক পুকু মেম্বার এবং একই গ্রামের মস্ত মন্ডলের ছেলে বড় মিয়া। গোপন সূত্রে আরো জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে বিজিবির হাতে আটক হওয়া হুন্ডির টাকার মালিকও পুকু মেম্বার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ‘গয়েশপুর এলাকায় যে সমস্ত স্বর্ণ বা মাদক পাচার হয়, এর বেশির ভাগ কাজের সাথেই জড়িত পুকু মেম্বার, আব্দুল মেম্বার এবং জীবননগর পৌর শহরের বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।’
এদিকে, স্বর্ণ, মাদক ও চোরাচালান ব্যবসার সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতাকর্মী জড়িত থাকায় সীমান্ত এলাকাটি মাদক ও চোরাচালানের মেইন ঘাটিতে পরিণত হয়েছে। তবে এই নারী আটকের পর একে একে বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল।