বৃহস্পতিবার | ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সাতক্ষীরা–কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযান পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo সদরপুরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস পালিত Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর

আপনি কি জানেন জোঁক থেরাপি কি ?

  • আপডেট সময় : ০৩:৪৯:২৭ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৭৭৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সময় যত এগচ্ছে, তত ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে আমাদের চারপাশ। বদলাচ্ছে রোগের চরিত্রও। তাই তো চিকিৎসাক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে প্রতিনিয়ত। এই যেমন জোঁক থেরাপির কথাই ধরুণ! কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে প্রাণীটিকে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে জেনে এসেছে সমগ্র মানবসমাজ, সেই জোঁককে কাজে লাগিয়ে আজকাল সারিয়ে ফেলা সম্ভব হচ্ছে একের পর এক জোটিল রোগ! এই থেরাপির নাম দেওয়া হয়েছে জোঁক থেরাপি।

প্রসঙ্গত, এই ২১ শতকে লিচ থেরাপি এতটা জনপ্রিতা পেলেও প্রাচীনকালেও কিন্তু একাধিক রোগের চিকিৎসায় জোঁককে কাজে লাগানো হত। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানতে পারা যায় ১৫০০ বিসি-এর পর থেকে সারা বিশ্বেই জোঁক থেরাপির চল ছিল। সে সময় এত মাত্রায় জোঁকের ব্যবহার হত যে এক সময় গিয়ে এই প্রাণীটির সংখ্যা মারাত্মক কমে আসে। এই কারণেই কিনা জানা নেই, তবে একটা সময়ের পর থেকে ধীরে ধীরে লিচ থেরাপির জনপ্রিয়তা করতে শুরু করে। ফের এই অভিনব পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু হয় ২০০৪ সালের পর থেকে। এই সময় একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে জোঁক বাস্তবিকই নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন…

১. হার্টের রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে:
২০১১ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা যায় ঠিক পদ্ধতিতে জোঁককে ব্যবহার করলে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। আসলে জোঁকের স্যালাইভা বা থুতু এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, অলটারনেটিভ মেডিসিন রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা পত্রে আরও দাবি করা হয়েছিল যে ব্লাড ক্লট এবং পা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা কমাতেও এই অভিনব পদ্ধতিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করে:
২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে মহামারির আকার নিতে চলা এই মারণ রোগের চিকিৎসায় দারুন কাজে আসে জোঁক। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে চিরাচরিত ওষুধের পাশাপাশি ক্যান্সার রোগীর শরীরে যদি জোঁকের স্যালাইভা প্রবেশ করানো যায়, তাহলে ব্রেস্ট, মেলানোমা, লাং এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের প্রকোপ অনেকাংশেই কমানা সম্ভব হয়। পসঙ্গত, জোঁকের থুতুতে থাকা গিলেন্টেন নামক একটি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী ২০ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে প্রায় ৩৬৬ মিলিয়ান মানুষ এই মারণ রোগের শিকার হবে। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে জোঁক থেরাপির প্রয়োজন যে বেড়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে রক্তে শর্করারা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের কারণে হওয়া নানাবিধ জটিলতা, যেমন করনারি অ্যাথেরোস্কলেরোসিস, হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং অক্সিটেডিভ স্ট্রেস কমাতে জোঁক থেরাপি দারুন কাজে আসে।

৪. ছোঁয়াচে রোগের প্রকোপ কমায়:
কেমোথেরাপি নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে জোঁকের শরীরে থাকা ডেস্টাবিলেস নামক এক ধরনের প্রোটিন আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর সব ধরনের জীবাণুকে মেরে ফেলে রোগের প্রকোপ কমাতে একেবারেই সময় নেয় না। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে জোঁকের শরীরে থাকা নিউরোসিগনালিং এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড যে কোনও ধরেনর সংক্রমণকে কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা করে:
জয়েন্টে পেইনের কারণে কি একেবারে কাবু হয়ে পরেছেন? তাহলে একবার জোঁক থেরাপি করে দেখুন না! এমনটা করলে উপকার যে পাবেন, তা বলাই যায়। আসলে ব্যথা জায়গায় কিছু সময় জোঁককে রাখলে সেখানে রক্তের সরবরাহে উন্নতি ঘটে। ফলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

৬. কানের যন্ত্রণা কমায়:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে ক্রণিক কানের যন্ত্রণা কমাতে জোঁকের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে একটা জোঁক কানের পিছনে, আর একটি কানের সামনে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। এমনভাবে ৩-৪ দিন করলেই দেখবেন যন্ত্রণা একেবারে গায়েব হয়ে যাবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সাতক্ষীরা–কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযান পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল জব্দ

আপনি কি জানেন জোঁক থেরাপি কি ?

আপডেট সময় : ০৩:৪৯:২৭ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সময় যত এগচ্ছে, তত ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে আমাদের চারপাশ। বদলাচ্ছে রোগের চরিত্রও। তাই তো চিকিৎসাক্ষেত্রেও পরিবর্তন আসছে প্রতিনিয়ত। এই যেমন জোঁক থেরাপির কথাই ধরুণ! কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে প্রাণীটিকে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে জেনে এসেছে সমগ্র মানবসমাজ, সেই জোঁককে কাজে লাগিয়ে আজকাল সারিয়ে ফেলা সম্ভব হচ্ছে একের পর এক জোটিল রোগ! এই থেরাপির নাম দেওয়া হয়েছে জোঁক থেরাপি।

প্রসঙ্গত, এই ২১ শতকে লিচ থেরাপি এতটা জনপ্রিতা পেলেও প্রাচীনকালেও কিন্তু একাধিক রোগের চিকিৎসায় জোঁককে কাজে লাগানো হত। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানতে পারা যায় ১৫০০ বিসি-এর পর থেকে সারা বিশ্বেই জোঁক থেরাপির চল ছিল। সে সময় এত মাত্রায় জোঁকের ব্যবহার হত যে এক সময় গিয়ে এই প্রাণীটির সংখ্যা মারাত্মক কমে আসে। এই কারণেই কিনা জানা নেই, তবে একটা সময়ের পর থেকে ধীরে ধীরে লিচ থেরাপির জনপ্রিয়তা করতে শুরু করে। ফের এই অভিনব পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু হয় ২০০৪ সালের পর থেকে। এই সময় একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে জোঁক বাস্তবিকই নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন…

১. হার্টের রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে:
২০১১ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা যায় ঠিক পদ্ধতিতে জোঁককে ব্যবহার করলে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। আসলে জোঁকের স্যালাইভা বা থুতু এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, অলটারনেটিভ মেডিসিন রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা পত্রে আরও দাবি করা হয়েছিল যে ব্লাড ক্লট এবং পা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা কমাতেও এই অভিনব পদ্ধতিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা করে:
২০৩০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে মহামারির আকার নিতে চলা এই মারণ রোগের চিকিৎসায় দারুন কাজে আসে জোঁক। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে চিরাচরিত ওষুধের পাশাপাশি ক্যান্সার রোগীর শরীরে যদি জোঁকের স্যালাইভা প্রবেশ করানো যায়, তাহলে ব্রেস্ট, মেলানোমা, লাং এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের প্রকোপ অনেকাংশেই কমানা সম্ভব হয়। পসঙ্গত, জোঁকের থুতুতে থাকা গিলেন্টেন নামক একটি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩. ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী ২০ বছরের মধ্যে সারা বিশ্বে প্রায় ৩৬৬ মিলিয়ান মানুষ এই মারণ রোগের শিকার হবে। এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকতে জোঁক থেরাপির প্রয়োজন যে বেড়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে রক্তে শর্করারা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের কারণে হওয়া নানাবিধ জটিলতা, যেমন করনারি অ্যাথেরোস্কলেরোসিস, হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং অক্সিটেডিভ স্ট্রেস কমাতে জোঁক থেরাপি দারুন কাজে আসে।

৪. ছোঁয়াচে রোগের প্রকোপ কমায়:
কেমোথেরাপি নামক জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে জোঁকের শরীরে থাকা ডেস্টাবিলেস নামক এক ধরনের প্রোটিন আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর সব ধরনের জীবাণুকে মেরে ফেলে রোগের প্রকোপ কমাতে একেবারেই সময় নেয় না। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে জোঁকের শরীরে থাকা নিউরোসিগনালিং এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপটাইড যে কোনও ধরেনর সংক্রমণকে কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা করে:
জয়েন্টে পেইনের কারণে কি একেবারে কাবু হয়ে পরেছেন? তাহলে একবার জোঁক থেরাপি করে দেখুন না! এমনটা করলে উপকার যে পাবেন, তা বলাই যায়। আসলে ব্যথা জায়গায় কিছু সময় জোঁককে রাখলে সেখানে রক্তের সরবরাহে উন্নতি ঘটে। ফলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

৬. কানের যন্ত্রণা কমায়:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে ক্রণিক কানের যন্ত্রণা কমাতে জোঁকের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে একটা জোঁক কানের পিছনে, আর একটি কানের সামনে কিছু সময় রেখে দিতে হবে। এমনভাবে ৩-৪ দিন করলেই দেখবেন যন্ত্রণা একেবারে গায়েব হয়ে যাবে।