ইন্সটিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারস (আইইইই) কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার আয়োজিত ‘জাতীয় সামার সিম্পোজিয়াম ২০২৫’-এ প্রথম স্থান অর্জন করে সেরা পুরস্কার পেয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএমই) বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহাদ ইবনে রহমান।
গত ১৮ ও ১৯ জুলাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে দেশের ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা ৫০০টির বেশি গবেষণা পেপার উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন হাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এনামুল্লাহ। পৃষ্ঠপোষক ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম শিকদার ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর কবির। আয়োজক হিসেবে ছিলেন হাবিপ্রবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার হোসেন।
সিম্পোজিয়ামের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডনের অধ্যাপক ড. মো. আতিকুর রহমান আহাদ, গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, বিইউবিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম শওকত আলী এবং গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন।
সিম্পোজিয়ামে মোট ১১টি বিষয়ভিত্তিক সেশনে গবেষণা পত্র উপস্থাপন করা হয়। ফাহাদ ইবনে রহমান ‘ঢঅও-উৎরাবহ ঠরঞ-এজট উববঢ় খবধৎহরহম ঋৎধসবড়িৎশ ভড়ৎ গজও-ইধংবফ ইৎধরহ ঞঁসড়ৎ ঈষধংংরভরপধঃরড়হ’ শীর্ষক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। এতে তিনি প্রধান লেখক এবং বিএমই বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ড. মো. খাইরুল ইসলাম কো-অথর হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
গবেষণাপত্রটিতে ব্রেইন টিউমার শনাক্তে গজও ইমেজ ব্যবহার করে ঊীঢ়ষধরহধনষব অও (ঢঅও) ও উববঢ় খবধৎহরহম প্রযুক্তির সমন্বয়ে ঠরঞ-এজট মডেল উপস্থাপন করা হয়, যা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
সিম্পোজিয়ামের বিচারকমণ্ডলীর চূড়ান্ত মূল্যায়নে ফাহাদ প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং ১৫ হাজার টাকা সম্মানী ও একটি ই-সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
ফাহাদ বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-ইম্যাজিং রিসার্চ ল্যাবের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। এই ল্যাবটি আধুনিক স্বাস্থ্য প্রযুক্তি ও ইমেজ প্রসেসিং-ভিত্তিক গবেষণায় সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রেখে চলেছে।
এই অর্জন প্রসঙ্গে ফাহাদ বলেন, “এটি আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। ভবিষ্যতে আমি মেডিকেল ইমেজ প্রসেসিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আরও গভীর গবেষণা করতে চাই।”
বিএমই বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ড. মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, “এই অর্জন প্রমাণ করে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও সুযোগ পেলে আমাদের শিক্ষার্থীরাও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা করতে পারে। বায়ো-ইম্যাজিং ল্যাব একটি প্রশিক্ষণভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যেখানে শিক্ষার্থীরা হাতে-কলমে গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। ফাহাদের সাফল্য অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ভবিষ্যতে আরও নতুন ধারণা নিয়ে গবেষণায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবো এবং দেশের স্বাস্থ্য প্রযুক্তি খাতে গঠনমূলক অবদান রাখতে প্রস্তুত করবো। ইনশাআল্লাহ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণাক্ষেত্রে একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অবস্থানে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাবো।