শিরোনাম :
Logo বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর Logo ব্যানসন গ্ৰুপের কোনো ঘরবাড়ি থাকবে না; রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাহী Logo নতুন পোপ নির্বাচিত হবে যেভাবে Logo শুল্কযুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিলো চীন Logo পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক Logo পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে ইবি ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo পঞ্চগড়ে ট্রাক মেরামতের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মেকানিক নিহত, আহত সহকারী Logo সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চাঁদপুর সওজ বিভাগ Logo জাবিতে বটতলাসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ওয়াশরুম স্থাপনের দাবি লাল সবুজের Logo যবিপ্রবিতে সক্রিয় তেল চুরির সিন্ডিকেট, হাতেনাতে ধরা

যেসব ইস্যুতে মতপার্থক্য বিএনপির

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৯:০৩:২৬ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭১১ বার পড়া হয়েছে

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক করেছে বিএনপি। এ দিন বিএনপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জানিয়েছে ‘রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই’।

তারা আরও জানিয়েছে, টানা দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, এ বিষয়ে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। তবে এক বছর গ্যাপ দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হতে কোনো সমস্যা নেই বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছে দলটি। এ ছাড়া অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল, আস্থা ভোট, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিল- এই চারটি ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা পাবেন, এ রকম প্রস্তাব করেছে বিএনপি। সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে মত ও দ্বিমতের বিষয়ে, ‘পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা চায় বিএনপি। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের সঙ্গে একমত নয় দলটি। এ ছাড়া সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারে বিএনপি একমত হয়েছে। দলটি জানিয়েছে, ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার অন্তর্ভুক্ত করতে একমত বিএনপি। মৌলিক অধিকারে সব না এনে যা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রয়েছে, ততটুকু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতি ও শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। বৈঠকটি টানা প্রায় সাত ঘণ্টা চলে। আগামী মঙ্গলবার ফের বৈঠক হবে।

রোববারের বৈঠকে উপস্থিত থাকা বিএনপি প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে আরও ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

এর আগে ব্রিফিংয়ের শুরুতে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করছি। আলোচনা অব্যাহত আছে। মোটামুটি ভালো এগোচ্ছে। বেশ কিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি। কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমতের কথা বলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে এটাই স্বাভাবিক। আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না যে এমন কিছু করা হবে, যেটা মানতে সবাইকে বাধ্য হওয়া লাগবে। আমরা মনে করি, দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে যা সংগত যা সর্বাপেক্ষা উত্তম, তেমন কিছুই হওয়া উচিত।’

পরে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের এখানে কোনো যৌক্তিক কারণ নাই। দীর্ঘ ৫৪ বছরের প্র্যাকটিসের মাধ্যমে জনগণ এটা গ্রহণ করেছে। এটা একটা ইটালিক অরিজিন শব্দ, রেস পবলিকা থেকে এসেছে। রেস মানে জিনিস, পবলিকা মানে জনগণ। সেটা হচ্ছে জনগণেরই তন্ত্র। এটা কোনো রাজতন্ত্রের বিপক্ষে উচ্চারিত শব্দ না। এটা হচ্ছে, জনগণ কর্তৃক জনগণের শাসনের তন্ত্র জনপ্রজাতন্ত্র এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে রাজা এবং প্রজার কোনো সম্পর্ক নেই। আসলে জনগণ হচ্ছে সোভরেইন। সোভরেইন অথরিটি হিসেবে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সোভরেইন পার্লামেন্টে আসে এবং সোভরেইন হাউসে সার্বভৌম হাউসে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রকাশ করে। সেখানে আইন প্রণীত হয়। আইনই হচ্ছে এখানে প্রধান।’

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে একইভাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার এই কথাগুলো ওখানে ধারণ করার ক্ষেত্রে একমত হয়েছি। তিনি জানান, সরকারপ্রধান ও পার্টিপ্রধান একই ব্যক্তি- এমন বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে বিএনপির।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘লিডার অব দ্য হাউস কে হবে তা রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়েও কমিশনের সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে আমাদের। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা নিয়ে একমত বিএনপি, কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় তারা নির্বাচিত হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলমান আছে।’ তিনি জানান, নতুন আইন প্রণয়ন করে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স করার পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। এনসিসি বিষয়ে একমত নই, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা দায় হয়ে যাবে। কেয়ারটেকার ছাড়া নির্বাচন ফ্রি ফেয়ার হয় না, ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’র জন্যই দেশের নির্বাচনব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত কেয়ারটেকার রাখা প্রয়োজন। সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বলেছি, নারীদের আসনসংখ্যা ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে আমরা একমত। কিন্তু সেটা বিদ্যমান পদ্ধতিতেই মনোনয়ন হবে, সেটা আমাদের প্রস্তাবে বলেছি। তবে এটা (নারী আসনসংখ্যা উন্নীত) আমরা বলেছি, নেক্সট পার্লামেন্ট গঠন করার পরে যখন ৩০০ এমপি প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হবে এবং সংসদে এ-সংক্রান্ত সংশোধনী গৃহীত হলে বর্তমানের ৫০ এবং আরও ৫০ নিয়ে যে ১০০ গঠিত হবে সেই ৪০০ সদস্যবিশিষ্ট সংসদে বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করে কোন পদ্ধতিতে পরবর্তী সংসদে নারী আসনের নির্বাচনটা হবে, তখন সংসদে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। বর্তমানের জন্য বিদ্যমান পদ্ধতি আমরা মনে করেছি যে অ্যাপ্রোপিয়েট।’

ভোটে প্রার্থী হতে ন্যূনতম বয়স ২১-এর ক্ষেত্রে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সব স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে বিরোধী দল থেকে নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। আমরা বলেছি, এটা বাস্তবসম্মত নয়। এটা সংসদের প্র্যাকটিস ও সংসদের ওপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবে আমরা এভাবে একমত হয়েছি যে কিছু কিছু স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে যেমন পাবলিক আন্ডারটেইকেন কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি এ জাতীয় কিছু কিছু কমিটি আমরা বিরোধী দলের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা যায় বলে জানিয়েছি।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সংস্কার আগামী নির্বাচিত সংসদে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। এর আগে বৈঠকের শুরুতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগকে বিএনপি সিরিয়াসলি সহযোগিতা করছে। আমরা সব বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে, আন্তরিকতা সঙ্গে এবং সিরিয়াসলি সংস্কার কার্যক্রমের সঙ্গে সহযোগিতায় আছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর

যেসব ইস্যুতে মতপার্থক্য বিএনপির

আপডেট সময় : ০৯:০৩:২৬ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক করেছে বিএনপি। এ দিন বিএনপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে জানিয়েছে ‘রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই’।

তারা আরও জানিয়েছে, টানা দুবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, এ বিষয়ে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। তবে এক বছর গ্যাপ দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী হতে কোনো সমস্যা নেই বলেও অভিমত ব্যক্ত করেছে দলটি। এ ছাড়া অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল, আস্থা ভোট, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিল- এই চারটি ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা পাবেন, এ রকম প্রস্তাব করেছে বিএনপি। সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে মত ও দ্বিমতের বিষয়ে, ‘পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা চায় বিএনপি। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের সঙ্গে একমত নয় দলটি। এ ছাড়া সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারে বিএনপি একমত হয়েছে। দলটি জানিয়েছে, ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার অন্তর্ভুক্ত করতে একমত বিএনপি। মৌলিক অধিকারে সব না এনে যা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রয়েছে, ততটুকু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রোববার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতি ও শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। বৈঠকটি টানা প্রায় সাত ঘণ্টা চলে। আগামী মঙ্গলবার ফের বৈঠক হবে।

রোববারের বৈঠকে উপস্থিত থাকা বিএনপি প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে আরও ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

এর আগে ব্রিফিংয়ের শুরুতে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করছি। আলোচনা অব্যাহত আছে। মোটামুটি ভালো এগোচ্ছে। বেশ কিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি। কিছু কিছু বিষয়ে দ্বিমতের কথা বলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে এটাই স্বাভাবিক। আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না যে এমন কিছু করা হবে, যেটা মানতে সবাইকে বাধ্য হওয়া লাগবে। আমরা মনে করি, দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে যা সংগত যা সর্বাপেক্ষা উত্তম, তেমন কিছুই হওয়া উচিত।’

পরে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের এখানে কোনো যৌক্তিক কারণ নাই। দীর্ঘ ৫৪ বছরের প্র্যাকটিসের মাধ্যমে জনগণ এটা গ্রহণ করেছে। এটা একটা ইটালিক অরিজিন শব্দ, রেস পবলিকা থেকে এসেছে। রেস মানে জিনিস, পবলিকা মানে জনগণ। সেটা হচ্ছে জনগণেরই তন্ত্র। এটা কোনো রাজতন্ত্রের বিপক্ষে উচ্চারিত শব্দ না। এটা হচ্ছে, জনগণ কর্তৃক জনগণের শাসনের তন্ত্র জনপ্রজাতন্ত্র এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে রাজা এবং প্রজার কোনো সম্পর্ক নেই। আসলে জনগণ হচ্ছে সোভরেইন। সোভরেইন অথরিটি হিসেবে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সোভরেইন পার্লামেন্টে আসে এবং সোভরেইন হাউসে সার্বভৌম হাউসে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রকাশ করে। সেখানে আইন প্রণীত হয়। আইনই হচ্ছে এখানে প্রধান।’

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে একইভাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার এই কথাগুলো ওখানে ধারণ করার ক্ষেত্রে একমত হয়েছি। তিনি জানান, সরকারপ্রধান ও পার্টিপ্রধান একই ব্যক্তি- এমন বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে বিএনপির।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘লিডার অব দ্য হাউস কে হবে তা রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়েও কমিশনের সঙ্গে দ্বিমত রয়েছে আমাদের। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা নিয়ে একমত বিএনপি, কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় তারা নির্বাচিত হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলমান আছে।’ তিনি জানান, নতুন আইন প্রণয়ন করে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স করার পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। এনসিসি বিষয়ে একমত নই, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা দায় হয়ে যাবে। কেয়ারটেকার ছাড়া নির্বাচন ফ্রি ফেয়ার হয় না, ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’র জন্যই দেশের নির্বাচনব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত কেয়ারটেকার রাখা প্রয়োজন। সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বলেছি, নারীদের আসনসংখ্যা ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার ব্যাপারে আমরা একমত। কিন্তু সেটা বিদ্যমান পদ্ধতিতেই মনোনয়ন হবে, সেটা আমাদের প্রস্তাবে বলেছি। তবে এটা (নারী আসনসংখ্যা উন্নীত) আমরা বলেছি, নেক্সট পার্লামেন্ট গঠন করার পরে যখন ৩০০ এমপি প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচিত হবে এবং সংসদে এ-সংক্রান্ত সংশোধনী গৃহীত হলে বর্তমানের ৫০ এবং আরও ৫০ নিয়ে যে ১০০ গঠিত হবে সেই ৪০০ সদস্যবিশিষ্ট সংসদে বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করে কোন পদ্ধতিতে পরবর্তী সংসদে নারী আসনের নির্বাচনটা হবে, তখন সংসদে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। বর্তমানের জন্য বিদ্যমান পদ্ধতি আমরা মনে করেছি যে অ্যাপ্রোপিয়েট।’

ভোটে প্রার্থী হতে ন্যূনতম বয়স ২১-এর ক্ষেত্রে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সব স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে বিরোধী দল থেকে নেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। আমরা বলেছি, এটা বাস্তবসম্মত নয়। এটা সংসদের প্র্যাকটিস ও সংসদের ওপরে ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবে আমরা এভাবে একমত হয়েছি যে কিছু কিছু স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে যেমন পাবলিক আন্ডারটেইকেন কমিটি, সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি এ জাতীয় কিছু কিছু কমিটি আমরা বিরোধী দলের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা যায় বলে জানিয়েছি।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সংস্কার আগামী নির্বাচিত সংসদে আলোচনা করে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। এর আগে বৈঠকের শুরুতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগকে বিএনপি সিরিয়াসলি সহযোগিতা করছে। আমরা সব বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে, আন্তরিকতা সঙ্গে এবং সিরিয়াসলি সংস্কার কার্যক্রমের সঙ্গে সহযোগিতায় আছি।