শিরোনাম :
Logo ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে ‘মনিটরিং’ জোরদার করবে সরকার, নেবে কঠোর ব্যবস্থা : প্রেস সচিব Logo ভোলার মুহাদ্দিস নোমানী হত্যার বিচারে ইবিতে মানববন্ধন Logo নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিনতাই, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা Logo আজকের ৪টি দ্বিতল বাসের যাত্রা নবদিগন্তের সূচনা : ইবি উপাচার্য Logo সিরাজগঞ্জে জাতীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের উদ্বোধন Logo শেখহাসিনার ছাত্রলীগ যেই দুঃসাহস করতে পারেনি, সেই দুঃসাহস ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে এখন ছাত্রদল করা শুরু করেছে, পঞ্চগড়ে -সারজিস Logo আশিকাটি ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায় কর্মসূচীর উদ্বোধন Logo মেধাভিত্তিক নিয়োগ হলে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই দেশের সম্পদ হবে : আসিফ মাহমুদ Logo অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হাঙরের আক্রমণে নিহত ১

মাতৃভূমিতে ফিরতে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে রোহিঙ্গারা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১০:৪৩:০৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
  • ৭২৪ বার পড়া হয়েছে
মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে এবার সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। ২০১৭ সালে বার্মিজ সেনাবাহিনীর অত্যাচার আর নির্মম গণহত্যা সইতে না পেরে রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন তারা। এবার তারা আবার দেশে ফিরতে গভীর জঙ্গলে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে মোহাম্মদ আয়াস নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের বরাতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারির এক ভোরে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির থেকে বেরিয়ে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করেন। ২০১৭ সালে তিনি যে স্থান থেকে পালিয়ে এসেছিলেন, সেখানে এবার ফিরে গেছেন অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিতে এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে—যারা তার সম্প্রদায়ের রক্তাক্ত নির্বাসনের জন্য দায়ী।

২৫ বছর বয়সী আয়াস রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের বার্মিজ ভাষা শেখান। তিনি দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন, তিনি এবং হাজারো রোহিঙ্গা এখন একত্রিত হয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের ‘মাতৃভূমি ফিরে পাওয়ার’ পথে যারা বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রস্তুত। আমার সম্প্রদায়ের জন্য আমি মরতেও রাজি আছি। মাতৃভূমি, আমাদের অধিকার এবং স্বাধীনতা ফিরে পেতে এই লড়াইয়ে আমার কী হবে, তা নিয়ে আমি ভাবি না।

শরণার্থী ও সহায়তা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াসের মতো শত শত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় সশস্ত্র গ্রুপে যোগ দিচ্ছেন। কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত নিপীড়িত মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি, যারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন।

দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট কক্সবাজার শিবিরের এক কমান্ডারের সঙ্গেও কথা বলেছে। তিনি জানান, রোহিঙ্গারা সপ্তাহ বা মাসের জন্য গোপনে মিয়ানমারে গিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তারা সামরিক জান্তা এবং তাদের বিরোধী বিদ্রোহী গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ দিকে রোহিঙ্গা গ্রুপগুলোর দাবি, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে উভয় পক্ষই তাদের গণহত্যা ও জোরপূর্বক সেনাদলে ভর্তি করছে। এক রোহিঙ্গা যোদ্ধা বলেন, অং সান সু চি যদি ক্ষমতায় ফিরেন, পরিস্থিতি বদলাতে পারে—তবে তারা আর অপেক্ষা করতে রাজি নন।

আয়াস জানান, তিনি ছয় মাস জঙ্গলে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারা প্রতিদিন তাঁবু বদলিয়ে সেনাবাহিনীর চোখ এড়াতেন। ভোর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হতো। গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেউ অস্ত্রচালনা, মার্শাল আর্ট শিখতেন, আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগ, গোয়েন্দা কার্যক্রম বা শত্রুর গতিবিধি ট্র্যাক করায় প্রশিক্ষণ নিতেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে ‘মনিটরিং’ জোরদার করবে সরকার, নেবে কঠোর ব্যবস্থা : প্রেস সচিব

মাতৃভূমিতে ফিরতে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে রোহিঙ্গারা

আপডেট সময় : ১০:৪৩:০৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে এবার সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। ২০১৭ সালে বার্মিজ সেনাবাহিনীর অত্যাচার আর নির্মম গণহত্যা সইতে না পেরে রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন তারা। এবার তারা আবার দেশে ফিরতে গভীর জঙ্গলে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে মোহাম্মদ আয়াস নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের বরাতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারির এক ভোরে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির থেকে বেরিয়ে গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করেন। ২০১৭ সালে তিনি যে স্থান থেকে পালিয়ে এসেছিলেন, সেখানে এবার ফিরে গেছেন অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিতে এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে—যারা তার সম্প্রদায়ের রক্তাক্ত নির্বাসনের জন্য দায়ী।

২৫ বছর বয়সী আয়াস রোহিঙ্গা শিবিরে শিশুদের বার্মিজ ভাষা শেখান। তিনি দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন, তিনি এবং হাজারো রোহিঙ্গা এখন একত্রিত হয়ে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের ‘মাতৃভূমি ফিরে পাওয়ার’ পথে যারা বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রস্তুত। আমার সম্প্রদায়ের জন্য আমি মরতেও রাজি আছি। মাতৃভূমি, আমাদের অধিকার এবং স্বাধীনতা ফিরে পেতে এই লড়াইয়ে আমার কী হবে, তা নিয়ে আমি ভাবি না।

শরণার্থী ও সহায়তা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াসের মতো শত শত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় সশস্ত্র গ্রুপে যোগ দিচ্ছেন। কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত নিপীড়িত মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি, যারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন।

দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট কক্সবাজার শিবিরের এক কমান্ডারের সঙ্গেও কথা বলেছে। তিনি জানান, রোহিঙ্গারা সপ্তাহ বা মাসের জন্য গোপনে মিয়ানমারে গিয়ে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তারা সামরিক জান্তা এবং তাদের বিরোধী বিদ্রোহী গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ দিকে রোহিঙ্গা গ্রুপগুলোর দাবি, ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে উভয় পক্ষই তাদের গণহত্যা ও জোরপূর্বক সেনাদলে ভর্তি করছে। এক রোহিঙ্গা যোদ্ধা বলেন, অং সান সু চি যদি ক্ষমতায় ফিরেন, পরিস্থিতি বদলাতে পারে—তবে তারা আর অপেক্ষা করতে রাজি নন।

আয়াস জানান, তিনি ছয় মাস জঙ্গলে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারা প্রতিদিন তাঁবু বদলিয়ে সেনাবাহিনীর চোখ এড়াতেন। ভোর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হতো। গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেউ অস্ত্রচালনা, মার্শাল আর্ট শিখতেন, আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগ, গোয়েন্দা কার্যক্রম বা শত্রুর গতিবিধি ট্র্যাক করায় প্রশিক্ষণ নিতেন।