বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে টানাপোড়েনের মধ্যে অভিন্ন নদীর পানিবন্টন সংক্রান্ত বিষয় পর্যালোচনায় বৈঠকে বসেছেন দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) কলকাতায় শুরু হওয়া দুদিনের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেআরসি, বাংলাদেশের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। উভয়পক্ষের ১১ সদস্যের দলে ভারত প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে আছেন দেশটির যৌথ নদী কমিশনের সদস্য শারদ চন্দ্র।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধিরা পানি কম পাওয়ার কারণে কী কী সমস্যা হয় তা নিয়ে আলোচনা করেন। শুক্রবারও বৈঠক হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ফারাক্কায় পানি পরিমাপের পর বৃহস্পতিবার কলকাতার এক হোটেলে বৈঠকে বসে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ কমিটির প্রতিনিধিদল।
এই বৈঠকে গঙ্গার পানিবন্টন চুক্তি অনুযায়ী পানি ভাগাভাগি নিয়ে কথা হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব মোহাম্মদ আবুল হোসেন ফারাক্কাতে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন পানি বণ্টন নিয়ে সন্তুষ্ট তারা। তবে তিনি এও জানান, “এবছর পানির প্রবাহ কম থাকার জন্য কম পানি পাচ্ছে দুই দেশ।”
বৃহস্পতিবার বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা কম পানি পাওয়ার কারণে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করেন। পানি কম পেলে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে সেচের সমস্যা হয়। জীববৈচিত্রের সমস্যা হয়। সুন্দরবন অঞ্চলে সমস্যা হয়। সেগুলো আলোচনায় জানানো হয়।
পানিপ্রবাহ কম থাকলে ভারতও প্রভাবিত হয়। পানি কম থাকলে ভাগাভাগি কম করতে হবে, এই টেকনিক্যাল বিষয় নিয়েই মূলত আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ আবু সৈয়দ, মেদরি জাহান, মোহাম্মদ সামসোজ্জাহান সহ অন্যান্যরা।
শুক্রবার (৭ মার্চ) যৌথ নদী কমিশনের টেকনিক্যাল বৈঠক। এই বৈঠকে দুই দেশেরই আরও কয়েকজন প্রতিনিধির যোগ দেয়ার কথা। পানিবন্টনের পর ৭ মার্চের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে তথ্য ভাগাভাগি, বন্যা রিপোর্ট, সীমান্ত নদীগুলিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের পরিকল্পনা সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক সিদ্ধান্ত সেই সভায় আলোচিত হওয়ার কথা রয়েছে।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সই হওয়া ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তি ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হতে যাচ্ছে। ওই চুক্তির নবায়নের বিষয়টি কলকাতার বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হওয়ার কথা বলছে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো।
তবে বাংলাদেশের পানি সম্পদ সচিব বলছেন, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন নিয়ে এখনও অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে আলোচনা করছে বাংলাদেশ। কর্মকর্তা পর্যায়ে নয়, নবায়নের আলোচনা আরও উচ্চ পর্যায়ে হবে।