জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের সম্মানার্থে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কনফারেন্স রুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনের শহীদ শ্রাবণ গাজীর গাজী, আহত শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং আন্দোলনের নেতৃস্থানীয়রা। প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ইফতারে অংশগ্রহণ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা ও বর্তমান গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, “অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে যখন অনেকেই ব্যক্তিগত স্বার্থ ও লক্ষ্য হাসিলের জন্য কাজ করছে, তখন ছাত্রশিবিরের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আজকের অনুষ্ঠানে আন্দোলনের শহীদের পিতা, আহত এবং আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়েছেন। আমরা চাই, সবাই এভাবেই দেশের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করে যাক।”
শহীদ শ্রাবণ গাজীর বাবা বাবা মান্নান বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কাঁপা কণ্ঠে তিনি বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে এসে আমার ছেলে ইয়ামিনের কথা খুব বেশি মনে পড়ছে। সে যখন বাসার বাইরে থেকে আসত, আমাকে জড়িয়ে ধরে ডাকত। মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন প্রতিদিন আমাদের ভিডিও কলে কথা বলত, আমার ও তার মায়ের খোঁজ নিত। কিন্তু আজকে আমার সেই ছেলে আর নেই, এই শূন্যতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
তিনি বলেন, গত রমজানেও যে ছেলের সঙ্গে একসঙ্গে ইফতার করেছি, আজ সে আমাদের থেকে অনেক দূরে এমন এক দূরত্ব, যা কোনোদিনও পেরোনো সম্ভব নয়।
ছাত্রশিবিরের শাখা সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, জুলাই আন্দোলনের আহত ও শহীদরা সবসময় আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের কাছে চিরস্মরণীয়। আমরা আমাদের সামর্থ্যের জায়গা থেকে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য আজকের ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছি। এখানে উপস্থিত আহত সহযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ শুনে আমরা আরও তেজোদীপ্ত হয়েছি, তাদের সাহস ও সংগ্রামের কথা আমাদের আগামী দিনের পথচলায় শক্তি জোগাবে।
এসময় উপস্থিত আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী এবং অন্যান্যরা অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করেন ।