যে কারণে কাঁদলেন ড. ইউনূস

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:২২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭২৫ বার পড়া হয়েছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাদের মর্মান্তিক অবস্থা দেখে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূস আন্দোলনে আহতদের হাসপাতালের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে যাই, তাকানো কষ্টকর।

ছিন্নবিচ্ছিন্ন তরুণ-তরুণীরা, কারো পা নেই, কারো মাথার খুলি উড়ে গেছে। এসব দেখে আমি দুঃখে মুষড়ে পড়েছি। ’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি, একজনের মাথার অর্ধেক নেই। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর লড়াই করছে। রংপুরের এক্স-রেতে শরীরে ছোট ছোট গুলির দাগ দেখা যায়। এত কষ্টের মাঝেও তারা বেঁচে আছে। এ দৃশ্য আমাকে প্রতিবারই নতুন করে স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিজ্ঞা করায়। ’

আন্দোলনে আহত এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার কথোপকথনও শেয়ার করেন প্রধান উপদেষ্টা।

রংপুরের এক তরুণ কাঁদতে কাঁদতে তাকে বলেছে, ‘স্যার, আমি সারাজীবন ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। এখন আমার পা কেটে ফেলেছে। আমি কিভাবে ক্রিকেট খেলব?’ ড. ইউনূসের কণ্ঠে আবেগের ভারে নতমুখে তিনি বলেন, ‘এমন স্বপ্নভঙ্গের গল্প শুনে মন ভেঙে যায়। ’

তিনি শিক্ষার্থীদের দৃঢ়ভাবে তাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য অটল থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তোমাদের চিন্তা স্বচ্ছ ও সঠিক।

কোনোভাবেই এ স্বপ্ন হাতছাড়া করো না, আমরা যে সরকারে আছি এটা তোমাদের ত্যাগের ফল। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। ’

সভায় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব।

ড. ইউনূস সবাইকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ৫৩ বছরের বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের সুযোগ আর আসেনি। তরুণরা এ যুদ্ধে ঢাল ধরেছে, আর এ কারণেই বাংলাদেশ একটি অনন্য, সম্মানিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

যে কারণে কাঁদলেন ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:২২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাদের মর্মান্তিক অবস্থা দেখে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং সাংবাদিকদের সামনে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ড. ইউনূস আন্দোলনে আহতদের হাসপাতালের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে যাই, তাকানো কষ্টকর।

ছিন্নবিচ্ছিন্ন তরুণ-তরুণীরা, কারো পা নেই, কারো মাথার খুলি উড়ে গেছে। এসব দেখে আমি দুঃখে মুষড়ে পড়েছি। ’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি, একজনের মাথার অর্ধেক নেই। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর লড়াই করছে। রংপুরের এক্স-রেতে শরীরে ছোট ছোট গুলির দাগ দেখা যায়। এত কষ্টের মাঝেও তারা বেঁচে আছে। এ দৃশ্য আমাকে প্রতিবারই নতুন করে স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রতিজ্ঞা করায়। ’

আন্দোলনে আহত এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার কথোপকথনও শেয়ার করেন প্রধান উপদেষ্টা।

রংপুরের এক তরুণ কাঁদতে কাঁদতে তাকে বলেছে, ‘স্যার, আমি সারাজীবন ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। এখন আমার পা কেটে ফেলেছে। আমি কিভাবে ক্রিকেট খেলব?’ ড. ইউনূসের কণ্ঠে আবেগের ভারে নতমুখে তিনি বলেন, ‘এমন স্বপ্নভঙ্গের গল্প শুনে মন ভেঙে যায়। ’

তিনি শিক্ষার্থীদের দৃঢ়ভাবে তাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য অটল থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘তোমাদের চিন্তা স্বচ্ছ ও সঠিক।

কোনোভাবেই এ স্বপ্ন হাতছাড়া করো না, আমরা যে সরকারে আছি এটা তোমাদের ত্যাগের ফল। আমরা এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। ’

সভায় উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব।

ড. ইউনূস সবাইকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ৫৩ বছরের বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের সুযোগ আর আসেনি। তরুণরা এ যুদ্ধে ঢাল ধরেছে, আর এ কারণেই বাংলাদেশ একটি অনন্য, সম্মানিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।