গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, শতাধিক এনজিওর সতর্কতা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:১১:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
  • ৭০৯ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন শীর্ষ দূতের ইউরোপ সফরের আগে শতাধিক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বুধবার সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। এই সফরে যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ করিডোর নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

২১ মাস ধরে চলা সংঘাতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষ চরম খাদ্য সংকটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘোর ঘাটতির মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘ মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ নামে নতুন সহায়তা উদ্যোগ চালুর পর থেকে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।

সংস্থাটি জানায়, জিএইচএফ থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সেইভ দ্য চিলড্রেন, অক্সফাম, ডাক্তারি সাহায্য সংস্থা এমএসএফসহ ১১১টি সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমাদের সহকর্মীরা এবং যাদের আমরা সেবা দিচ্ছি, তারা না খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছেন।’

তারা অবিলম্বে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি, সব স্থল পথ খুলে দেওয়া ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবিক সহায়তা চালু করার দাবি জানায়।

এর একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তাদের দূত স্টিভ উইটকফ এ সপ্তাহে ইউরোপে যাচ্ছেন গাজা ইস্যুতে আলোচনা করতে। এরপর তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফরেও যেতে পারেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সাংবাদিকদের বলেন, উইটকফ ‘জোরালো আশা’ নিয়ে যাচ্ছেন যে, উভয় পক্ষের সম্মতিতে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং সহায়তা প্রবাহে একটি মানবিক করিডোর গঠনের পথ বেরিয়ে আসবে।

গত মে মাসের শেষ দিকে ইসরাইল দুই মাসেরও বেশি সময়ের সহায়তা অবরোধ কিছুটা শিথিল করলেও, গাজার মানুষ এখনও খাদ্য ও মৌলিক চাহিদার ঘাটতির মধ্যে রয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার জানান, গাজায় ইসরাইলি সামরিক হামলার মুখে ফিলিস্তিনিরা যে ‘ভয়াবহতা’র মধ্যে রয়েছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা সীমান্তের ভিতরে ও বাইরে টনকে টন সহায়তা সামগ্রী গুদামে পড়ে আছে, কিন্তু সেগুলো গাজাবাসীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ মিলছে না।

এদিকে ইসরাইল বলছে, তারা গাজায় ত্রাণের পণ্য প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। বরং হামাসই সাধারণ জনগণের কষ্টকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা ত্রাণের খাবার লুট করে বেশি দামে বিক্রি করছে এবং ত্রাণ কেন্দ্রে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর গুলি চালাচ্ছে।

গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, গত তিন দিনে অপুষ্টি ও অনাহারে ২১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, শতাধিক এনজিওর সতর্কতা

আপডেট সময় : ০৯:১১:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

মার্কিন শীর্ষ দূতের ইউরোপ সফরের আগে শতাধিক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা বুধবার সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে। এই সফরে যুদ্ধবিরতি ও ত্রাণ করিডোর নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

২১ মাস ধরে চলা সংঘাতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষ চরম খাদ্য সংকটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘোর ঘাটতির মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘ মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ নামে নতুন সহায়তা উদ্যোগ চালুর পর থেকে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়ে।

সংস্থাটি জানায়, জিএইচএফ থেকে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সেইভ দ্য চিলড্রেন, অক্সফাম, ডাক্তারি সাহায্য সংস্থা এমএসএফসহ ১১১টি সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছেন, ‘আমাদের সহকর্মীরা এবং যাদের আমরা সেবা দিচ্ছি, তারা না খেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছেন।’

তারা অবিলম্বে একটি সমঝোতার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি, সব স্থল পথ খুলে দেওয়া ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মানবিক সহায়তা চালু করার দাবি জানায়।

এর একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তাদের দূত স্টিভ উইটকফ এ সপ্তাহে ইউরোপে যাচ্ছেন গাজা ইস্যুতে আলোচনা করতে। এরপর তিনি মধ্যপ্রাচ্য সফরেও যেতে পারেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস সাংবাদিকদের বলেন, উইটকফ ‘জোরালো আশা’ নিয়ে যাচ্ছেন যে, উভয় পক্ষের সম্মতিতে একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং সহায়তা প্রবাহে একটি মানবিক করিডোর গঠনের পথ বেরিয়ে আসবে।

গত মে মাসের শেষ দিকে ইসরাইল দুই মাসেরও বেশি সময়ের সহায়তা অবরোধ কিছুটা শিথিল করলেও, গাজার মানুষ এখনও খাদ্য ও মৌলিক চাহিদার ঘাটতির মধ্যে রয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মঙ্গলবার জানান, গাজায় ইসরাইলি সামরিক হামলার মুখে ফিলিস্তিনিরা যে ‘ভয়াবহতা’র মধ্যে রয়েছে, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা সীমান্তের ভিতরে ও বাইরে টনকে টন সহায়তা সামগ্রী গুদামে পড়ে আছে, কিন্তু সেগুলো গাজাবাসীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ মিলছে না।

এদিকে ইসরাইল বলছে, তারা গাজায় ত্রাণের পণ্য প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। বরং হামাসই সাধারণ জনগণের কষ্টকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা ত্রাণের খাবার লুট করে বেশি দামে বিক্রি করছে এবং ত্রাণ কেন্দ্রে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর গুলি চালাচ্ছে।

গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, গত তিন দিনে অপুষ্টি ও অনাহারে ২১ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।