নিউজ ডেস্ক:
শরীরে কাটা-ছেড়ার ব্যাথা তাও সহ্য করা যায়। কিন্তু শরীরের কোন জায়গা পূরে গেলে সেই পোড়ার জ্বালা সহ্য করা কষ্টের। ব্যাথা কমে গেলেও থেকে যায় দাগ লিন্তু থেকেই যায়। শরীরের সেই দাগ ছাপ ফেলে দেয় মনেও। চিকিৎসা আছে বটে তবে সেই চিকিৎসার খরচ বহন করা সবার পক্ষে সম্ভবপর হয় না। আর অবাক হলেও সত্য যে অল্প খরচে সেই চিকিৎসার পদ্ধতি আবিষ্কার করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা। আর তার জন্য তারা ব্যবহার করেছেন আমাদের বহুল পরিচিত একটি মাছের ছাল।
ব্রাজিলের ফোর্টালেজার এলাকার বেশিরভাগ মানুষেরই খেটে খাওয়া জীবন৷ আর খেটে খেতে গেলে চোট তো লাগেই। যেমন লেগেছিল অ্যান্টোনিও সান্টোসের। পেশার খাতিরে মাছ ধরতে গিয়েছিল অ্যান্টোনিও। মাঝ সমুদ্রে নৌকায় থাকা গ্যাসের টিন ফেটে যায়। ডান হাতটা একেবারেই পুড়ে যায়। ব্যাথায় কাতর অ্যান্টোনিও তখন ডাক্তারদের অনুমতি দেন এক্সপেরিমেন্ট করার। আর তাতেই ইতিহাসের পাতায় স্থান হয়ে যায় এক নতুন আবিষ্কারের। পুড়ে যাওয়া হাত প্রায় নিখুঁতভাবে সারিয়ে তুলল মাছের ছালের প্রলেপ।
বাঙালির খুবই চেনা মাছ তেলাপিয়া৷ অবাক হলেও ঠিকই শুনছেন৷ প্রায় দিনই আমরা যে তেলাপিয়া মাছ খেয়ে থাকি এখানে সেই তেলাপ্যা মাছের কথাই বলা হচ্ছে। সেই মাছই মানুষের দগ্ধ অঙ্গ সারিয়ে তুলছে নিমেষে। বিকল্প ছাল দিয়ে দগ্ধ অঙ্গ সারানোর প্রথা অনেক আগে থেকেই প্রচলিত আছে। মানুষের চামড়ার পাশাপাশি এই কাজে কৃত্রিম চামড়াও ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ কিন্তু ব্রাজিলের মতো দেশের এই ধরণের সামগ্রীর যা জোগান তাতে করে মাত্র ১ শতাংশ দগ্ধ রোগীরই চিকিৎসা করা সম্ভব।
এই চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে তাই বিজ্ঞানীদের এই নয়া হাতিয়ার তেলাপিয়া মাছের ছাল। দেখা গেছে জীবানুমুক্ত তেলাপিয়া মাছের ছাল পোড়া অংশে ব্যান্ডেজের মতো জড়িয়ে রাখলে অনেক দ্রুত সেরে ওঠে রোগী। আর এতে ষন্ত্রণাও অনেকটাই কম হয়।
বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, তেলাপিয়ার ছালে কোলাজেন প্রোটিনের টাইপ ১ ও ৩ রয়েছে যা থার্ড ডিগ্রি বার্ন কেসও অতি সহজে সারিয়ে তুলতে পারে। আর এতেই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ অ্যান্টোনিও।