শুক্রবার | ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জয়ের ১২০৮ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেনে তদন্তে সিআইডি Logo সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মাদক ব্যবসায়ী খুনে পিবিআইয়ের হাতে দুই আসামি গ্রেফতার Logo সুন্দরবনে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক করেছে কোস্ট গার্ড Logo ইবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু  Logo সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সহজভাবে প্রকাশের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের মাছপট্টি এলাকায় গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে ২ জন আহত Logo ইবির আরবী বিভাগের স্নাতক সমাপনী র‍্যালি অনুষ্ঠিত! Logo খুবিতে ওবিই পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন ও পরিমার্জন বিষয়ক প্রশিক্ষণ! Logo সম্পাদক আশরাফ ইকবালের জন্মদিনে শিক্ষার্থীদের গাছের চারা উপহার দিলেন তরুছায়া Logo মাদকবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন শ্যামনগরের ছফিরুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়

বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ পাহাড়সম

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৫২ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৭৪ বার পড়া হয়েছে

দেশের বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুরসহ বেশির ভাগ জেলায় বাড়িঘর ও সড়ক থেকে পানি নামছে। তবে বানভাসিরা এখন পাহাড়সম দুর্ভোগের শিকার। বন্যায় অনেকের কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে। পাকা ঘরেও আসবাবপত্রসহ যাবতীয় সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাড়িঘর বসবাস উপযোগী করার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে তারা।

বন্যায় গবাদি পশু, হাস-মুরগি ও মাছের খামার ভেসে যাওয়ায় অনেকের অর্থনৈতিক অবলম্বনও শেষ হয়ে গেছে। কারও কারও দোকানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবর্ণনীয় ক্ষতি কীভাবে পোষাবেন, কীভাবে বছরের পর বছর গড়া বাসস্থানের নানা উপকরণ আবার জোগাড় করবেন, সেই দুশ্চিন্তায় পাগলপ্রায় অনেকে। পাশাপাশি অনেকের পেটে দানাপানি নেই। আশ্রয়কেন্দ্র বা প্রধান সড়কের আশপাশের বাসিন্দারা ত্রাণ পেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষই এখনো প্রয়োজনীয় খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন না। ফলে খেয়ে-না-খেয়ে সীমাহীন কষ্টে দিন কাটছে তাদের। এছাড়া অনেক এলাকায় এখনো সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এদিকে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার কোথাও কোথাও পানি কিছুটা কমলেও বৃষ্টির কারণে আবারও বেড়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ৩১ জন মারা গেছেন। প্রায় ৫৮ লাখ ২২ হাজার ৭৩৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, দেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ১২ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় মৃতদের মধ্যে কুমিল্লায় ১২, ফেনীতে ২, চট্টগ্রামে ৫, খাগড়াছড়িতে ১, নোয়াখালীতে ৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ এবং কক্সবাজারে ৩ জন। মৌলভীবাজারে দুই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয়দানের জন্য ৪ হাজার ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৫ লাখ ৪০ হাজার ৫১০ জন লোক এবং ৩৯ হাজার ৫৩১টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুমিল্লা, ব্রাহ্মণপাড়া ও নাঙ্গলকোট : গোমতীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটেও মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। বুড়িচংয়ের কৃষক মনু মিয়া যুগান্তরকে বলেন, কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনটি গরু পালন করেছি। হঠাৎ গ্রামে পানি ঢুকে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। শেষ সম্বল ৩টি গরু। তিনি বলেন, জানি না কোথায় নিয়ে যাব। আপাতত উঁচু কোনো স্থানে নিয়ে রাখব। পরে গাড়ি দিয়ে নিরাপদ কোনো স্থানে নিয়ে যাব। বাকশিমূল গ্রামের আবু সায়েম রনি বলেন, গ্রামে বুকসমান পানি। সবকিছু চোখের সামনে তলিয়ে গেছে। শুধু দুটি গরু নিয়ে বের হয়েছি। এখন এগুলো ট্রাকে করে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাব। নিজস্ব অর্থায়ন ও জনবল দিয়ে বুড়িচংয়ে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন সমাজসেবক ও রাজনীতিক এটিএম মিজানুর রহমান।

বুড়িচংয়ের রাজাপুর ইউনিয়নের দুর্গম আশ্রয়কেন্দ্র লড়িবাগ প্রাইমারি স্কুলে চিকিৎসাসেবা দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক তানভীর আহাদ জয় ও ডা. সাবরিনা মনসুর। তারা জানান, বন্যার কারণে অনেকে শ্বাসকষ্ট, কাশি, গলাব্যথা, বুকে ব্যথা, হাঁচিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে জেলার নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জে পানি এখনো কমছে না।

এদিকে নাঙ্গলকোটের শাকতলী দক্ষিণপাড়ার দিনমজুর আবুল কালাম বলেন, ৮-১০ দিন ধরে ঘরের ভেতর পানিবন্দি হয়ে আছি। রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো সাহায্যও পাচ্ছি না। সাতবাড়িয়া এলাকায় আম্বিয়া বেগম বলেন, পানির মধ্যে বসবাস করতে করতে হাত-পা সাদা হয়ে গেছে। ওষুধ খেতে পারছি না। কোনোরকম জীবন বাঁচিয়ে পড়ে আছি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে। আমরা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।

ফেনী: ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকা। তবে অনেক এলাকায় খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকট এবং বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বানভাসি মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, প্লাবিত ফেনী সদরের ৮টি ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম এবং পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার কোথাও কোথাও এখনো পানি রয়েছে। সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় ট্রলি ও ট্রাকে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে মানুষ। দাগনভূঞা ও সোনাগাজীতে পানি কমলেও কিছু স্থানে মানুষজন এখনো পানিবন্দি। এছাড়া সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলার কিছু এলাকায়ও পানি রয়েছে। কবলিত এলাকার এক নারী বলেন, হঠাৎ আমাদের গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। একটা জামা পরে বের হয়েছি। কিছুই নিতে পারিনি। আমাদের ঘরবাড়ি, বসবাসের সব নষ্ট হয়ে গেছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার যুগান্তরকে জানান, ফেনীতে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিল। এর মধ্যে দেড় লাখ মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। বানভাসি মানুষের কাছে খাবার পৌঁছানো হচ্ছে। দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে খাবার দেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালী ও কোম্পানীগঞ্জ : স্থানীয়রা জানান, ২৪ ঘণ্টায় জেলার সেনবাগ, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার বন্যা অপরিবর্তিত। আর টানা বৃষ্টির কারণে জেলা শহর মাইজদীসহ সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে নতুন করে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় ২৪ ঘণ্টায়ও জেলায় বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।

বেগমগঞ্জের বাসিন্দা দিদার হোসেন বলেন, গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে বেশি কষ্টে আছে। কিন্তু চলাচলের পথ দুর্গম হওয়ায় আমরা ত্রাণ পাচ্ছি না। প্রশাসনের সঙ্গে ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রমে সমন্বয় না থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

কবিরহাটের কালামুন্সি উচ্চবিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ইকবাল মাহমুদ বলেন, এ আশ্রয়কেন্দ্রে ছোট একটি কক্ষে ৬টি পরিবার গাদাগাদি করে থাকছে। এর মধ্যে অনেকে নতুন করে আসছে আশ্রয়কেন্দ্রে। কিন্তু থাকার জায়গা নেই।

কোম্পানীগঞ্জের রানা নামে এক যুবক বলেন, বাবা হার্টের রোগী। বসতঘরে পানি উঠে যাওয়ায় সেখানে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। বসুরহাট বাজারে বাসা ভাড়ার জন্য রিকশা নিয়ে ঘুরছি। এ পরিস্থিতিতে বাসা ভাড়া পাওয়াও কঠিন।

লক্ষ্মীপুর, রায়পুর ও রামগতি : পানিবন্দি অধিকাংশ মানুষ চুরি-ডাকাতির ভয়ে বাড়িঘর ছাড়ছেন না। দুর্গম এলাকায় যারা বাড়িতে অবস্থান করছেন, তাদের অনেকের কাছেই ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিদিন হাজার হাজার প্যাকেট খাদ্য সহায়তা (ত্রাণ) দেওয়া হলেও যাতায়াতের দুর্ভোগসহ সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্গম এলাকায় অবস্থানকারীরা এর সুফল পাচ্ছে না। সদরের বাঙ্গাখাঁ গ্রামের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম বলেন, আমার ঘরসহ চারপাশ পানিতে ডুবে আছে। চুরি-ডাকাতি হওয়ার ভয়ে আমরা ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছি না। যাতায়াতব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় আমরা কোনো সহায়তাও পাচ্ছি না।

ত্রাণ বিতরণকারী স্বেচ্ছাসেবক মাহমুদুল হাসান বলেন, বুকসমান পানিতে দিঘলী ইউনিয়নে একটি দুর্গম এলাকায় ত্রাণ নিয়ে গিয়েছে। সেখানে ছকির ওপর দুইজন লোক বসে ছিল। এত পানির পরও তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। আমাদের আগে অন্য কেউও সেখানে ত্রাণ দিতে যায়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

রায়পুরে তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি সরে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতের চিহ্ন। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনো বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি।

এদিকে রামগতির কমলনগরে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চর কাদিরা ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলছেন, এমন দুর্বিষহ অবস্থা তারা আগে কখনো দেখেননি।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : বুধবার দুপুরে বন্যার পানিতে গোসলে নেমে সোয়াইব (২০) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা স্লুইসগেটে নৌকায় পিকনিক করতে এসেছিল সে। সোয়াইব ঢাকার ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার পৌর সদরের ঘোষগাতি মহল্লার আব্দুস সালাম বাবু মিয়ার ছেলে।

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) : শাহারাস্তিতে পানিবন্দি রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন  ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে শাক সবজির খেত, মাছের ঘের ও গবাদিপশুর খামার।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) :  কুলাউড়া ও রাজনগরবাসীর কাছে মনু নদী সর্বনাশা। এর ভয়াল স্রোতে বাড়িঘর, খেতখামার কোনো কিছুই আর অক্ষত থাকে না। স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙনে ২ উপজেলায় কয়েকশ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছেন। মেরামতের সামর্থ্য না থাকায় কেউবা ভাঙা ঘরে আবার কেউবা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : বুধবার দুপুরে বন্যার পানিতে গোসলে নেমে সোয়াইব (২০) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা স্লুইসগেটে নৌকায় পিকনিক করতে এসেছিল সে। সোয়াইব ঢাকার ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার পৌর সদরের ঘোষগাতি মহল্লার আব্দুস সালাম বাবু মিয়ার ছেলে।

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) : শাহারাস্তিতে পানিবন্দি রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন  ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে শাক সবজির খেত, মাছের ঘের ও গবাদিপশুর খামার।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) :  কুলাউড়া ও রাজনগরবাসীর কাছে মনু নদী সর্বনাশা। এর ভয়াল স্রোতে বাড়িঘর, খেতখামার কোনো কিছুই আর অক্ষত থাকে না। স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙনে ২ উপজেলায় কয়েকশ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছেন। মেরামতের সামর্থ্য না থাকায় কেউবা ভাঙা ঘরে আবার কেউবা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জয়ের ১২০৮ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেনে তদন্তে সিআইডি

বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ পাহাড়সম

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৫২ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪

দেশের বন্যা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুরসহ বেশির ভাগ জেলায় বাড়িঘর ও সড়ক থেকে পানি নামছে। তবে বানভাসিরা এখন পাহাড়সম দুর্ভোগের শিকার। বন্যায় অনেকের কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে। পাকা ঘরেও আসবাবপত্রসহ যাবতীয় সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাড়িঘর বসবাস উপযোগী করার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে তারা।

বন্যায় গবাদি পশু, হাস-মুরগি ও মাছের খামার ভেসে যাওয়ায় অনেকের অর্থনৈতিক অবলম্বনও শেষ হয়ে গেছে। কারও কারও দোকানে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এ অবর্ণনীয় ক্ষতি কীভাবে পোষাবেন, কীভাবে বছরের পর বছর গড়া বাসস্থানের নানা উপকরণ আবার জোগাড় করবেন, সেই দুশ্চিন্তায় পাগলপ্রায় অনেকে। পাশাপাশি অনেকের পেটে দানাপানি নেই। আশ্রয়কেন্দ্র বা প্রধান সড়কের আশপাশের বাসিন্দারা ত্রাণ পেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষই এখনো প্রয়োজনীয় খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন না। ফলে খেয়ে-না-খেয়ে সীমাহীন কষ্টে দিন কাটছে তাদের। এছাড়া অনেক এলাকায় এখনো সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। এদিকে নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার কোথাও কোথাও পানি কিছুটা কমলেও বৃষ্টির কারণে আবারও বেড়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী রেজা বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ৩১ জন মারা গেছেন। প্রায় ৫৮ লাখ ২২ হাজার ৭৩৪ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, দেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ১২ লাখ ২৭ হাজার ৫৫৪টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় মৃতদের মধ্যে কুমিল্লায় ১২, ফেনীতে ২, চট্টগ্রামে ৫, খাগড়াছড়িতে ১, নোয়াখালীতে ৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ এবং কক্সবাজারে ৩ জন। মৌলভীবাজারে দুই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয়দানের জন্য ৪ হাজার ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ৫ লাখ ৪০ হাজার ৫১০ জন লোক এবং ৩৯ হাজার ৫৩১টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুমিল্লা, ব্রাহ্মণপাড়া ও নাঙ্গলকোট : গোমতীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটেও মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। বুড়িচংয়ের কৃষক মনু মিয়া যুগান্তরকে বলেন, কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনটি গরু পালন করেছি। হঠাৎ গ্রামে পানি ঢুকে আমার সব শেষ হয়ে গেছে। শেষ সম্বল ৩টি গরু। তিনি বলেন, জানি না কোথায় নিয়ে যাব। আপাতত উঁচু কোনো স্থানে নিয়ে রাখব। পরে গাড়ি দিয়ে নিরাপদ কোনো স্থানে নিয়ে যাব। বাকশিমূল গ্রামের আবু সায়েম রনি বলেন, গ্রামে বুকসমান পানি। সবকিছু চোখের সামনে তলিয়ে গেছে। শুধু দুটি গরু নিয়ে বের হয়েছি। এখন এগুলো ট্রাকে করে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাব। নিজস্ব অর্থায়ন ও জনবল দিয়ে বুড়িচংয়ে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন সমাজসেবক ও রাজনীতিক এটিএম মিজানুর রহমান।

বুড়িচংয়ের রাজাপুর ইউনিয়নের দুর্গম আশ্রয়কেন্দ্র লড়িবাগ প্রাইমারি স্কুলে চিকিৎসাসেবা দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক তানভীর আহাদ জয় ও ডা. সাবরিনা মনসুর। তারা জানান, বন্যার কারণে অনেকে শ্বাসকষ্ট, কাশি, গলাব্যথা, বুকে ব্যথা, হাঁচিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে জেলার নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জে পানি এখনো কমছে না।

এদিকে নাঙ্গলকোটের শাকতলী দক্ষিণপাড়ার দিনমজুর আবুল কালাম বলেন, ৮-১০ দিন ধরে ঘরের ভেতর পানিবন্দি হয়ে আছি। রান্না করার কোনো ব্যবস্থা নেই। কোনো সাহায্যও পাচ্ছি না। সাতবাড়িয়া এলাকায় আম্বিয়া বেগম বলেন, পানির মধ্যে বসবাস করতে করতে হাত-পা সাদা হয়ে গেছে। ওষুধ খেতে পারছি না। কোনোরকম জীবন বাঁচিয়ে পড়ে আছি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, বন্যার পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে। আমরা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছি।

ফেনী: ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বন্যাকবলিত এলাকা। তবে অনেক এলাকায় খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকট এবং বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় বানভাসি মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, প্লাবিত ফেনী সদরের ৮টি ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম এবং পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার কোথাও কোথাও এখনো পানি রয়েছে। সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় ট্রলি ও ট্রাকে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে মানুষ। দাগনভূঞা ও সোনাগাজীতে পানি কমলেও কিছু স্থানে মানুষজন এখনো পানিবন্দি। এছাড়া সোনাগাজী ও ফেনী সদর উপজেলার কিছু এলাকায়ও পানি রয়েছে। কবলিত এলাকার এক নারী বলেন, হঠাৎ আমাদের গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। একটা জামা পরে বের হয়েছি। কিছুই নিতে পারিনি। আমাদের ঘরবাড়ি, বসবাসের সব নষ্ট হয়ে গেছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার যুগান্তরকে জানান, ফেনীতে ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিল। এর মধ্যে দেড় লাখ মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। বানভাসি মানুষের কাছে খাবার পৌঁছানো হচ্ছে। দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে খাবার দেওয়া হচ্ছে।

নোয়াখালী ও কোম্পানীগঞ্জ : স্থানীয়রা জানান, ২৪ ঘণ্টায় জেলার সেনবাগ, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলার বন্যা অপরিবর্তিত। আর টানা বৃষ্টির কারণে জেলা শহর মাইজদীসহ সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে নতুন করে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় ২৪ ঘণ্টায়ও জেলায় বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।

বেগমগঞ্জের বাসিন্দা দিদার হোসেন বলেন, গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে বেশি কষ্টে আছে। কিন্তু চলাচলের পথ দুর্গম হওয়ায় আমরা ত্রাণ পাচ্ছি না। প্রশাসনের সঙ্গে ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত ত্রাণ কার্যক্রমে সমন্বয় না থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

কবিরহাটের কালামুন্সি উচ্চবিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ইকবাল মাহমুদ বলেন, এ আশ্রয়কেন্দ্রে ছোট একটি কক্ষে ৬টি পরিবার গাদাগাদি করে থাকছে। এর মধ্যে অনেকে নতুন করে আসছে আশ্রয়কেন্দ্রে। কিন্তু থাকার জায়গা নেই।

কোম্পানীগঞ্জের রানা নামে এক যুবক বলেন, বাবা হার্টের রোগী। বসতঘরে পানি উঠে যাওয়ায় সেখানে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। বসুরহাট বাজারে বাসা ভাড়ার জন্য রিকশা নিয়ে ঘুরছি। এ পরিস্থিতিতে বাসা ভাড়া পাওয়াও কঠিন।

লক্ষ্মীপুর, রায়পুর ও রামগতি : পানিবন্দি অধিকাংশ মানুষ চুরি-ডাকাতির ভয়ে বাড়িঘর ছাড়ছেন না। দুর্গম এলাকায় যারা বাড়িতে অবস্থান করছেন, তাদের অনেকের কাছেই ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিদিন হাজার হাজার প্যাকেট খাদ্য সহায়তা (ত্রাণ) দেওয়া হলেও যাতায়াতের দুর্ভোগসহ সমন্বয়হীনতার কারণে দুর্গম এলাকায় অবস্থানকারীরা এর সুফল পাচ্ছে না। সদরের বাঙ্গাখাঁ গ্রামের গৃহবধূ রাবেয়া বেগম বলেন, আমার ঘরসহ চারপাশ পানিতে ডুবে আছে। চুরি-ডাকাতি হওয়ার ভয়ে আমরা ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছি না। যাতায়াতব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় আমরা কোনো সহায়তাও পাচ্ছি না।

ত্রাণ বিতরণকারী স্বেচ্ছাসেবক মাহমুদুল হাসান বলেন, বুকসমান পানিতে দিঘলী ইউনিয়নে একটি দুর্গম এলাকায় ত্রাণ নিয়ে গিয়েছে। সেখানে ছকির ওপর দুইজন লোক বসে ছিল। এত পানির পরও তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। আমাদের আগে অন্য কেউও সেখানে ত্রাণ দিতে যায়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

রায়পুরে তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি সরে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতের চিহ্ন। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনো বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি।

এদিকে রামগতির কমলনগরে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চর কাদিরা ইউনিয়নের বাসিন্দারা বলছেন, এমন দুর্বিষহ অবস্থা তারা আগে কখনো দেখেননি।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : বুধবার দুপুরে বন্যার পানিতে গোসলে নেমে সোয়াইব (২০) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা স্লুইসগেটে নৌকায় পিকনিক করতে এসেছিল সে। সোয়াইব ঢাকার ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার পৌর সদরের ঘোষগাতি মহল্লার আব্দুস সালাম বাবু মিয়ার ছেলে।

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) : শাহারাস্তিতে পানিবন্দি রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন  ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে শাক সবজির খেত, মাছের ঘের ও গবাদিপশুর খামার।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) :  কুলাউড়া ও রাজনগরবাসীর কাছে মনু নদী সর্বনাশা। এর ভয়াল স্রোতে বাড়িঘর, খেতখামার কোনো কিছুই আর অক্ষত থাকে না। স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙনে ২ উপজেলায় কয়েকশ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছেন। মেরামতের সামর্থ্য না থাকায় কেউবা ভাঙা ঘরে আবার কেউবা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) : বুধবার দুপুরে বন্যার পানিতে গোসলে নেমে সোয়াইব (২০) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া ইউনিয়নের রাউতারা স্লুইসগেটে নৌকায় পিকনিক করতে এসেছিল সে। সোয়াইব ঢাকার ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং উল্লাপাড়া উপজেলার পৌর সদরের ঘোষগাতি মহল্লার আব্দুস সালাম বাবু মিয়ার ছেলে।

শাহরাস্তি (চাঁদপুর) : শাহারাস্তিতে পানিবন্দি রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। এর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। বুধবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন  ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে শাক সবজির খেত, মাছের ঘের ও গবাদিপশুর খামার।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) :  কুলাউড়া ও রাজনগরবাসীর কাছে মনু নদী সর্বনাশা। এর ভয়াল স্রোতে বাড়িঘর, খেতখামার কোনো কিছুই আর অক্ষত থাকে না। স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙনে ২ উপজেলায় কয়েকশ পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছেন। মেরামতের সামর্থ্য না থাকায় কেউবা ভাঙা ঘরে আবার কেউবা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।