শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিচিতি, তাদের উপর নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের চিত্র, তৎকালীন পত্রিকার কাটিং, মুক্তিযুদ্ধকালীন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি প্রদর্শন করা হয়। এদের মধ্যে বুদ্ধিজীবী গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, সিরাজুল হক, সেলিনা পারভীনসহ শতাধিক শহীদ বুদ্ধিজীবীর ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে।
ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের বিষয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজক ও জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রুবেল বলেন, “১৪ই ডিসেম্বর বাঙালী জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ সময়ে পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় সুনিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালী জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য এ ঘৃণ্য চক্রান্ত করেছিল। তারা তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শিক্ষক, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, আইনজীবী সহ বহু মানুষকে পাখির মতো হত্যা করে। মহান স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমানের আহ্বানে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, আত্মদান ও দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়।”
তিনি আরো বলেন, “স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরও একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধীরা আজও দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজকের এদিনে স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ সকল বুদ্ধিজীবীকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমরা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কখনো ভুলবো না। দেশের সকল প্রজন্মের কাছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের গল্প পৌঁছানোর ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থেকে আমাদের এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন। পাশাপাশি আমরা যেসকল কুচক্রী মহল দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তাদের প্রতিহত করতে ছাত্র-জনতাকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি ঘাতকেরা এদেশের ১,১১১ জন বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। যাদের মধ্যে ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩ জন সাংবাদিক, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৪২ জন আইনজীবী ও ১৬ জন বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ছিলেন। প্রতিবছর তাদের স্মরণে এ দিনটিকে ‘জাতীয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।



















































