নিউজ ডেস্ক:
মূল নেতৃত্বের অনুপস্থিতিতে বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয় কোনো অদৃশ্য শক্তি চারপাশে পেঁচিয়ে ধরেছে বিএনপিকে। তাদের নানামুখী সংকটে এক রকম হাবুডুবু খাচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দি ছিলেন দীর্ঘদিন। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আদালতের দেয়া দণ্ড মাথায় নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। এ অবস্থায় দলটিকে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব যাদের, তারা কিছু করতে পারছেন না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, সক্রিয় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে চিন্তা ও কৌশলের অমিল, সমন্বয়হীনতা, নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ-অবিশ্বাস, একে অপরকে ল্যাং মারার প্রবণতা, মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের অনতিক্রম্য দূরত্ব, সাংগঠনিক দুর্বলতা, সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে অস্থিরতা, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে সৃষ্ট জটিলতাকে আরো জটিল করে তোলার মধ্য দিয়ে দলটি এক রকম দিশেহারা অবস্থায় রয়েছে। ফলে দলটির প্রাণশক্তি তৃণমূল কর্মীরা দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি, বিএনপির নিজস্ব জোট ২০ দলের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে গৃহদাহ।
বিএনপির অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করার বিষয়টি অপ্রকাশিত ছিলো না। বিশেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নে নির্বাচিতদের শপথ নেয়া না নেয়া বিষয়ে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আলামত স্পষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু বিএনপির নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ঠাকুরগাঁও-৩ থেকে নির্বাচিত দলীয় এমপি জাহিদুর রহমান শপথ নেয়ার পর দল ও বাইরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তাকে সঙ্গে সঙ্গে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেইসঙ্গে অপর নির্বাচিতদের হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়- কেউ যদি জাহিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন, তাহলে তাকেও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। তারাপরও চার এমপি শপথ গ্রহণ করেন। তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই শপথ নিয়েছেন- মহাসচিবের এ মন্তব্য সবাইকে হতবাক করে দেয়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলীয় এমপিদের শপথে সম্মতি না জানিয়ে উপায় ছিলো না তারেক রহমানের। কেননা এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিলো, দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই উল্লিখিত চারজন শপথ নিয়ে ফেলবেন। সেক্ষেত্রে দলের চেইন অব কমান্ড এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা নিয়ে মোটা দাগে প্রশ্ন দেখা দেবে। তাতে এটাও প্রকাশ হয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিলো, নেতাদের ওপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই আলগা হয়ে গেছে। তাই মুখ রক্ষার জন্যই শেষ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিদের্শনার কোরামিন দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিএনপি নামক দলটি নেতিবাচক রাজনীতির কারণে আজ জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত। যে দলের নেতাই দুর্নীতির ভারে ডুবে যাচ্ছে; সে দল কীভাবে সঠিক পথ খুঁজে পাবে। দুর্নীতির কারণে দলটি পথ হারিয়ে, জনগণ থেকে বিছিন্ন হয়ে এখন ব্যর্থতার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে।
























































