স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
চুয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অসহায় শত কৃষকের কার্ড জালিয়াতি কারায় ইউএনও’র কাছে প্রায় একশত কৃষক লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেছে। এঘটনায় এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়! লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেশ ব্যাপি সরকারি ঘোষনা বা বিধি মোতাবেক জেলা কৃষি কর্মকর্তা বা ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে গ্রামে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ধানচাষী বা কৃষকের কাছ থেকে কার্ডের বিনিময়ে নির্ধারিত মূল্যে সরকার সরাসরি ধান ক্রয় করবে। সে অনুযায়ি চুয়াডাঙ্গা সদরের ৩নং কুতুবপুর ইউনিয়নের জীবনা গ্রামের গরীব অসহায় ধান চাষীরা কার্ডের আশায় অধির আগ্রহে পথ চেয়ে আছে। কিন্তু দিনের পর দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও জেলা কৃষি কর্মকর্তা বা ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা কেউই জীবনা গ্রামে আসেনি। দিশা হারিয়ে কৃষকরা জীবনা গ্রামের বিশিষ্ট ও জন প্রিয় নেতা ৩নং কুতুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সভাপতি মিলন আলীর নিকট ঘটনা জানায়। গত ৭ই মে মঙ্গলবার তারিখে জীবনা গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক মিলন আলীকে সাথে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদরের ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে যথাক্রমে মোস্তাফিজুর রহমান ও তারিফ কর্মকর্তাদ্বয় জীবনা গ্রামের কৃষকদের একে অপরের কাছে বারংবার যেতে বলে ও বেশ কয়েক দিন ঘুরাইতে থাকে। পরে বিভিন্ন সুত্র থেকে এলাকার কৃষকদের সমস্ত কার্ড জেলা কৃষি কর্মকর্তা অফিসে জমা দিয়া শেষ হয়ে গেছে মর্মে অভিযোগকারি কৃষকরা জানতে পারে। পরে যুবলীগ সভাপতি মিলন আলীকে সাথে নিয়ে ১৩ই মে বুধবার চুয়াডাঙ্গা সদরের নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সাদিকুর রহমানের কাছে জীবনা গ্রামের প্রায় একশত কৃষক লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দায়ের করে।
সরেজমিনে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের কার্ডের বিষয়টি তদন্ত না করেই কিছু রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের সহযোগিতায় প্রকৃত ধানচাষীদের বাদ রেখে স্বজন প্রীতি দেখিয়ে প্রকৃত অসহায় ধান চাষিদের বাদ রেখে একাংশের কৃষকদের কার্ড জেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়ার বিরুদ্ধে সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদ্বয় মোস্তাফিজুর রহমান ও তারিফের বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দায়ের করে ঐ গ্রামের কৃষকরা। অভিযোগ পত্রটি নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সাদিকুর রহমান (ইউএও) আমলে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ি গ্রামে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ধানচাষী বা কৃষকের কাছ থেকে যাচায় বাছায় পূর্বক কার্ডের ব্যাবস্থা করতে হবে, অন্যপন্থায় কার্ড সংগ্রহ করলে সেটার গ্রহনযোগ্যতা পাবেনা বলে ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সভাপতি মিলন আলী ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুর রহমান রিঙ্কুকে জানায় ৩নং কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়াম্যান হাসানুজ্জামান মানিক। এ বিষয়ে ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জীবনা গ্রাম তার দায়িত্বে নেই মর্মে জানায়। আবার আরেক ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তা তারিফ দায়িত্বরত পুরো এলাকায় মাইকিং করে ও খবর দিয়ে সব কৃষকদের সমস্ত কার্ড জেলা কৃষি কর্মকর্তা অফিসে গত ৫ই মে ২০২০ ইং তারিখে জমা দিয়া শেষ হয়ে গেছে বলে জানায়। তিনি বলেন, আমরা উদ্ধতন কর্মকর্তার আদেশ অনুযায়ি কাজ করি, কৃষকদের কার্ডের বিষয়ে আমার কিছুই করার নেই। এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক, জেলা কৃষি কর্মকর্তা ও প্রেসক্লাবে অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে ও সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়ায় নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব সাদিকুর রহমান মহোদয়কে এলাকার অসহায় কৃষকরা আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।
উল্লেখ্য, দেশ ব্যাপি সরকারি ঘোষনা মোতাবেক জেলা কৃষি কর্মকর্তা বা ইউনিয়ন সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে গ্রামে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ধানচাষী বা কৃষকের কাছ থেকে যাচায় বাছায় পূর্বক কার্ডের বিনিময়ে নির্ধারিত মূল্যে সরকার সরাসরি ধান ক্রয় করবে। কৃষি উপকরণসহ সব ধরনের সরকারী সহায়তা সহজভাবে পেতে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচীর আওতায় সারা দেশে এক কোটি ৮২ লক্ষ কৃষক কৃষি কার্ড পাবেন। তবে এবারে প্রথম পর্যায়ে বোরো মওসুমে সেচের জন্যে ডিজেল কেনায় ভর্তুকি বাবদ নগদ অর্থ দেয়া হবে প্রায় এক কোটি কৃষককে।