জীবননগরে বিদেশে মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা
নিউজ ডেস্ক:বিদেশে ভালো কাজ ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ভিসা দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে জীবননগরের মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মাসুদ রানা জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের মমিন উদ্দিনের ছেলে।বিদেশে ভালো কাজ ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ভিসা দিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে জীবননগরের মাসুদ রানার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মাসুদ রানা জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সেনেরহুদা গ্রামের মমিন উদ্দিনের ছেলে। ভুক্তভোগী এক পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি জীবননগর পৌর শহরের হাইস্কুল পাড়ার আজাদ হোসেনের ছেলে আকমল সাঈদকে ইরাকে ভালো কাজ দেওয়ার নাম করে তাঁর নিকট থেকে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মাসুদ রানা। পরবর্তী সময়ে তাঁকে ইরাকে পাঠানো হলেও ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় তাঁকে দুই মাস কোনো কাজকর্ম না দিয়ে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়। গত ১৮ আগস্ট ভুয়া কাগজপত্রে অবৈধভাবে ইরাকে প্রবেশ করায় তাঁকে ইরাকের পুলিশ আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে আটক আছেন সাঈদ। এ ঘটনার পর সাঈদের বাবা আজাদ হোসেন বাদী হয়ে মাসুদ রানার বিরুদ্ধে গত ৫ সেপ্টেম্বর জীবননগর থানায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নম্বর ৪। সাঈদের বাবা আজাদ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে বেকার থাকা অবস্থায় মাসুদ রানা তাঁকে ইরাকে ভালো কাজ আর মোটা অঙ্কের বেতন দেওয়ার কথা বলে আমার নিকট থেকে ৪ লাখ টাকা নেয়। আমার শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে মাসুদের হাতে টাকা দিয়ে আসি। কিন্তু সে আমার ছেলেকে ইরাকে পাঠালেও তাকে কোনো কাজ দেয়নি বরং তাকে দুই মাস যাবৎ একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরবর্তীতে ওই দেশের পুলিশ আমার ছেলেকে অবৈধভাবে ইরাকে প্রবেশ করার অপরাধে আটক করে রেখেছে। আমি আমার ছেলে এবং টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।’ এদিকে, একই অভিযোগ করেন এ উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বকুলের ছেলে সোহেল ও আরিফ। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, মাসুদ রানা, তাঁর পিতা মমিন উদ্দিন এবং স্থানীয় নামধারী এক সাংবাদিক এলাকার বেশকিছু বেকার যুবককে বিদেশে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজে আলিসান বাড়িতে সুখে জীবন-যাপন করলেও হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন ভুক্তভোগী বেকার যুবকেরা। এমনকি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী অনেক অসহায় পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি বিদেশে পাঠানোর নাম করে টাকা নিয়েছি, তা ঠিক। তাদের তো ইরাকে পাঠিয়েছি, সাময়িক কিছু সমস্যা হয়েছে, তা সমাধান করেছি।’ উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাসুদ রানার বিরুদ্ধে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বিচারের দিন এলেই তিনি এলাকা থেকে পালিয়ে যান। তিনি বেশকিছু যুবককে বিদেশে পাঠিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েক যুবক বাড়িতে চলে এসেছেন, আর কিছু যুবক বিদেশে আটক রয়েছেন। জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ গনি মিয়া বলেন, বিদেশে নিয়ে যাওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাসুদ রানা নামের একজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।