অধিদপ্তর থেকে তদন্ত আসার খবরে নির্বাহী প্রকৌশলীর কান্ড!
ফলোচার্ট: ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগে ভুয়া বিল ভাউচারে ১০ কোটি টাকা লোপাট!
নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ এখন নিজেই ঠিকাদার সেজেছেন। পত্রিকায় কাজ না করে ১০ কোটি টাকার বিল উত্তোলনের তথ্যভিত্তিক খবর প্রকাশিত হলে তিনি এখন নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন সরকারি ভবনের মেরামত ও বৈদ্যুতিক কাজ শুরু করেছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঝিনাইদহের একদল গণমাধ্যমকর্মী সরেজমিন দেখতে পান, নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁর নিজ বাসভবনের সীমানা প্রাচীর উঁচুকরণ কাজ করছেন। এ ছাড়া তিনি ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়া ডরমেটরি ভবন, নন-গেজেটেড ডরমেটরি ভবন, জেলা জজের বাসা, সাবডিভিশন অফিস, গণপূর্তের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসাসহ বিভিন্ন অফিস তড়িঘড়ি করে রং-চং শুরু করেছেন।
গণপূর্ত বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বিভিন্ন পত্রিকায় কোটি কোটি টাকা লোপাটের খবর প্রকাশিত হলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেওয়ায় কথা বলা হয়। তদন্ত দল আসার আগেই দুর্নীতিবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ নিজ উদ্যোগে এসব কাজ শুরু করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহা গত ২ অক্টোবর ‘ভুয়া কাজ ও বিল ভউচারে লোপাট ১০ কোটি টাকার বিষয়ে তদন্ত প্রসঙ্গে’ শিরোনামে একটি চিঠি ইস্যু করেন। তদন্তপূর্বক তিন কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামত প্রেরণ করার জন্য তদন্ত দলকে নির্দেশ দিলে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ বিপাকে পড়েন। তাঁর সীমাহীন দুর্নীতি আড়াল করার জন্যই তিনি নিজ উদ্যোগে প্রায় ৪০টি সরকারি ভবন মেরামত ও বৈদ্যুতিক কাজ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, ঝিনাইদহ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাব স্টেশনের যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও স্থাপনকাজের টেন্ডার বাতিল করে সেই কাজের আবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে বলে নতুন করে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্রমতে, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের ১৭২ নম্বর স্মারকে ঢাকার মেসার্স লিজা এন্টারপ্রাইজের টেন্ডারটি বাতিল করা হয়। কিন্তু মাসিক ক্যাশ হিসাব রেজিস্টারে দেখা গেছে, বাতিল হওয়া কাজের বিপরীতে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৬ জুন গ-০১৯৬০৩ নম্বর চেকের মাধ্যমে মেসার্স লিজা এন্টারপ্রাইজকে এই টাকা দিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখ।
অধিদপ্তর থেকে তদন্ত আসার খবরে নতুন করে কাজ শুরু করা ও বাতিল টেন্ডারে বিল দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে শাঈখের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ার তার সরকারি বাসভবনে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।