নিউজ ডেস্ক:
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, তিস্তার পানি চুক্তির প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ নিয়ে ভারত সরকার কাজ করছে। শিগগিরই এ চুক্তি সম্পন্ন হবে।গতকাল রবিবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সঙ্গে প্রায় ২২ কোটি টাকার একটি চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হর্ষ বর্ধণ শ্রিংলা বলেন, ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তি অনেক সহজতর করা হয়েছে। আগে ই-টোকেন প্রয়োজন হতো। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আরও সহজ করা হচ্ছে। বাস-ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করলেই ভিসা দেওয়া হবে।
বিকেলে রাজশাহী নগর ভবনে ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে রাজশাহীর সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশ উন্নয়নে কাজের জন্য ভারতের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী মহানগর এলাকায় অবস্থিত প্রত্নতত্ত্বের অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংরক্ষণে ভারত সরকার ২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার অনুদান দিচ্ছে। এরই চুক্তি স্বাক্ষর করেন রাসিকের পক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আযিম, সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহ মো. আমিনুল হক এবং ভারতের পক্ষে হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের তিনটি নগরীর (রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট) উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় আজকের এ চুক্তি সম্পাদিত হলো। রাজশাহীতে এসে যে সম্মান ও অভ্যর্থনা আমাকে দেওয়া হলো তাতে আমি গর্বিত ও আনন্দিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তির জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও ভারতীয় সেনাবাহিনী একসঙ্গে রক্ত দিয়েছে। রাজশাহী ও এর আশেপাশের এলাকায়ও যুদ্ধ হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধী যে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের মোদি সরকার সে সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত সরকার সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহ মোহাম্মদ আমিনুল হক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মুনির হোসেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পদ্মা ও গঙ্গা দুই পারের মানুষের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এই দুই পারের মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এপারের রাজশাহী ও ওপারের (ভারতের) বহরমপুরের মধ্যে অচিরেই সরাসরি বাস যোগাযোগ চালু করা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এই দুই অংশের মানুষের মধ্যে ট্রেন সার্ভিস চালুর ক্ষেত্রেও বেগ পেতে হবে না।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য যারা যান, ভিসা পেতে তাদের অনেক সময় নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। ভবিষ্যতে যাতে ভিসা পেতে নাগরিকদের ভোগান্তি না হয় এ জন্য ভারতীয় হাই কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।