মো.ফরিদ উদ্দিন, লামা প্রতিনিধি: বান্দবানের লামায় নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই ফের লামা পৌর এলাকার কলিঙ্গাবিল থেকে লাইনঝিরি পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে গেছে। আবার সড়কের ওপর গজে ওঠেছে বিভিন্ন রকমের দুভা ঘাস। এত করে বর্ষায় পুরো সড়কটি ভেঙ্গে তছনছ হয়ে চলাচলের অনুপযোগি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কাজটি বাস্তবায়ন করছে। এর আগেও এ দপ্তরের অধীনে লামা বাজার থেকে মিশনঘাট পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের কারণে ধসে পড়ে। একের পর এক সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলতে থাকলেও, ‘যেন দেখার কেউ নেই’। এতে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি সরকারের ভাবমূতি চরমভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে রক্ষণাবেক্ষণ বরাদ্দের আওতায় কলিঙ্গাবিল থেকে লাইনঝিরি পর্যন্ত ৩ হাজার ৪০০ মিটার চেইনেজ কাজ বাস্তবায়নের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। বান্দরবান সদরস্থ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিশান ট্রেডার্স কাজটি পায়। ৬৬ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে কাজ বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারী নুরুল আবচারের সাথে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চুক্তিবদ্ধ হয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে ৭০শতাংশ কাজ শেষ হয়।
সরজমিন পরিদর্শনে গেলে সাবেক বিলছড়ির মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা সাহেব আলী, মিনজাহ উদ্দিন, মনির হোসেন মো. খোরশেদ ও আলী আজগরসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে চলেছে। ফলে সড়কটি টেকসই হবেনা। বিটুমিন ঢালাইয়ের পর প্রয়োজনমত ফিনিশিং করা হচ্ছেনা। এছাড়া সড়ক পরিস্কার না করেই কাদামাটিসহ বিটুমিন ঢালাই দেয়া হচ্ছে। পরিমাণে কম বিটুমিন দেওয়ার কারণে রাস্তার কাজ শেষ না হতেই সড়কের ওপর গজে ওঠেছে ঘাস। ধসে পড়ছে সড়কের বিভিন্ন অংশ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এসব অপকর্মে সহযোগিতা করে চলেছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বরতরা। তারা আরও বলেন, সড়কের তাহের মিয়ার দোকান থেকে সাবেক বিলছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত কাজে পরিমাণে বিটুমিন কম ব্যবহারের কারণে অধিকাংশ স্থানে ঘাস গজে ওঠেছে। পাশাপাশি দু’পাশের ৪-৫টি স্থানে ধসে গেছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে কাজ ফেলে যাওয়ার হুমকিও দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের কারণে বর্ষায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে বলেও জানান তারা।
কাজ শেষ হওয়ার আগে সড়ক ধসে পড়া ও ঘাস গজে ওঠার সত্যতা স্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিশান ট্রেডার্সের পক্ষে মো. আবুল কালাম বলেন, বৃষ্টির কারণে সড়ক ভেঙ্গে গেছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়া স্থানগুলো সংস্কার করা হবে। এদিকে পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন বলেন, জনসাধারণের কথা চিন্তুা করে নিজ উদ্যোগে উদ্যোগেই ধসে পড়া স্থানগুলো সংস্কার করে নিয়েছি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলা সার্ভেয়ার মো. জাকের হোসেন মোল্লা বলেন, বৃষ্টির কারণে সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে গেছে। পরে এসব সংস্কার করে নেওয়া হবে।