চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : জীবননগরের বাজারে প্রচুর আমের মজুদ থাকলেও নেই ক্রেতা। দাম কম থাকায় লোকসানের আশঙ্কায় হতাশ হয়ে পড়েছে চাষীরা। জীবননগর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যনুযায়ী জানা গেছে, চলতি বছর জীবননগর উপজেলায় প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা থেকে ৪ হাজার ৬০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে জীবননগর পৌর শহরের ইসলামী ব্যাংকের পিছনে অবস্থিত সব চাইতে বড় আম বাজার ঘুরে আম বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর প্রতি মণ আ¤্রপালি ও মল্লি¬কা জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৬’শ টাকা থেকে ৮’শ টাকায়। যা গতবারের চেয়ে অর্ধেক দাম।
স্থানীয় চাষীরা জানান, হিমসাগর আমের মৌসুম শেষ। আ¤্রপালি ও মল্লি¬কা জাতের আম এখন পাইকারি ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা দরে। তারা বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর জীবননগরে আমের দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের আম চাষীরা। গত বছর আম চাষ করে লাভের মুখ দেখলেও এ বছর লোকসান গুনতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। আর এর কারণ হিসেবে তাপদাহ, রমজান, আম বাজারের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতারণা ও প্রশাসনের আম পাড়া এবং বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করছেন অনেকে।সীমান্ত ইউনিয়নের কয়া গ্রামের আম চাষী শরিফুল ইসলাম বলেন, বিগত বছরগুলোতে আমের মৌসুম শুরুর আগেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ব্যাপারীরা আম কেনার জন্য আসতেন। কিন্তু এবার কেউ আসছেন না। তিনি বলেন, গত বছর যে আম বাগান ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলাম এবার তা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি।
মৌসুমী ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান জানান, ৭ লাখ টাকা খরচ করে একটি বাগান নেন তিনি। সম্প্রতি জীবননগর আম বাজারে বিক্রির জন্য আ¤্রপালি জাতের আম আড়তে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু যে দরে আম বিক্রি হচ্ছে, তাতে লাভ তো দুরের থাক উৎপাদন খরচ উঠছে না।
জীবননগর বাজারের আমের আড়তদার মুন্সী মানিক জানান, প্রতি মৌসুমে আম বিক্রি থেকে কয়েক লাখ টাকা আয় হলেও এ বছর আম ক্রয় করার মত তেমন কোন ক্রেতা নেই এক কথায় এ বছর আম বাজারে ক্রেতা শুন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আম বাগান মালিক, মৌসুমী ব্যবসায়ী ও আড়তদার সকলেই পথে বসবে।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ জানান, জীবননগর বাজারে আমের দাম না থাকার বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাজারে আমের দাম কমে যাওয়ায় প্রকৃত আম চাষী ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমের দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বর্তমান সময়ের মত যদি আম বাজার চলতে থাকে তা হলে আম চাষীরা আম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।