নিউজ ডেস্ক:
ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। দুই মহানগরীর নেতারা দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নাম জমা দিয়েছেন কেন্দ্রে।
কেন্দ্র থেকেই শুরু হয়েছে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ। যে কোনো সময় ঘোষণা করা হবে বহুল প্রতীক্ষিত থানা-ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। মহানগরী ও কেন্দ্রের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরী আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। এর তিন বছর তিন মাস পর ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ এবং ৪৫টি থানা ও ১০০ ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। এরপর গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগরী উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে মহানগরী উত্তর-দক্ষিণের
অন্তর্গত ৪৫টি থানা, ১০০ ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোয় এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এ কারণে থানা-ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারা চরম হতাশ। তাদের অনেকের মধ্যেই রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা কাজ করছে।
কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন কমিটি গঠনের এ দীর্ঘসূত্রতার কারণে ত্যাগী ও নিবেদিত নেতা-কর্মীরা প্রত্যাশিত পদ পাবেন না। বরং দলে নতুন আগত অনেকে পদ-পদবি বাগিয়ে নেবেন। তবে খুব শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানার তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ করে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। কেন্দ্র অনুমোদন করলেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করব। আশা করি খুব তাড়াতাড়িই ঘোষণা করা সম্ভব হবে। ’ আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পুরোপুরি কমিটি জমা না পেলেও অধিকাংশ হাতে পেয়েছি। এ নিয়ে কিছু অভিযোগ এসেছিল। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ নিয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খানের পরামর্শ নিয়ে ফাইনাল করা হবে। ’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের একাধিক নেতা বলেন, অনৈতিক লেনদেনের ফয়সালা না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হচ্ছে না। কেননা ত্যাগী-নিবেদিতরা টাকা দিয়ে পদ-পদবি কিনবেন না। আবার কমিটি গঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বাণিজ্য ছাড়া পূর্ণাঙ্গ কমিটি করবেন না। একে তো তারা নিজের লোক খুঁজছেন আবার টাকার বিনিময়ে অনেককে পদ দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। তাই ত্যাগীদের মূল্যায়ন ও পদ-পদবির বাণিজ্যের সমন্বয় না হওয়ায় বার বার কমিটি আটকে যাচ্ছে। উত্তরের কয়েকটি থানা ও ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হলেও এ ধরনের অভিযোগ ওঠায় পরে তা বাতিল করা হয়। বাতিলকৃত কমিটিগুলোয় অবৈধ আর্থিক লেনদেন, পছন্দের লোকদের দিয়ে পকেট কমিটি গঠন এবং বিএনপি-জামায়াতসহ বিতর্কিতদের কমিটিতে স্থান করে দেওয়ার মতো গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ ছিল। তবে কমিটিতে জামায়াত-বিএনপির জায়গা হবে না জানিয়ে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেন সময়ের ভূমিকা, বিগত দিনের কর্মকাণ্ড দেখেই কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে। জামায়াত-বিএনপি বা হাইব্রিড কাউকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে না বলেই যাচাই-বাছাইয়ে সময় লেগেছে। দল ও নেত্রীর প্রতি অনুগতরাই ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের থানা-ওয়ার্ড কমিটিতে স্থান পাবেন। ’ ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা কমিটি গঠনের কাজ শেষ করে কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। কেন্দ্র পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করলেই ঘোষণা করা হবে। ’ খুব বেশি দিন লাগবে না বলেও জানান তিনি।
( বিডি প্রতিদিন )