সূত্রে জানা যায়, এলজিইডির অধীন গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন বাগাতিপাড়া পৌরসভা মালঞ্চি স্টেশন থেকে ঘোরলাজ পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার কাজটির জন্য টেন্ডার আহবান করে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৯৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের কাজ জুলাই ২০১৬ তে শুরু হয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ করার কথা। গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন প্রকল্পের এই কাজটি দরপত্রের মাধ্যমে পান ফরিদপুর জেলা সদরের রাফিয়া কনস্ট্রাকশন ঠিকাদার ইমতিয়াজ হোসেন রুবেল। রাস্তাটি মালঞ্চি স্টেশন থেকে শুরু হয়ে বাজারের ভিতর দিয়ে উপজেলা পরিষদ, ইউএনও অফিস, ভূমি অফিস ও হাসপাতালের সামনে দিয়ে ঘোরলাজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার। প্রকল্পটিতে রাস্তার পাশাপাশি ড্রেন নির্মানের কাজও রয়েছে। রাস্তার কাজে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন নিম্নমানের ইট, খোয়াসহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
সরজমিনে এলাকা ঘুরে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী রাস্তার দুই সাইটে এজিং এর জন্য নতুন ইট ব্যবহার করার কথা থাকলেও রাস্তাটিতে থাকা পুরাতন ইটই পুণরায় তুলে একই স্থানে বসানো হয়েছে । এছাড়া রাস্তার জন্য এক নম্বর খুয়া ধরা আছে কমপ্যাক্ট ৪ ইঞ্চি লুজ ব্যবহারের কথা থাকলেও সবচেয়ে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এছাড়াও অগ্রণী ব্যাংকের সামনের আংশিক ড্রেনেজ নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাগাতিপাড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুর রউফ প্রাং জানান, রাস্তাটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে আমি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে সর্তক করেছি। ঠিকাদার যদি পুণরায় দরপত্রের শর্তভঙ্গ করে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
বাগাতীপাড়া পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেন জানান, ড্রেন ও রাস্তার কাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ডেকে সর্তক করেছি এবং দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কাজ না করলে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, ‘কাজ এতোটাই নিম্নমানের যে, আমি গাড়ী নিয়ে গেলে চাকার সাথে ইট ও খুয়া উঠে যাচ্ছে। ‘ বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন বলে জানান।
নিম্নমানের কাজের সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘চলমান কাজটি নিম্নমানের ইট দিয়ে হচ্ছে এতে কোন সন্ধেহ নেই। রাফিয়া কনস্ট্রাকশন ঠিকাদার ইমতিয়াজ হোসেন রুবেলের প্রতিনিধি ঠিকাদার জাঙ্গাঙ্গীর আলম জানান, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনিয়মের সুযোগ নেই।
এব্যপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ রাজ্জাকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি এখনই বাগাতিপাড়া ইউএনও দেখবে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেয়রকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমারা কেওই দায়িত্বে থেকে দায়িত্বে অবহেলা করতে করতে পারিনা।
এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রভাস কুমার বিশ্বাস জানান, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে উন্নয়নের নামে হরিলুট বরদাস্ত করা হবে না।