নিউজ ডেস্ক:
গানেই শুরুটা করেছিলেন। শেষটাও যেন গানের মতই হল। প্রখ্যাত ব্রিটিশ গায়ক জর্জ মাইকেল মারা গেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের গোরিংয়ে নিজের বাসায় মৃত্যুবরণ করেন এই শিল্পী।
পপ সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদপিণ্ডে পেরেক ঠুকে সময়ের আগেই চলে গেলেন ব্রিটিশ সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব জর্জ মাইকেল। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তবে ঠিক কী কারণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর, তা এখনও জানা যায়নি। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
রোববার রাত ১১টার দিকে এক বিবৃতিতে তারকার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার মুখপাত্র। তবে পুলিশ বলেছে, এই মৃত্যুকে ঘিরে তারা সন্দেহজনক কোনো কিছু পায়নি।
লন্ডনের ফিনসলেতে জর্জ মাইকেলের জন্ম। দীর্ঘ পথ চলার পর অবশেষে অ্যান্ড্রু রিজলে-এর সঙ্গে সাক্ষাৎই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। রিজলের সঙ্গে তৈরি করেন ‘হোয়্যাম’ গানের দল। কয়েকটি ফ্লপ অ্যালবামের পরে ‘মেক ইট বিগ’ তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ‘ওয়েক মি আপ বিফোর এউ গো গো’ হয়ে ওঠে ‘৮০-র দশকের যুবাকুলের অ্যান্থেম।
’৮০-এর দশকে অন্যতম সেরা পপ গায়কের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন তিনি। একদিকে গায়ক, অন্যদিকে সুরকার এবং গীতিকার, সঙ্গীত জগতের এই তিন ক্ষেত্রেই সমানভাবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন জর্জ মাইকেল। ১৯৮৭-এ রিলিজ করা তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘ফেথ’ সারা বিশ্বে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল। সেই সময় দাঁড়িয়ে ২০ মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি হয় অ্যালবামটির। এরপর ‘লাস্ট ক্রিসমাস’, ‘ফাদার ফিগার’, ‘আই ওয়ান্ট ইউর সেক্স’, একের পর এক গান তাঁকে আন্তর্জাতিক পপ দুনিয়ায় পরিচিত মুখ করে তোলে। ২০১০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে তাঁর আ্যালবাম বিক্রির পরিমাণ ১০০ মিলিয়নের। ১৯৮৪-তে তাঁর অন্যতম সফল গান ‘কেয়ারলেস হুইস্পার।’ যা আজও পপ সঙ্গীতপ্রেমীদের মুখে মুখে ঘোরাফেরা করে।
১৯৯৮ সালে তিনি নিজেকে সমকামী ঘোষণা করেন। পরবর্তী সময়ে একাধিক ড্রাগ সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। জেলের চার দেওয়ালের মধ্যেও বেশ কিছুদিন কাটাতে হয় তাঁকে।
যদিও এই সমস্তকিছু তাঁর সঙ্গীত জীবনে কোনওরকম প্রভাব ফেলতে পারেনি। ‘বিলবোর্ড হট হানড্রেড টপ অল-টাইম আর্টিস্ট’-এর মতে জর্জ মাইকেল ৪০তম স্থানে রয়েছেন। দীর্ঘ ৩০ বছরের সঙ্গীত জীবনে বহু পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে রয়েছে। তিনি ৮ বার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন। ২ বার সেই অ্যাওয়ার্ডও পান তিনি।
জর্জের জনপ্রিয় দুটি গানের ভিডিও