শিরোনাম :
Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে কবরস্থ করতে দেওয়া শিশু মৃত নয়, জীবিত! Logo “শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা” – ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান Logo সিরাজগঞ্জে বসতবাড়ির জমি দখলের হুমকির অভিযোগে জিডি Logo  ইবির পাঁচ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার Logo ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ Logo সুন্দরবনে বন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৫ জেলে আটক  ৩টা নৌকা, জাল, বিষের বোতল সহ মাছ জব্দ 

দু’বাংলার মিলনমেলায় মুখরিত ঠাকুরগাঁও সীমান্ত এলাকা

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০২:৪৮:০৩ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৭
  • ৭৬৫ বার পড়া হয়েছে

Made with Square InstaPic

মোঃ আরিফ জাওয়াদ, ঠাকুরগাঁও থেকে: বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) উপলক্ষে ঠাকুরগাঁও এর পৃথক দুই উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দু’বাংলার মানুষের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাখো বাঙালীর পদভারে মুখরিত সীমান্ত এলাকা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর সহযোগিতায় শনিবার (১৫ই এপ্রিল) ওই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সঙ্গে ভাগ হয়ে যায় উভয় দেশের হাজার হাজার পরিবার। কাঁটাতারের বেড়ার দুই পাশে কেউ কাউকে স্পর্শ করে দেখতে না পারলেও চোখের দেখাতেই ছিল যেন দুপারের বাঙালীর মাঝে ছিল প্রশান্তির ছাপ।

দুই দেশে বসবাস করলেও দীর্ঘদিন পর নাড়ীর টানে বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, চাচা-চাচী, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে দীর্ঘদিনের জমে থাকা অব্যক্ত ভাবভাষা বিনিময়ের জন্যই এই মিলন মেলা। সঙ্গে ছিল উভয় পারের মানুষের পণ্য আদান প্রদান।

Made with Square InstaPic

ঠাকুরগাঁও জেলার জগদল, ধর্মগড়, ডাবরি সীমান্তবর্তী এলাকার শূন্য রেখায় দুই বাংলার এই মিলনমেলা বসে। ১৫ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ছিল দুই বাংলার ওই মিলন মেলা।

হঠাৎ আকস্মিক বৃষ্টি পণ্ড করে দেয় মেলা। আধা ঘণ্টা পর বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাস কিছুটা কমে যাওয়া মাত্র মিলন রূপ নেয় সমুদ্র স্রোতে।

একে অন্যকে হাত বাড়িয়ে কাছে টানার চেষ্টা করলেও কাঁটা তার যেন বাঁধার নাম। অনেকে সীমান্ত দরজা ছোট ফোকর দিয়েই স্পর্শ করাই যেন প্রশান্তি। আনন্দে কান্নায় ভেঙে পড়া, দেখা-সাক্ষাৎ, কথোপকথন আর খোশগল্পে মেতে উঠে হাজারো মানুষ।

স্বজন ও পরিজনকে দেখে আবেগে কেঁদে ফেলেন অনেক মানুষ। হরিপুর উপজেলার কাড়িগাঁও গ্রামের আঞ্জুমান বাবা-মাকে দেখে কান্নায় আত্মহারা হয়ে পড়ে। সঙ্গে করে আনা বাবার জন্য লুঙ্গি-পাঞ্জাবী আর মার জন্য আনা শাড়ি কাঁটা তারের উপর দিয়ে ফিকিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়েই, যেন দুঃখ ঘুচিয়ে দেয় ওইসব উপহার।

এদিকে একই উপজেলার মীনাপুর গ্রাম থেকে লাঠির উপর ভর দিয়ে এসেছে ষাটোর্ধ্ব সাহেরা বেগম। ভাইদের এক পলক দেখার জন্য, সঙ্গে নিয়েছে রুটি পায়েস ও গরুর মাংস।

সাহের বেগম বলেন, ভাইকে অনেক দিন ধরে দেখি নাই। আর মেলাতে গেলেই দেখা হয় তাদের সাথে। ভাই গরুর মাংস পছন্দ করে তাই মাংস হিসেবে গরুর মাংস নিয়ে এসেছেন, বলে জানান ওই বৃদ্ধা।

আবুল কালাম নামে এক বাংলাদেশী যুবক জানায়, যদি সীমান্তের দরজাগুলো এই দিনে খুলে দেওয়া হত তাহলে তাদের জড়িয়ে ধরার তৃষ্ণা ও জিনিসপত্র আদান-প্রদানের সমস্যাটা ঘুচে যেত।

সরেজমিনে গিয়ে- বিজিবি, বিএসএফ সহ পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টন করার চিত্র পরিলক্ষিত হয়। এ মিলনমেলা একদিন থেকে দুইদিনে উন্নীত করা জন্য বিজিবি আর বিএসএফকে আহ্বান জানায় দু’পারের বাঙালী।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান

দু’বাংলার মিলনমেলায় মুখরিত ঠাকুরগাঁও সীমান্ত এলাকা

আপডেট সময় : ০২:৪৮:০৩ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৭

মোঃ আরিফ জাওয়াদ, ঠাকুরগাঁও থেকে: বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) উপলক্ষে ঠাকুরগাঁও এর পৃথক দুই উপজেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দু’বাংলার মানুষের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাখো বাঙালীর পদভারে মুখরিত সীমান্ত এলাকা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর সহযোগিতায় শনিবার (১৫ই এপ্রিল) ওই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সঙ্গে ভাগ হয়ে যায় উভয় দেশের হাজার হাজার পরিবার। কাঁটাতারের বেড়ার দুই পাশে কেউ কাউকে স্পর্শ করে দেখতে না পারলেও চোখের দেখাতেই ছিল যেন দুপারের বাঙালীর মাঝে ছিল প্রশান্তির ছাপ।

দুই দেশে বসবাস করলেও দীর্ঘদিন পর নাড়ীর টানে বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ি, চাচা-চাচী, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে দীর্ঘদিনের জমে থাকা অব্যক্ত ভাবভাষা বিনিময়ের জন্যই এই মিলন মেলা। সঙ্গে ছিল উভয় পারের মানুষের পণ্য আদান প্রদান।

Made with Square InstaPic

ঠাকুরগাঁও জেলার জগদল, ধর্মগড়, ডাবরি সীমান্তবর্তী এলাকার শূন্য রেখায় দুই বাংলার এই মিলনমেলা বসে। ১৫ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত ছিল দুই বাংলার ওই মিলন মেলা।

হঠাৎ আকস্মিক বৃষ্টি পণ্ড করে দেয় মেলা। আধা ঘণ্টা পর বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাস কিছুটা কমে যাওয়া মাত্র মিলন রূপ নেয় সমুদ্র স্রোতে।

একে অন্যকে হাত বাড়িয়ে কাছে টানার চেষ্টা করলেও কাঁটা তার যেন বাঁধার নাম। অনেকে সীমান্ত দরজা ছোট ফোকর দিয়েই স্পর্শ করাই যেন প্রশান্তি। আনন্দে কান্নায় ভেঙে পড়া, দেখা-সাক্ষাৎ, কথোপকথন আর খোশগল্পে মেতে উঠে হাজারো মানুষ।

স্বজন ও পরিজনকে দেখে আবেগে কেঁদে ফেলেন অনেক মানুষ। হরিপুর উপজেলার কাড়িগাঁও গ্রামের আঞ্জুমান বাবা-মাকে দেখে কান্নায় আত্মহারা হয়ে পড়ে। সঙ্গে করে আনা বাবার জন্য লুঙ্গি-পাঞ্জাবী আর মার জন্য আনা শাড়ি কাঁটা তারের উপর দিয়ে ফিকিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়েই, যেন দুঃখ ঘুচিয়ে দেয় ওইসব উপহার।

এদিকে একই উপজেলার মীনাপুর গ্রাম থেকে লাঠির উপর ভর দিয়ে এসেছে ষাটোর্ধ্ব সাহেরা বেগম। ভাইদের এক পলক দেখার জন্য, সঙ্গে নিয়েছে রুটি পায়েস ও গরুর মাংস।

সাহের বেগম বলেন, ভাইকে অনেক দিন ধরে দেখি নাই। আর মেলাতে গেলেই দেখা হয় তাদের সাথে। ভাই গরুর মাংস পছন্দ করে তাই মাংস হিসেবে গরুর মাংস নিয়ে এসেছেন, বলে জানান ওই বৃদ্ধা।

আবুল কালাম নামে এক বাংলাদেশী যুবক জানায়, যদি সীমান্তের দরজাগুলো এই দিনে খুলে দেওয়া হত তাহলে তাদের জড়িয়ে ধরার তৃষ্ণা ও জিনিসপত্র আদান-প্রদানের সমস্যাটা ঘুচে যেত।

সরেজমিনে গিয়ে- বিজিবি, বিএসএফ সহ পুলিশের কড়া নিরাপত্তা বেষ্টন করার চিত্র পরিলক্ষিত হয়। এ মিলনমেলা একদিন থেকে দুইদিনে উন্নীত করা জন্য বিজিবি আর বিএসএফকে আহ্বান জানায় দু’পারের বাঙালী।