চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ড্রেনেজ ও সড়ক ব্যবস্থার বেহাল দশা: জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ চরমে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৪:২১:০০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • ৭১৭ বার পড়া হয়েছে

সকিব আল হাসান:চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের দুর্বলতা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বেশিরভাগ সড়কে জমে যাচ্ছে পানি, ড্রেন উপচে পড়ছে, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ফলে জনদুর্ভোগও বাড়ছে প্রতিদিন। পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কেই দেখা যাচ্ছে বড় বড় গর্ত, উঠে গেছে পিচ, ভেঙে পড়েছে ড্রেনের দেয়াল।

বুজরুকগড়গড়ী বনানী পাড়া, শান্তি পাড়া, সবুজ পাড়া, সাদেক আলী মল্লিক পাড়া, পলাশ পাড়া, গুলশান পাড়া, মুক্তিপাড়া, দক্ষিণ হাসপাতাল পাড়া, মসজিদ পাড়াসহ প্রায় সব ওয়ার্ডেই একই দৃশ্য—বৃষ্টি হলেই সড়কজুড়ে পানি, ড্রেনের মুখে ময়লা-আবর্জনা, দুর্গন্ধ, আর প্রতিদিনের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি।

পলাশপাড়া এলাকার বাসিন্দা পিয়াল খান বলেন,
“বর্ষা এলেই ভয় লাগে। ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। রাস্তা-ড্রেন একাকার হয়ে যায়। রাতে তো শিশুদের নিয়ে চলাচল করাই অসম্ভব।”

গুলশানপাড়া এলাকার মুস্তাফিজুর রহমান কনক বলেন, “এই এলাকায় তিন বছর ধরে ড্রেন পরিষ্কার হয় না। ড্রেনের মুখ বন্ধ থাকায় পানির কোনো গতি নেই। বর্ষাকালে পুরো পাড়া যেন জলকাদা ঘেরা দ্বীপ।”

গুলশান পাড়ার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,
“রাস্তার অবস্থা এমন যে রিকশা পর্যন্ত নিতে চায় না। গর্ত আর পানিতে রাস্তাই হারিয়ে যায়।”

বুজরুকগড়গড়ী বনানী পাড়ার আক্তার হোসেন বলেন, “অনেকবার অভিযোগ করা হয়েছে। কাউন্সিলর আসেন, ছবি তোলেন, আশ্বাস দেন—কাজ হয় না। বৃষ্টি নামলেই ড্রেনের পানি বাসায় ঢোকে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ এবং অব্যবস্থাপনার ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অপরিকল্পিত উন্নয়ন, অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাও এই সংকটকে তীব্র করে তুলেছে।

পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্প গ্রহণ ও বাজেট অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু হবে। তবে তার আগ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসীর দুর্ভোগ যে অব্যাহত থাকবে, তা বলা বাহুল্য।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ড্রেনেজ ও সড়ক ব্যবস্থার বেহাল দশা: জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ চরমে

আপডেট সময় : ০৪:২১:০০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

সকিব আল হাসান:চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের দুর্বলতা এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের বেশিরভাগ সড়কে জমে যাচ্ছে পানি, ড্রেন উপচে পড়ছে, সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ফলে জনদুর্ভোগও বাড়ছে প্রতিদিন। পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কেই দেখা যাচ্ছে বড় বড় গর্ত, উঠে গেছে পিচ, ভেঙে পড়েছে ড্রেনের দেয়াল।

বুজরুকগড়গড়ী বনানী পাড়া, শান্তি পাড়া, সবুজ পাড়া, সাদেক আলী মল্লিক পাড়া, পলাশ পাড়া, গুলশান পাড়া, মুক্তিপাড়া, দক্ষিণ হাসপাতাল পাড়া, মসজিদ পাড়াসহ প্রায় সব ওয়ার্ডেই একই দৃশ্য—বৃষ্টি হলেই সড়কজুড়ে পানি, ড্রেনের মুখে ময়লা-আবর্জনা, দুর্গন্ধ, আর প্রতিদিনের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি।

পলাশপাড়া এলাকার বাসিন্দা পিয়াল খান বলেন,
“বর্ষা এলেই ভয় লাগে। ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। রাস্তা-ড্রেন একাকার হয়ে যায়। রাতে তো শিশুদের নিয়ে চলাচল করাই অসম্ভব।”

গুলশানপাড়া এলাকার মুস্তাফিজুর রহমান কনক বলেন, “এই এলাকায় তিন বছর ধরে ড্রেন পরিষ্কার হয় না। ড্রেনের মুখ বন্ধ থাকায় পানির কোনো গতি নেই। বর্ষাকালে পুরো পাড়া যেন জলকাদা ঘেরা দ্বীপ।”

গুলশান পাড়ার আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,
“রাস্তার অবস্থা এমন যে রিকশা পর্যন্ত নিতে চায় না। গর্ত আর পানিতে রাস্তাই হারিয়ে যায়।”

বুজরুকগড়গড়ী বনানী পাড়ার আক্তার হোসেন বলেন, “অনেকবার অভিযোগ করা হয়েছে। কাউন্সিলর আসেন, ছবি তোলেন, আশ্বাস দেন—কাজ হয় না। বৃষ্টি নামলেই ড্রেনের পানি বাসায় ঢোকে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ এবং অব্যবস্থাপনার ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অপরিকল্পিত উন্নয়ন, অপর্যাপ্ত রক্ষণাবেক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাও এই সংকটকে তীব্র করে তুলেছে।

পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্প গ্রহণ ও বাজেট অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু হবে। তবে তার আগ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসীর দুর্ভোগ যে অব্যাহত থাকবে, তা বলা বাহুল্য।