প্রতিবন্ধী ভাতা নয় কর্মের সন্ধানে মাস্টার্স পাশ শারীরিক প্রতিবন্ধী হেলাল
রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কামারখন্দ উপজেলার চর নূরনগর গ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধী হেলাল উদ্দিন ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সে জন্মগত ভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। হেলাল উদ্দিন সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার চর নূরনগর গ্রামের মৃত ইয়ার বক্স সেখের ছেলে। ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে হেলাল উদ্দিন ২য়।
জন্মগত ভাবে প্রতিবন্ধী হলেও দরিদ্রতার সাথে লড়াই করে ২০১৩ সালে মাস্টার্স শেষ করেছেন তিনি। নিজে প্রতিবন্ধী হয়েও নিজের দরিদ্র অসহায় পরিবারের চাহিদা মেটাতে একটি সরকারী চাকরীর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সরকারী চাকুরীর বয়স আছে আর মাত্র তিন মাস তাই হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করে হেলাল উদ্দিন জানান, আমার বয়স থাকা অবস্থায় কৌটা অনুযায়ী যে কোন ধরনের কর্মের ব্যবস্থা করে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
হেলাল উদ্দিনের বাবা কৃষি কাজে নির্ভরশীল ২০১২ সালে মৃত্যু বরন করেন। আগে থেকেই সংসারে অভাব অনটন বাবার মৃত্যুর পর সেই অভাব অনটন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো পরিবারকে ।
প্রতিবন্ধী ভাতা সর্ম্পকে জানতে চাইলে হেলাল উদ্দিন জানান, আমি কোন প্রতিবন্ধী ভাতা পাইনা, আমার প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে ঘুড়তে হয়েছে অনেক কিন্তু কোন লাভ হয়নি। কামারখন্দ উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা হাসান শরীফ এর আগে আমার ছবি আইডি কার্ডের কপি নিয়েছেন কিন্তু তিনিও অবহেলায় রেখেছেন আমার নাম।
কান্না জর্জিত কন্ঠে হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে আমাকে মাস্টার্স পাস করিয়েছেন। আমার প্রতিবন্ধী ভাতার প্রয়োজন নেই আমি শুধু একটা ভাল কর্ম চাই যা দিয়ে আমার পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতে পারব, শিক্ষা নিয়ে কি লাভ যদি কর্মই না হয়, আমার জীবনে বাস্তব অভিজ্ঞতা এক বেলা খেয়ে তো দুবেলা না খেয়ে শিক্ষা গ্রহন করলাম আর আমার কৌটা থাকা সত্তেও চাকুরী পাচ্ছি না এটা আমার কাছে কষ্টের ব্যাপার।
হেলাল উদ্দিনের পরিবারের অভিযোগ, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দৌলা শফি ও স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে প্রতিবন্ধী ভাতার পাওয়ার আবেদন করেও কোন সুফল পাইনি।
হেলাল উদ্দিনের মা তারা বানু জানান, সরকার প্রতিবন্ধী বান্ধব সরকার হয়েও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের খামখেয়ালীপনার ফলে আমাদের মতো হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের প্রতিবন্ধী ভাতা মেলেনি।
আরো অভিযোগ করে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের পছন্দের লোকদেরকে এসব সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। ভাতা পেতে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগি পরিবার।
কামারখন্দ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকমর্তা হাসান শরীফ জানান, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় হেলাল উদ্দিনের নাম দিয়ে দিলে আমরা ভাতার ব্যবস্থা করে দেব।
ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, বিষয়টি আমি আগে থেকে অবগত ছিলাম না যখন শুনেছি তখন থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা করে দেওয়ার চেষ্টা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে হেলাল উদ্দিনকে প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব।