শিরোনাম :
Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo অছাত্র ও ছাত্রলীগের দোসর দিয়ে কমিটি গঠনের প্রতিবাদে শহিদ স্মৃতি কলেজে ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo বিচারহীনতার প্রতিবাদে ইবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিছিল Logo নাব্যতা হারিয়ে ঝালকাঠির খরশ্রোতা বাসন্ডা নদী খালে পরিনত হচ্ছে, খননের দাবী এলাকাবাসীর Logo এফডিসির গেইটে রান্না করে গোয়ার সিনেমার প্রচার,নজির গড়লেন নায়ক রাসেল মিয়া Logo কবি জীবনানন্দ দাশ স্মরণে প্যাপিরাস পাঠাগারের সাহিত্য আড্ডা Logo বুটেক্সে অনুষ্ঠিত হলো জেনরা ফ্যাশন ওডিসি ২০২৫ Logo চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ৩১ বাংলাদেশী নারী-পুরুষ, শিশুকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ Logo বাংলাদেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিকে আইএমএফের প্রশংসা Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কুকুরের স্পে-নিউটার ও টিকাদান কার্যক্রম শুরু!

একসময়ের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী সফিউল্লাহ এখন রিক্সা–সাইকেল মেকানিক

মোঃ মাসুদ রানা,কচুয়াঃ
একসময় হারমোনিয়াম হাতে, কণ্ঠে বাউল সুর তুলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়াতেন মোঃ সফিউল্লাহ। তিন দশকের বেশি সময় ধরে মাটির গান গেয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন, ভেবেছেন এ গানই হবে জীবনের অবলম্বন। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই বাউল সংগীতই যেন হারিয়ে গেছে আধুনিকতার আড়ালে। আর হারিয়ে যাওয়া সুরের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে শিল্পীর জীবনযাপনের স্বস্তিও।
আজ সেই সফিউল্লাহকে দেখা যায় আরেক ভিন্ন ভূমিকায়। হাতে আর হারমোনিয়াম নেই, আছে রেঞ্চ ও হাতুড়ি। বাড়ির পাশের ছোট্ট দোকানে রিক্সা ও সাইকেল মেরামত করেই চলছে তাঁর সংসার।
স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ, তবু ভেতরে বেঁচে আছে একসময়ের সেই শিল্পীর স্বপ্ন। সফিউল্লাহ আক্ষেপ করে বলেন,
“এক সময় গান গেয়েই চলত সংসার। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যেতাম, মানুষ আমাদের শুনত, সম্মান দিত। এখন আর কেউ ডাকে না, লোকজ গানকে আর আগের মতো কেউ গুরুত্বও দেয় না। তাই বাধ্য হয়েই মেকানিকের কাজ করছি।”
তাঁর কণ্ঠে বেদনার সুর ফুটে ওঠে যখন বলেন,
“সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে কাজ করি। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে সেই গানের ভুবনে। যদি সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সহায়তা পেতাম, হয়তো আবারও গান নিয়ে দাঁড়াতে পারতাম, অথবা আমার দোকানটাকে বড় করে সংসারের হাল ধরতে পারতাম।”
স্থানীয়রা জানান, সফিউল্লাহ ছিলেন এলাকার জনপ্রিয় বাউল শিল্পী। হারমোনিয়াম হাতে, তবলার তালে তাঁর কণ্ঠে ছিল অন্যরকম আবেদন। কিন্তু সময়ের স্রোতে সেই শিল্পী এখন যেন ভুলে যাওয়া এক নাম।
চাঁদপুরেরর কচুয়া উপজেলার বাউল সংগীত শিল্পী  সফিউল্লাহ একজন বাউল শিল্পী থেকে আজ মেকানিক হয়ে যাওয়ার গল্প যেন আমাদের লোকসংস্কৃতির ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বর্ণাঢ্য আয়োজনে চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

একসময়ের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী সফিউল্লাহ এখন রিক্সা–সাইকেল মেকানিক

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:৩৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মোঃ মাসুদ রানা,কচুয়াঃ
একসময় হারমোনিয়াম হাতে, কণ্ঠে বাউল সুর তুলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়াতেন মোঃ সফিউল্লাহ। তিন দশকের বেশি সময় ধরে মাটির গান গেয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন, ভেবেছেন এ গানই হবে জীবনের অবলম্বন। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই বাউল সংগীতই যেন হারিয়ে গেছে আধুনিকতার আড়ালে। আর হারিয়ে যাওয়া সুরের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে শিল্পীর জীবনযাপনের স্বস্তিও।
আজ সেই সফিউল্লাহকে দেখা যায় আরেক ভিন্ন ভূমিকায়। হাতে আর হারমোনিয়াম নেই, আছে রেঞ্চ ও হাতুড়ি। বাড়ির পাশের ছোট্ট দোকানে রিক্সা ও সাইকেল মেরামত করেই চলছে তাঁর সংসার।
স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ, তবু ভেতরে বেঁচে আছে একসময়ের সেই শিল্পীর স্বপ্ন। সফিউল্লাহ আক্ষেপ করে বলেন,
“এক সময় গান গেয়েই চলত সংসার। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যেতাম, মানুষ আমাদের শুনত, সম্মান দিত। এখন আর কেউ ডাকে না, লোকজ গানকে আর আগের মতো কেউ গুরুত্বও দেয় না। তাই বাধ্য হয়েই মেকানিকের কাজ করছি।”
তাঁর কণ্ঠে বেদনার সুর ফুটে ওঠে যখন বলেন,
“সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে কাজ করি। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে সেই গানের ভুবনে। যদি সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সহায়তা পেতাম, হয়তো আবারও গান নিয়ে দাঁড়াতে পারতাম, অথবা আমার দোকানটাকে বড় করে সংসারের হাল ধরতে পারতাম।”
স্থানীয়রা জানান, সফিউল্লাহ ছিলেন এলাকার জনপ্রিয় বাউল শিল্পী। হারমোনিয়াম হাতে, তবলার তালে তাঁর কণ্ঠে ছিল অন্যরকম আবেদন। কিন্তু সময়ের স্রোতে সেই শিল্পী এখন যেন ভুলে যাওয়া এক নাম।
চাঁদপুরেরর কচুয়া উপজেলার বাউল সংগীত শিল্পী  সফিউল্লাহ একজন বাউল শিল্পী থেকে আজ মেকানিক হয়ে যাওয়ার গল্প যেন আমাদের লোকসংস্কৃতির ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ারই প্রতিচ্ছবি।