মঙ্গলবার | ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান প্রেস সচিবের Logo মহান বিজয় দিবস আগামীকাল Logo নোবিপ্রবি ছাত্রশিবির আয়োজিত আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত Logo জামায়াতের নির্বাচনী সভায় পুলিশ সদস্যের অংশগ্রহণ, এএসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা Logo মিজাফ বিজয় সম্মাননা পেলেন চিত্রনায়ক ডি এ তায়েব Logo সমাজসেবায় ৯ বছরের পথচলা: জীবনদীপের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আলোচনা সভা Logo চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া ব্র্যাকের উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন Logo ঐতিহ্যবাহী খাদ্য ভান্ডার ‘বনফুল’ চাঁদপুর শাখা উদ্বোধন Logo প্রাইভেট হাসপিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার কমিটি গঠন সভাপতি ডাঃ মোবারক হোসেন চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীন Logo কচুয়ায় বিশেষ অভিযানে সাজাপ্রাপ্ত মাদক মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার

একসময়ের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী সফিউল্লাহ এখন রিক্সা–সাইকেল মেকানিক

মোঃ মাসুদ রানা,কচুয়াঃ
একসময় হারমোনিয়াম হাতে, কণ্ঠে বাউল সুর তুলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়াতেন মোঃ সফিউল্লাহ। তিন দশকের বেশি সময় ধরে মাটির গান গেয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন, ভেবেছেন এ গানই হবে জীবনের অবলম্বন। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই বাউল সংগীতই যেন হারিয়ে গেছে আধুনিকতার আড়ালে। আর হারিয়ে যাওয়া সুরের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে শিল্পীর জীবনযাপনের স্বস্তিও।
আজ সেই সফিউল্লাহকে দেখা যায় আরেক ভিন্ন ভূমিকায়। হাতে আর হারমোনিয়াম নেই, আছে রেঞ্চ ও হাতুড়ি। বাড়ির পাশের ছোট্ট দোকানে রিক্সা ও সাইকেল মেরামত করেই চলছে তাঁর সংসার।
স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ, তবু ভেতরে বেঁচে আছে একসময়ের সেই শিল্পীর স্বপ্ন। সফিউল্লাহ আক্ষেপ করে বলেন,
“এক সময় গান গেয়েই চলত সংসার। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যেতাম, মানুষ আমাদের শুনত, সম্মান দিত। এখন আর কেউ ডাকে না, লোকজ গানকে আর আগের মতো কেউ গুরুত্বও দেয় না। তাই বাধ্য হয়েই মেকানিকের কাজ করছি।”
তাঁর কণ্ঠে বেদনার সুর ফুটে ওঠে যখন বলেন,
“সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে কাজ করি। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে সেই গানের ভুবনে। যদি সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সহায়তা পেতাম, হয়তো আবারও গান নিয়ে দাঁড়াতে পারতাম, অথবা আমার দোকানটাকে বড় করে সংসারের হাল ধরতে পারতাম।”
স্থানীয়রা জানান, সফিউল্লাহ ছিলেন এলাকার জনপ্রিয় বাউল শিল্পী। হারমোনিয়াম হাতে, তবলার তালে তাঁর কণ্ঠে ছিল অন্যরকম আবেদন। কিন্তু সময়ের স্রোতে সেই শিল্পী এখন যেন ভুলে যাওয়া এক নাম।
চাঁদপুরেরর কচুয়া উপজেলার বাউল সংগীত শিল্পী  সফিউল্লাহ একজন বাউল শিল্পী থেকে আজ মেকানিক হয়ে যাওয়ার গল্প যেন আমাদের লোকসংস্কৃতির ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ারই প্রতিচ্ছবি।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান প্রেস সচিবের

একসময়ের জনপ্রিয় বাউল শিল্পী সফিউল্লাহ এখন রিক্সা–সাইকেল মেকানিক

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:৩৯ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মোঃ মাসুদ রানা,কচুয়াঃ
একসময় হারমোনিয়াম হাতে, কণ্ঠে বাউল সুর তুলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে বেড়াতেন মোঃ সফিউল্লাহ। তিন দশকের বেশি সময় ধরে মাটির গান গেয়ে মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন, ভেবেছেন এ গানই হবে জীবনের অবলম্বন। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই বাউল সংগীতই যেন হারিয়ে গেছে আধুনিকতার আড়ালে। আর হারিয়ে যাওয়া সুরের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে শিল্পীর জীবনযাপনের স্বস্তিও।
আজ সেই সফিউল্লাহকে দেখা যায় আরেক ভিন্ন ভূমিকায়। হাতে আর হারমোনিয়াম নেই, আছে রেঞ্চ ও হাতুড়ি। বাড়ির পাশের ছোট্ট দোকানে রিক্সা ও সাইকেল মেরামত করেই চলছে তাঁর সংসার।
স্ত্রী, চার ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে কোনো রকমে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ, তবু ভেতরে বেঁচে আছে একসময়ের সেই শিল্পীর স্বপ্ন। সফিউল্লাহ আক্ষেপ করে বলেন,
“এক সময় গান গেয়েই চলত সংসার। বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যেতাম, মানুষ আমাদের শুনত, সম্মান দিত। এখন আর কেউ ডাকে না, লোকজ গানকে আর আগের মতো কেউ গুরুত্বও দেয় না। তাই বাধ্য হয়েই মেকানিকের কাজ করছি।”
তাঁর কণ্ঠে বেদনার সুর ফুটে ওঠে যখন বলেন,
“সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে কাজ করি। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে সেই গানের ভুবনে। যদি সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সহায়তা পেতাম, হয়তো আবারও গান নিয়ে দাঁড়াতে পারতাম, অথবা আমার দোকানটাকে বড় করে সংসারের হাল ধরতে পারতাম।”
স্থানীয়রা জানান, সফিউল্লাহ ছিলেন এলাকার জনপ্রিয় বাউল শিল্পী। হারমোনিয়াম হাতে, তবলার তালে তাঁর কণ্ঠে ছিল অন্যরকম আবেদন। কিন্তু সময়ের স্রোতে সেই শিল্পী এখন যেন ভুলে যাওয়া এক নাম।
চাঁদপুরেরর কচুয়া উপজেলার বাউল সংগীত শিল্পী  সফিউল্লাহ একজন বাউল শিল্পী থেকে আজ মেকানিক হয়ে যাওয়ার গল্প যেন আমাদের লোকসংস্কৃতির ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ারই প্রতিচ্ছবি।