চুয়াডাঙ্গার মেয়ে মডেল ও অভিনেত্রী অন্তরা ইসলাম। মিডিয়াতে হয়ে গেছে প্রায় ৪ বছর। এই অল্প সময়েই নিজের পরিচিতি পেয়ে গেছেন। এখন মিডিয়ায় এক পরিচিত মুখ তিনি। দীর্ঘ সময় তিনি শতাধিক নাটক, শর্টফিল্ম, মিউজিক ভিডিও ও কিচ্ছায় অভিনয় করেছেন।
নিজের ভালো লাগা, ভবিষ্যত পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন অন্তরা ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী।
কিভাবে মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হলেন?
অন্তরা ইসলাম: ২০২২ সালে করোনা ভাইরাসের সময় কলেজ বন্ধ ছিল, এ অবসর সময়ে অভিনয়ের নেশা ভিতরে কাজ করেছে। এরপর থেকে নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে আমি নিজেই প্রডিউস করেছি এবং নিজে থেকেই মিউজিক ভিডিও নাটক বানিয়ে কাজ শিখেছি। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কিছু প্রযোজক ও পরিচালকের মাধ্যমে শর্টফিল্ম, মিউজিক ভিডিও ও কিচ্ছার কাজের সুযোগ হয়। এরপর কন্টেন্ট ক্রিয়েটার হৃদয় হাসানের সাথে পরিচয় হয়, এরপর টানা ৭ মাস ফেসবুক পেইজে আমরা রেগুলার কাপল ব্লগ করার মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিতি পাই। পরবর্তীতে বিভিন্ন সিঙ্গেল নাটক ও মিউজিক ভিডিও কাজের মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হই। এভাবেই ইউটিউবে শতাধিক কন্টেন্ট রিলিজ হয়েছে আমার।
বর্তমানে আপনি কি কাজ করছেন?
অন্তরা ইসলাম : এখন হাতে তিন-চারটা নাটকের কথা চলছে। আর সিঙ্গেল নাটক এবং মিউজিক ভিডিও’র কাজ চলমান। আর ফটোশুট তো রয়েছেই।
যেহেতু অভিনয়ে নিয়মিত হবেন, তাহলে বড়পর্দায় আসার ইচ্ছা আছে?
অন্তরা ইসলাম : ছোটবেলা থেকে বড়পর্দায় কাজ করার খুব ইচ্ছে আমার। আমার কাছে যদি কোন মৌলিক গল্প এবং ভালো পরিচালকের কাজের প্রস্তাব আসে তাহলে অবশ্যই বড়পর্দায় কাজ করব। নতুন অনেকেই মিডিয়াতে আসছে, আবার চলেও যাচ্ছে।
নতুন হিসেবে এই বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?
অন্তরা ইসলাম : কাজ তো সবাই করতে পারে। কিন্তু আমি এমন কাজ করতে চাই যা মানুষ সব সময় মনে রাখবে। তাই আমি খুব বেছে বেছে কাজ করছি। চরিত্র, গল্প সব কিছুর ব্যাপারেই আমি সচেতন। যদি নতুন একগাদা কাজ না করে বেছে বেছে কাজ করি তাহলে ক্যারিয়ারের জন্য ভালো হবে।
পরিবারের সহযোগিতা কেমন পাচ্ছেন?
অন্তরা ইসলাম : প্রথমে আমার বাবা সাপোর্ট করেছিল, কিন্তু মা করেনি এবং ফ্যামিলি থেকেও অনেক সমস্যা হয়েছে। তবে এখন আর এই সমস্যা নেই। আমার কাজগুলো সবাই দেখে। আমার কাজ দেখে প্রশংসা করে তারা।। তবে আমার মায়ের অনুরোধ সবসময় সামাজিক কাজের। অতিরিক্ত টাইট ফিটিং এবং শর্ট পোশাকে যেন আমি কখনো অভিনয় বা ক্যামেরার সামনে না আসি। এবং আমি সেটা মেনে চলার চেষ্টা করি। আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী। পরিবারে আমরা ৩ বোন ও ২ ভাই।
আপনার উল্লেখযোগ্য কাজগুলো কি?
নাটক: কোটিপতি শ্বাশুরীর গরিব জামাই, মায়ের লাশ, মা আমার মদিনা, শালী আমার সুন্দরী, দারোয়ানের ঈদ, কবিরাজ বউ, কাজী বাড়ির পাজি জামাই, বউ ফেরত, গরিবের বউ অন্তরা, লোভী বউ, কষ্টে পোষা বালক, ভালোবাসার পরীক্ষা, জমজ পিচ্চি বউ,প্রেমে পাগল মন, পানিচোর,ভুয়া ডিরেক্টর ও মহানায়ক সিরিয়াল। টেলিফিল্ম: কপালে লেখা নেই, অসমাপ্ত ভালোবাসা।
মিউজিক ভিডিও: পর হয়েছো তুমি, একলা মনের প্রহর গুনে, (ভাবনা) যত তোমার সাথে,
আমি তোর পিরিতের কাঙ্গাল, সুখে থাকিস বিন্দিয়া, মায়া লাগে না রে বন্ধু, একদিন মাটির ভিতরে হবে ঘর, ময়না, ভালবাসার দাম দিলে না, কান্দিয়াকি বাইন্দা রাখা যায়, গেছি তোমার প্রেমে মজি, মহারানীর শুভ জন্মদিন, সাগর মাঝির নৌকা ভাসেরে, জীবন আমার গেল ভুলে, সে তো রাখে না খবর, তোমার বুকে মাথা রেখে মরণ যেন হয়, তোর ঐ মিষ্টি হাসি, তুই ছাড়া তুই ছাড়া, মন কেন বোঝেনা, কথা দিয়ে কথা রাখলে না, তিন কবুল, তুমি সেই প্রিয়জন,বেইমান পাখি, যদি তোরে কাছে পাইতাম,কন্যারে তুই গেলি আমায় ছেড়ে, কান পেতে শোনো গো মন।
ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
অন্তরা ইসলাম : প্রথমে তো একজন ভাল মানুষ হতে চাই। এরপর একজন ভাল অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা তো আছেই। অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করতে চাই।
আপনার দর্শকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন?
অন্তরা ইসলাম : সহজে যদি কেউ কিছু পায় সেটির মূল্য থাকে না। এ জন্য নিজের যোগ্যতা ও পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অর্জন করতে হবে। সেটির স্বীকৃতিও অন্যরকম। নতুনদের অনেকেই অল্প সময়ে তারকা হতে চায়। এ চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমার কঠোর পরিশ্রম দর্শকের ভালবাসা এনে দেবে বলে বিশ্বাস করি। সকলের মন জেতার জন্য আমাকে কাজ করে যেতে হবে। দর্শকরা আমাকে ভালবাসতে বাধ্য নন। খুব কম ক্ষেত্রেই একজন মানুষ সকলের মন জয় করতে পারেনা। তবে আমি সে রকমই কিছু করে দেখানোর আকাঙ্ক্ষা রাখি। সেই জায়গায় পৌঁছনোর জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করছি। আশা করি আমি সফল হব।”সর্বশেষ বলবো, আমি সব ধরণের অভিনয়ই করে যেতে চাই। অভিনয় ছাড়া অন্যকিছু চিন্তা করতে পারিনা। হুট করে নয়, ধীরে ধীরে সবার মনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিতে চাই। আমার নামের পেছনে একটা জয় আছে। তাই ছোট থেকেই বিশ্বাস, একদিন আমি সবার মন জয় করে নিতে পারব।