পরমাণু শক্তি কমিশনের ৬শ বিজ্ঞানীসহ ২৫শ কর্মকর্তা-কর্মচারী দুই মাস ধরে বেতন-ভাতা প্রদান বন্ধ রয়েছে। বিগত ঈদ-উল-ফিতরে তারা বেতন-ভাতা পাননি। এতে তাদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতন-ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামের তালিকার পাশাপাশি প্রত্যেকের পরিবারের জীবন বৃত্তান্ত, সংশ্লিষ্ট দফতরের আয়-ব্যয়, আমদানি-রফতানি, বিভিন্ন দেশের সাথে চুক্তি সব কিছু এই সফটওয়ারে দিতে হয়। এই সফটওয়ারটি নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে ভারতের চেন্নাই থেকে।
বিজ্ঞানীদের অভিযোগ, এই সফটওয়ারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার রীতিনীতি মেনে পরমাণু প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিশেষায়িত গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করলে কোন গোপনীয়তাই থাকবে না। কমিশনের কর্মকর্তারা দ্বিমত পোষণ করায় গত দুই মাস তাদের বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার কমিশনে আয়োজিত এক মিটিংয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা। তারা বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেছেন। উপদেষ্টা বিষয়টি পজিটিভ নির্দেশনা দিলেও আটকে যাচ্ছে মন্ত্রণালয় থেকে।
পরমাণু বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রচলিত প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর বাইরে রেখে কোন বিশেষায়িত কাজের জন্য প্রশাসনিক, আর্থিক ও বিচারিক ক্ষমতা প্রদান করে সরকার বিভিন্ন সময়ে ও প্রয়োজনে কমিশন গঠন করে থাকে। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বাপশক) ও সেই ধরণের একটি প্রতিষ্ঠান যা ১৯৭৩ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার নং: ১৫ তথা ২০১৭ সালের ২৩ নং আইন বলে প্রতিষ্ঠিত। কমিশন-এর আওতাধীন ৪০টি ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে পরমাণু বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট বিশেষায়িত গবেষণা, শিক্ষা ও সেবামূলক কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে পরিচালিত হচ্ছে।
কমিশনের অনুকূলে অর্থ ছাড় না হওয়ায় বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন প্রাপ্তিসহ গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কমিশনে কর্মরত প্রায় ৬০০ বিজ্ঞানীসহ ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী দুই মাস বেতন উত্তোলন করতে না পেরে মানবিক জীবন যাপন করছেন।