শিরোনাম :
Logo বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন। Logo টাকার জন্য হরিদাস বাবু’কে হয়রানী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনুসন্ধানে প্রমাণ। Logo খুবির সঙ্গে গবেষণা সহযোগিতায় আগ্রহ জাপানি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের Logo শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় এনজিও কর্মীর মৃত্যু Logo সাতক্ষীরায় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ তরুণী, থানায় সাধারণ ডায়েরি Logo আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কয়রায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দর্শনা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান, ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ১ Logo জীবননগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ উদযাপন Logo আইএফএডিকে বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

মন্দ আচরণের ভয়াবহ পরিণতি

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:০৫:৫০ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭৪৭ বার পড়া হয়েছে

কিছু মানুষ এমন আছে, যারা অন্যের সঙ্গে কটু ভাষায় কথা বলে আনন্দবোধ করে। তারা মনে করে, এই রূঢ় আচরণ তাদের ব্যক্তিত্বতে পাকাপোক্ত করে। তারা অন্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। অন্যের ওপর প্রভাবে বিস্তারে তাদের আরেকটি কৌশল হলো, তারা খুব সুক্ষ্ম ভাবে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্যকে দমিয়ে রাখার জন্য নুন থেকে চুন খসলে অভিশাপও দিয়ে থাকে, অথচ রহমাতুল্লিল আলামিন, সরদারে দো আলম মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার প্রতি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর মতে, কোনো মুমিনের জন্য এই ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়া সমীচীন নয়। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিস্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭৭)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, তোমরা পরস্পর একে অপরকে অভিসম্পাত, তার গজব ও জাহান্নামের বদদোয়া করো না। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭৬)

অন্যকে অভিশাপ দেওয়া এতটাই ভয়ানক বিষয় যে, তা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশাপদাতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আবু দারদা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন কোনো বান্দা কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেয়, তখন ওই অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর সেই অভিশাপের আকাশে ওঠার পথকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন তা আবার দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তনের জন্য রওনা হয়; কিন্তু দুনিয়ায় আসার পথও বন্ধ করে দেওয়ায় সে ডানে-বাঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। অবশেষে অন্য কোনো পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে, তার কাছে ফিরে আসে। তখন সেই বস্তু যদি অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার ওপর ওই অভিশাপ পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর ওপরই তা পতিত হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০৫)

এতো গুলো অভিশাপকারীর দুনিয়াবী ক্ষতি। আখেরাতেও শুধুমাত্র অভিশাপ দেওয়ার প্রবণতার কারণে বহু মানুষ জাহান্নামে যাবে। যেমনটা নবীজি (সা.) নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) হতে বর্ণিত, একবার ঈদুল আজহা অথবা ঈদুল ফিতরের সালাত আদায়ের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, হে মহিলা সমাজ! তোমার সদকা করতে থাক। কারণ আমি দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই অধিক। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে, হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেন, তোমরা অধিক পরিমানে অভিশাপ দিয়ে থাক আর স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। (বুখারি, হাদিস : ৩০৪)

তাই কখনো এ ধরনের রুঢ় আচরণ ও অহেতুক অভিসম্পাতকারীর কবলে পড়লে, তার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত না হয়ে তাকে এড়িয়ে চলাই মুমিনের কাজ। এতে করে মহান আল্লাহর পক্ষ গায়েবি মদদ পাওয়া যায়।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে এসে বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আছে। আমি তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখি, কিন্তু তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের উপকার করি, কিন্তু তারা আমার ক্ষতি করে। তারা আমার সাথে মূর্খের আচরণ করে, কিন্তু আমি তা সহ্য করি। তিনি বলেন, যদি তোমার বক্তব্য সঠিক হয়, তবে তুমি যেন তাদের মুখে উত্তপ্ত ছাই পুরে দিচ্ছ। তোমার কারণে তাদের দুর্ভোগ আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এরূপ করতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী তাদের মোকাবিলায় তোমার সাথে থাকবেন। (আদাবুল মুফরাদ, আয়াত : ৫২)

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

মন্দ আচরণের ভয়াবহ পরিণতি

আপডেট সময় : ০৯:০৫:৫০ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

কিছু মানুষ এমন আছে, যারা অন্যের সঙ্গে কটু ভাষায় কথা বলে আনন্দবোধ করে। তারা মনে করে, এই রূঢ় আচরণ তাদের ব্যক্তিত্বতে পাকাপোক্ত করে। তারা অন্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। অন্যের ওপর প্রভাবে বিস্তারে তাদের আরেকটি কৌশল হলো, তারা খুব সুক্ষ্ম ভাবে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্যকে দমিয়ে রাখার জন্য নুন থেকে চুন খসলে অভিশাপও দিয়ে থাকে, অথচ রহমাতুল্লিল আলামিন, সরদারে দো আলম মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার প্রতি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর মতে, কোনো মুমিনের জন্য এই ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়া সমীচীন নয়। আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন কখনো দোষারোপকারী ও নিন্দাকারী হতে পারে না, অভিস্পাতকারী হতে পারে না, অশ্লীল কাজ করে না এবং কটুভাষীও হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭৭)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, তোমরা পরস্পর একে অপরকে অভিসম্পাত, তার গজব ও জাহান্নামের বদদোয়া করো না। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৭৬)

অন্যকে অভিশাপ দেওয়া এতটাই ভয়ানক বিষয় যে, তা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশাপদাতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আবু দারদা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন কোনো বান্দা কোনো বস্তুকে অভিশাপ দেয়, তখন ওই অভিশাপ আকাশের দিকে অগ্রসর হয়। অতঃপর সেই অভিশাপের আকাশে ওঠার পথকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন তা আবার দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তনের জন্য রওনা হয়; কিন্তু দুনিয়ায় আসার পথও বন্ধ করে দেওয়ায় সে ডানে-বাঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। অবশেষে অন্য কোনো পথ না পেয়ে যাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছে, তার কাছে ফিরে আসে। তখন সেই বস্তু যদি অভিশাপের যোগ্য হয়, তাহলে তার ওপর ওই অভিশাপ পতিত হয়, অন্যথায় অভিশাপকারীর ওপরই তা পতিত হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯০৫)

এতো গুলো অভিশাপকারীর দুনিয়াবী ক্ষতি। আখেরাতেও শুধুমাত্র অভিশাপ দেওয়ার প্রবণতার কারণে বহু মানুষ জাহান্নামে যাবে। যেমনটা নবীজি (সা.) নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন। হাদিস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) হতে বর্ণিত, একবার ঈদুল আজহা অথবা ঈদুল ফিতরের সালাত আদায়ের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, হে মহিলা সমাজ! তোমার সদকা করতে থাক। কারণ আমি দেখেছি জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই অধিক। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে, হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেন, তোমরা অধিক পরিমানে অভিশাপ দিয়ে থাক আর স্বামীর অকৃতজ্ঞ হও। (বুখারি, হাদিস : ৩০৪)

তাই কখনো এ ধরনের রুঢ় আচরণ ও অহেতুক অভিসম্পাতকারীর কবলে পড়লে, তার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত না হয়ে তাকে এড়িয়ে চলাই মুমিনের কাজ। এতে করে মহান আল্লাহর পক্ষ গায়েবি মদদ পাওয়া যায়।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর কাছে এসে বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় আছে। আমি তাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখি, কিন্তু তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের উপকার করি, কিন্তু তারা আমার ক্ষতি করে। তারা আমার সাথে মূর্খের আচরণ করে, কিন্তু আমি তা সহ্য করি। তিনি বলেন, যদি তোমার বক্তব্য সঠিক হয়, তবে তুমি যেন তাদের মুখে উত্তপ্ত ছাই পুরে দিচ্ছ। তোমার কারণে তাদের দুর্ভোগ আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি এরূপ করতে থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী তাদের মোকাবিলায় তোমার সাথে থাকবেন। (আদাবুল মুফরাদ, আয়াত : ৫২)